ঢাকায় ভূমিকম্প, বড় ভূকম্পনের লক্ষণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা
জুমবাংলা ডেস্ক : শুক্রবার ভোরে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে রাজধানী ঢাকা। রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ৩ মাত্রার এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার সিটি সেন্টার থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে দোহারে। তবে এতে প্রাথমিক কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৫টা ৫৭ মিনিটে ৪.৩ মাত্রার ভূমিকম্পটি সংঘটিত হয়। ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ঢাকার ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে ৩০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে দোহারে। এর স্থায়িত্ব ছিল আট সেকেন্ড। আবহাওয়া অধিদপ্তর এটিকে হালকা ভূমিকম্প বলছে।
অন্যান্যবার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ৩০-৪০ কিলোমিটার হলেও এবার ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার। ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, ভূমিকম্পটি ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে হওয়ায় এ নিয়ে কিছুটা চিন্তিত তারা। ঢাকার এত কাছাকাছি ভূমিকম্প হওয়ার ঘটনাকে একেবারে অস্বাভাবিক না বললেও এটিকে বড় ভূমিকম্পের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করছেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল ভূমিকম্পটির উৎপত্তি সম্পর্কে বলেন, ‘বাংলাদেশে ছোট ছোট অসংখ্য সক্রিয় ভূতাত্ত্বিক ফাটলরেখা আছে। আমরা ধারণা করছি ইছামতী নদীর সাথে সংযুক্ত যে ছোট ছোট নদীগুলো আছে সেগুলোর কোনো একটা নদী এ রকম ভূতাত্ত্বিক ফাটলরেখা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সে নদী থেকেই ভূমিকম্পটি হয়েছে।’
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং ভূমিকম্প বিষয়ক গবেষক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ‘আমরা আগে যে গবেষণা করেছি সেখানে বলেছি, সিলেটের সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মেঘনা নদী দিয়ে বঙ্গোপসাগরে যদি একটা কাল্পনিক রেখা আঁকা হয় তাহলে এর উত্তরে যে এলাকাটা সেখানে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার মতো শক্তি জমে আছে। দোহারে যে ভূমিকম্প হয়েছে সেটা এই অঞ্চলের মধ্যেই পড়ে। তার মানে আমরা যে এলাকাটিকে চিহ্নিত করেছি সেটা ভূতাত্ত্বিক দিক থেকে সক্রিয়।’
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও ভূমিকম্পবিশেষজ্ঞ মেহেদী হাসান আনসারীও দোহারের এই ভূমিকম্পকে দেখছেন বড় ভূমিকম্পের লক্ষণ হিসেবে। এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ঢাকার কাছাকাছি এ রকম ভূমিকম্প হওয়াটা অস্বাভাবিক বলা যাবে না। এর আগেও হয়েছে। বড় একটা ভূমিকম্প আসার কয়েক বছর আগে চার-পাঁচ বছর থেকে ছোট ছোট অনেক ভূমিকম্প হয়। ছোট ভূমিকম্পগুলো বড় ভূমিকম্প যেখানে হবে সেখানে না হয়ে অন্য জায়গা বা তার আশপাশে হয়। বড় ভূমিকম্প কবে আসবে আমরা জানি না। কিন্তু তার জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।’
Get the latest Zoom Bangla News first — Follow us on Google News, Twitter, Facebook, Telegram and subscribe to our YouTube channel.