জুমবাংলা ডেস্ক : চারদিকে গরমে হাঁসফাঁস। আগুনে রৌদে অতিষ্ঠ জনজীবন। এমন পরিস্থিতিতে বাহিরে বের হওয়ার জোঁ নেই। গ্রামে বের হওয়া গেলেও কংক্রিটের এই শহরে তা ভাবাই যায় না।
গ্রামের তুলনায় রাজধানীতে গাছপালা নেই বললেই চলে। যে কারণে গরমের অনুভূতি দিন দিন তীব্র হচ্ছে। এতে করে বাড়ছে ভ্যাপসা গরম, যা রাতেও থাকছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, গত কয়েক বছরে তাপমাত্রা বাড়লে তা বেশিরভাগ সময় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের ছিল। কিন্তু জলাভূমি ও জলাধার কমে যাওয়ায় ঢাকার কিছু এলাকা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উত্তপ্ত হয়ে পড়ছে।
ঢাকা শহরের তাপমাত্রার পার্থক্য নিয়ে গবেষণা করেছে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এপ্রিলের কয়েক দিনের তাপমাত্রা পার্থক্য মূল্যায়ন করেছে।
এপ্রিলকে ধরে করা হয়েছে কারণ এই মাসকে বলা হয় বছরের উষ্ণতম মাস। এ সময় স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বেশি থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল বোটানিক্যাল গার্ডেন ও জাতীয় চিড়িয়াখানায়। দ্বিতীয় কম তাপমাত্রা ছিল রমনা পার্ক, ধানমণ্ডি লেকপাড়, ক্যান্টনমেন্টসহ কিছু এলাকায়। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রার এলাকা ছিল তেজগাঁও, মতিঝিল, মিরপুর, যাত্রাবাড়ীসহ কিছু বাণিজ্যিক এলাকা। এগুলোতে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রার তারতম্য ছিল।
গত ৬৩ বছরে ঢাকা শহরের আবহাওয়া বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় এ সময়ের মধ্যে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপমাত্রা উঠেছিল চার দিন। প্রথম সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৯৬০ সালের ৩০ এপ্রিল। সেদিন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০১৪ সালে ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি বছরেও গত ২০ এপ্রিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অতি তীব্র তাপমাত্রা স্থায়িত্ব বেশিদিন থাকে না। তিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। কিন্তু ঢাকায় বেশিরভাগ সময় মৃদু থেকে মাঝারি আকারে তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। প্রতি বছরই এ তাপমাত্রা ছিল।
অনেক বিশেষজ্ঞ আবার বলছে, ঢাকা একটা হিট আইল্যান্ড হিসেবে কাজ করে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ঢাকা একটি জনবহুল শহর। এখানে বিপুল মানুষের জায়গা ও কর্মসংস্থান করতে গিয়ে প্রচুর অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। গাছপালা কমেছে। গরম থেকে বাঁচতে মানুষ এসি ব্যবহার করছে। দূষণের দিক থেকেও ঢাকা এগিয়ে রয়েছে। ফলে তাপমাত্রা মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের থাকলেও গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুসারে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।