জুমবাংলা ডেস্ক : জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি আয়োজিত আলোচনা সভার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বানান ভুল, সমাসবদ্ধ শব্দের ভুল ব্যবহার, সন্ধি, সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ, অপব্যবহৃত রীতির প্রয়োগ দেখা গিয়েছে।
বুধবার সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি পাঠানো হয়।
তবে দু-একটি ছাড়া বাকি ভুল মানতে নারাজ অধ্যাপক জিনাত হুদা। তার মতে, ‘পৃথিবীতে ইউনিভার্সাল বলে কিছু নেই। বানান পরিবর্তনশীল।’
বিজ্ঞপ্তিতে ‘জতির পিতা, কালরত্রী, অধ্যাদেশেরে, প্রচারনা, পূর্নবাসন, শ্রেণী, দাবী, বৈশিক, কোনভাবেই, কোন ব্যক্তি, ব্যতয়, প্রযোগের সুপারিশ, নেপথ্য কুশীলবদের’ লেখা হয়েছে। আধুনিক বাংলা বানানের নিয়মে এগুলোর শুদ্ধরূপ হবে যথাক্রমে ‘জাতির পিতা, কালরাত্রি, অধ্যাদেশের, প্রচারণা, পুনর্বাসন, শ্রেণি, দাবি, বৈশ্বিক, কোনোভাবেই, কোনো ব্যক্তি, ব্যত্যয়, প্রয়োগের সুপারিশ, নেপথ্যের কুশীলবদের’। এ ছাড়া হিসেবে শব্দের পরিবর্তে দু’বার সাধুভাষায় ‘হিসাবে’ লেখা হয়েছে।
ট-বর্গীয় বর্ণে মূর্ধন্য-ণ ব্যবহারের পরিবর্তে দন্ত্য-ন ব্যবহার করা হয়েছে। শিক্ষকমণ্ডলী, হ ত্যা কা ণ্ড, ঘণ্টাব্যাপী শব্দের পরিবর্তে ‘শিক্ষক মন্ডলী, হ ত্যা কা (দুইবার), ঘন্টা ব্যাপী’ উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষকমণ্ডলী ও ঘণ্টাব্যাপী শব্দদ্বয় একত্রে বসবে, বিজ্ঞপ্তিতে আলাদা লেখা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে ‘বিচার প্রক্রিয়া’, ‘বিশ্ববিদ্যালয় সহ’, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’ ‘সরকার বিরোধী’ ও ‘বাংলাদেশ বিরোধী’ শব্দগুলো আলাদা লেখা হয়েছে। এ শব্দগুলো একত্রে বসবে যেমন বিচারপ্রক্রিয়া, বিশ্ববিদ্যালয়সহ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারবিরোধী, বাংলাদেশবিরোধী। সন্ধির নিয়মে যুদ্ধ ও অপরাধী দুই শব্দ মিলে ‘যুদ্ধাপরাধী’ হবে, এখানে ‘যুদ্ধপরাধী’ উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে ‘বিভিন্ন ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক ও সমাজতাত্বিক কারণসমূহ’ লেখা হয়েছে। বাক্যটি শুদ্ধভাবে ‘বিভিন্ন ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক ও সমাজতাত্ত্বিক কারণ’ অথবা ‘ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক ও সমাজতাত্ত্বিক কারণসমূহ’ হবে। আরেকটি বাক্যে ‘রাশেদ চৌধুরীসহ ও অন্যান্যরা’ লেখা হয়েছে। এটি ‘রাশেদ চৌধুরীসহ অন্যরা’ হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা কিছু শব্দ আগের বানানে লেখা হলেও বর্তমানে তার প্রচলন নেই। যেমন এতে ‘বাঙ্গালী, দাবী, শ্রেণী’ লেখা হয়েছে। এগুলো বর্তমানে বাঙালি, দাবি, শ্রেণি লেখা হয়।
এ বিষয়ে জিনাত হুদা বলেন, ‘এই প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে আমাদের মিলবে না। আমরা যেভাবে পড়াশোনা করেছি, সেভাবেই লিখি। বাংলায় আমি অত্যন্ত ভালো, হলিক্রস স্কুলে আমি পড়েছি। কয়েকটি শব্দে টাইপিং ভুল হয়েছে। অন্যগুলোর কোনোটা ভুল- এটা আমি স্বীকার করব না। দ্যাটস ইট, আমার বক্তব্য পরিষ্কার।’
তিনি বলেন, ‘বাংলা একাডেমির তার জায়গায় থাকবে। আজকের ভুল আগামী দশ বছর পরে তারা শুদ্ধ বলবে। বাংলা ডিকশনারি নিয়ে আমাকে পড়তে হবে? গ্রামার সর্বদা পরিবর্তনশীল।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও রাষ্ট্রভাষা বাংলা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে এরকম বানান ভুল, ভাষাগত ভুল সম্পূর্ণ অবাঞ্ছনীয়। আর যে কথাগুলো বলা হয়েছে, এতে দলীয় সংকীর্ণতার প্রকাশ আছে, জাতীয় স্বার্থে বলা দরকার। যখন এগুলো দলীয় স্বার্থে বলা যায়, তখন এটি ঠিক হয় না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।