ড্রোনের জিপিএস-নির্ভরতা কমাতে নতুন প্রযুক্তি

বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : সঠিক অবস্থান নির্ধারণ, আকাশে চলাচল ও নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করতে ড্রোন ব্যাপকভাবে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএসের ওপর নির্ভরশীল। জিপিএস হলো এক ধরনের স্যাটেলাইটভিত্তিক নেভিগেশন সিস্টেম, যা এর সঙ্গে যুক্ত কোনো বস্তুর সঠিক অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেয়। তবে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউনিসিএ) বিজ্ঞানীরা নতুন একটি প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন, যা জিপিএসের ওপর ড্রোনের নির্ভরশীলতা কমাতে পারবে বলে দাবি করা হয়েছে।

নতুন নেভিগেশন সিস্টেমটি মূলত নক্ষত্রের বাহ্যিক পর্যবেক্ষণ ও প্রচলিত অটোপাইলট প্রযুক্তির সংমিশ্রণ। তবে ইউনিসিএর গবেষক স্যামুয়েল টিগ বলেন, ‘এটি প্রচলিত নক্ষত্রভিত্তিক নেভিগেশন ব্যবস্থার চেয়ে অনেক ছোট ও সহজে ব্যবহার্য। প্রচলিত সিস্টেমগুলো ভারী ও ব্যয়বহুল হয়ে থাকে, যা সাধারণত মহাকাশযান ও বড় বিমানে ব্যবহার করা হয়।’

গবেষকদের দাবি, নতুন নেভিগেশন সিস্টেমে ড্রোনকে শনাক্ত করা কঠিন ও জ্যামিং আক্রমণ থেকে মুক্ত রাখতে সহায়ক হবে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গবেষণাটি ড্রোনস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। একে একটি শক্তিশালী, ব্যয়সাশ্রয়ী নেভিগেশন সিস্টেম তৈরির পথে অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ফিক্সড-উইংয়ের চালকবিহীন আকাশযানে পরীক্ষার সময় সিস্টেমটি চার কিলোমিটার পর্যন্ত সঠিকভাবে অবস্থান নির্ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে। কোনো কারণে জিপিএস কাজ না করলেও একে ড্রোন চালানোর জন্য বিকল্প নেভিগেশন সিস্টেম হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

সিস্টেমটি চলাচলের জন্য বাহ্যিক সিগন্যালের ওপর নির্ভর করে না। এ সক্ষমতার কারণে সামরিক ও সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইউনিসিএর বিজ্ঞানী জাভান চাহল বলেন, ‘এর মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ এবং জিপিএস কাজ করে না, এমন অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি নজরদারি মিশনে ব্যবহার করা যেতে পারে।’

অপরাজিতা ফুলের চায়ে রয়েছে জাদুকরী গুণ

সাম্প্রতিক সময়ে ড্রোনের জিপিএস জ্যামিংয়ের কারণে এর কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এ ঘটনা প্রায়ই চোখে পড়েছে। নতুন আবিষ্কৃত নেভিগেশন সিস্টেম ব্যবহার করে ড্রোনগুলো প্রতিপক্ষের নজর এড়ানোসহ যেকোনো বাধা থেকে রক্ষা পেতে পারে। ফলে আক্রমণাত্মক ও প্রতিরক্ষা সামরিক কৌশলে একে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

এ উদ্ভাবন আধুনিক যুদ্ধ ও সাধারণ ব্যবহারের জন্য ড্রোনের ভূমিকা আরো শক্তিশালী করবে বলে আশা করছেন গবেষকরা।