স্পোর্টস ডেস্ক : বাণিজ্য যুদ্ধ, দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ান ইস্যুতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের টানাপোড়েন বহুদিনের। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাইওয়ান নিয়ে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের উত্তেজনা অনেক গুণ বেড়েছে। মূলত গত বছর মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার পালে নতুন হাওয়া লাগে।
এর মধ্যেই ১০ দিনের দক্ষিণ আমেরিকা সফরে যান তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন। সফরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের বর্তমান স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থির সঙ্গে বৈঠক করেছেন সাই। এর পরই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বেইজিং।
দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানের চারপাশে মহড়া শুরু করেছে চীন। বলা হচ্ছে, চীনা সেনারা তাইওয়ানকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে। যে কোনো সময় হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ চীনা শি জিনপিং এর আগে নিজেই তাইয়ানকে চীনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
এমনই প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের প্রভাবশালী সদস্য এবং ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান মাইকেল ম্যাককল বলেছেন, চীন যদি তাইওয়ানের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র বেইজিংয়ের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টেক্সাসের এ কংগ্রেসম্যান এমন কথা বলেন। এর আগে তিন দিনের সফরে তাইওয়ান পৌঁছে একটি দ্বিদলীয় মার্কিন প্রতিনিধিদল। যার নেতৃত্বে রয়েছেন মাইকেল ম্যাককল।
তাইওয়ানের রাজধানী তাইপে থেকে ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, কমিউনিস্ট রাষ্ট্র চীন যদি তাইওয়ানে হামলা চালায় তাহলে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই কংগ্রেস এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। জনগণ সমর্থন করলে কংগ্রেস সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
খবরে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের মাটিতে সেনা মোতায়েনের কথা বলা হলেও- যুদ্ধের প্রসঙ্গ যখন আসবে তখন মার্কিন জনগণের সমর্থনের বিষয়টি কীভাবে নিরূপণ করা হবে- সেটা তিনি পরিষ্কার করে বলেননি। তবে যুদ্ধ যে সব সময় সর্বশেষ ব্যবস্থা, সেটাও উল্লেখ করেন এই মার্কিন কংগ্রেসম্যান।
মাইকেল ম্যাককল আরও বলেন, চীন যদি তাইওয়ানে হামলা চালায় তাহলে তাইওয়ানে মার্কিন সেনা মোতায়নের ক্ষেত্রে কংগ্রেস অনুমোদন দিতে মোটেই দেরি করবে না।
তিনি বলেন, ইউক্রেনের চেয়ে খুব আলাদা অবস্থানে আছে তাইওয়ান। তার প্রথমটা হল, তারা যুদ্ধে পরীক্ষিত বা প্রস্তুত নয়। তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয়।
ম্যাককল বলেন, আপনি যখন ইউক্রেনের দিকে তাকান, দেখবেন ন্যাটো তাদের সমর্থন করেছে। প্রশান্ত মহাসাগরে তো ন্যাটো নেই। তাই জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়ার দিকে তাকালে, আমাদেরও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে হবে।
‘কারণ যদি আমরা সেটা না করি, তার অর্থ দাঁড়াবে- আমরা আগ্রাসন ও যুদ্ধকে আমন্ত্রণ জানাতে যাচ্ছি,’ সতর্ক করে বলেন ম্যাককল।
প্রসঙ্গত, তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড মনে করে চীন। বিপরীতে তাইওয়ান নিজেকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে চিন্তা করে। আলাদা দেশ হিসেবে তাইওয়ানের সঙ্গে মার্কিন সরকারের যোগাযোগকে ভালো চোখে দেখে না বেইজিং। কিন্তু তার পরও তাইপে-কে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।