জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকার কাছেই পূর্বাচলে তৈরি করা হয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার জন্য পরিকাঠামো। এটা করতেই খরচ হয়েছে ১৩০০ কোটি টাকা। কিন্তু এর পরিকাঠামো নিয়েই উঠেছে নানা প্রশ্ন। অভিযোগ, যথাযথ পরিকল্পনা ছাড়াই করা হয়েছে এর পরিকাঠামো। সেখানে পর্যাপ্ত পার্কিং, গুদামঘর, বিদেশিদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়নি। তাতে নকশায় গলদ আছে তাও স্বীকার করেন আধিকারিকরা। জানানো হয়েছে, নতুন করে সেখানে কাজ করতে হবে, এই কাজের জন্য দরকার আরও ৪২৭কোটি টাকা। এজন্য বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ওই টাকা চেয়ে পাঠিয়েছে।
অর্থের অপচয়
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় যেসব সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা তা পূর্বাচলে নেই। সেখানে পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। পণ্য রাখার জন্য নির্মাণ করা হয়নি গুদামঘর বা ওয়্যারহাউস। এমনকী বিদেশি ক্রেতা এবং দেশি বিক্রেতাদের জন্য করা হয়নি বাসস্থানের ব্যবস্থা। করা হয়নি পর্যাপ্ত এক্সিবিশন হল। এটা যে এটা বড় ত্রুটি তা মেনে নিয়েছেন সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান।
তিনি বলেন, ‘এটা সরকারি অর্থের অপচয়। পৃথিবীর যেকোনেও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা এলাকায় মৌলিক সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়। পূর্বাচলে এই কাজ আগেই করা যেত। এখন নতুন করে সেখানে পরিকাঠামোর কাজ করতে হবে। এর অর্থ হচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তাদের সুদূরপ্রসারী চিন্তা করার ক্ষমতা নেই।’
পরিকল্পনার অভাব
জানা গিয়েছে, পূর্বাচলে ২০ একর জায়গার ওপর স্থায়ী বাণিজ্য মেলা স্থাপন করা হয়। কিন্তু কোনও সমীক্ষা এবং পরামর্শক ছাড়া চিনের একটি প্রতিষ্ঠান সেই পরিকাঠামো নির্মাণ করে। ইপিবির এক কর্মকর্তা বলেন ‘সঠিক পরিকল্পনা থাকলে জমির মধ্যে সব কিছু করা যেত। এখন সেখানে নতুন করে পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।’ সেখানে নতুন করে ছ একর জায়গায় ভূগর্ভস্থ গাড়ি পার্কিং করা হবে। সেখানে এক হাজার গাড়ি পার্ক করা সম্ভব হবে।
গোড়ায় গণ্ডগোল
গোড়ায় যে গলদ ছিল তাও মানেন কর্মকর্তারা। তারা জানান, দেশীয় পণ্য প্রদর্শনীর পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ২০১৫ সালে ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ’ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় সরকার। তখন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৭৯৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে চিনের অনুদান ছিল ৬২৫কোটি টাকা। বাকি ১৭১কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার দেয়।
২০১৮সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা হয়নি। এখন নতুন করে কাজের জন্য প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে ৪২৭ কোটি টাকা। প্রকল্প পরিচালক আতাউর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘এখন চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন এসেছে। নতুন করে কিছু স্থাপনা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই কারণেই ব্যয় বাড়ছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।