নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল আটটায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে এ ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, চলবে বিকাল চারটা পর্যন্ত।
প্রধানমন্ত্রী, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এই নির্বাচনে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে দেশবাসীর দৃষ্টি এখন ঢাকায়। চলছে সম্ভাব্য জয়-পরাজয়ের বিশ্লেষণ। দুই সিটির মেয়র পদে কারা জিতবেন, নৌকা নাকি ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী, জানা যাবে আজ রাতেই।
এই নির্বাচনে দুই সিটিতে মেয়র পদে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪১টি দলের মধ্যে ৯টি দল প্রার্থী দিয়েছে। তবে প্রচারে এগিয়ে দেশের দু্ই প্রধান দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি প্রার্থীরা। এ দুই দলের প্রার্থীদের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলেই সব মহলের ধারণা। আবার ৯টি দলের বাইরে নিবন্ধিত অন্য দলগুলোর অনেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নৌকা ও ধানের শীষের প্রাথীদের সমর্থন করছেন।
মেয়র পদে ঢাকা উত্তর সিটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের মো. আতিকুল ইসলাম, বিএনপির তাবিথ আউয়াল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির আহম্মদ সাজেদুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেখ মো. ফজলে বারী মাসউদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. আনিসুর রহমান এবং প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের শাহীন খান।
আর ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস, বিএনপির ইশরাক হোসেন, জাতীয় পার্টির মো. সাইফুদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আব্দুর রহমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. বাহারানে সুলতান বাহার, গণফ্রন্টের আব্দুস সামাদ সুজন এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আকতারুজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লাহ।
এবারই প্রথম বড় পরিসরে ইভিএমে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২৮ হাজার ৮৭৮টি। এর মধ্যে উত্তরের জন্য ১৫ হাজার ৭০০টি এবং দক্ষিণের জন্য ১৩ হাজার ১৭৮টি। ইভিএম মেশিনে কারিগরি সহায়তা দেবেন সশস্ত্র বাহিনীর চার হাজার ৯৩৬ জন সদস্য। এর মধ্যে উত্তরে থাকবেন দুই হাজার ৬৩৬ জন, দক্ষিণে দুই হাজার ৩০০ জন সদস্য। প্রতিটি কেন্দ্রে দুজন করে সার্জেন্ট বা করপোরাল বা ল্যান্স করপোরাল অথবা সৈনিক দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া ৫২ জন জেসিও, ২৭ জন অফিসারও মাঠে থাকবেন।
নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো রাজধানী। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি। ভোটারদের নিরাপত্তা আর ভোটদান নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৬ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ১৮ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকছেন। গড়ে দুই সিটির দুই হাজার ৪৬৮ কেন্দ্রে পুলিশ এবং আনসার-ভিডিপির সদস্য থাকছেন ৪১ হাজার ৯৫৬ জন। আর পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গঠিত ১২৯টি মোবাইল ফোর্সে থাকবেন এক হাজার ২৯০ জন, ৪৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্সে থাকবেন ৪৩০ জন, রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্সে থাকছেন ৫২০ জন। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে টিম হিসাবে দুই সিটিতে র্যাবের টিম থাকছে ১৩০টি। গড়ে ১১ জন করে এতে মোট এক হাজার ৪৩০ জন র্যাব সদস্য আছেন। এ ছাড়া দুই সিটিতে র্যাবের ১০টি রিজার্ভ টিম থাকছে, এতে ১১০ জন সদস্য থাকছেন। আর রিজার্ভসহ দুই সিটিতে ৭৫ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করছে। গড়ে ৩০ জন করে মোট দুই হাজার ২৫০ জন বিজিবি সদস্য থাকছেন। সব মিলিয়ে দুই সিটিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় অর্ধলক্ষ সদস্য মাঠে আছেন। দুই সিটিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে আগামীকাল রবিবার পর্যন্ত নির্বাচনী অপরাধ দমন ও সংক্ষিপ্ত বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মাঠে আছেন ১৭২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ৬৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন বিভিন্ন দেশের পক্ষে ৭৪ জন পর্যবেক্ষক। এছাড়া, দুই সিটির ভোট পর্যবেক্ষণে ইসির অনুমতি পেয়েছেন দেশীয় বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংস্থার অন্তত এক হাজার ১৩ জন পর্যবেক্ষক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



