Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home তাওবাহ কবুলের লক্ষণ: কিভাবে বুঝবেন?
    জাতীয় ডেস্ক
    ইসলাম ও জীবন

    তাওবাহ কবুলের লক্ষণ: কিভাবে বুঝবেন?

    জাতীয় ডেস্কMd EliasJuly 26, 202511 Mins Read
    Advertisement

    একটি বিষণ্ণ সন্ধ্যায় ঢাকার ওয়াইজঘাটে বসে রফিকুল সাহেবের চোখে জল। কয়েক দশকের কর্মজীবনে কত অনিয়ম, কত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন, যা শরিয়তসম্মত ছিল না। এখন বার্ধক্যের প্রান্তে এসে সেই সব স্মৃতি তাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। নামাজে দাঁড়ালেও মনে হয় না আল্লাহ তার দিকে তাকাচ্ছেন। “কী করলে আল্লাহ আমার তাওবাহ কবুল করবেন? বুঝবই বা কী করে?” – এই প্রশ্নটি তার রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। আপনার জীবনেও কি এমন কোনো আক্ষেপ, এমন কোনো গুনাহের বোঝা আছে, যার ভার আপনাকে পীড়া দিচ্ছে? তাহলে এই লেখা আপনার জন্যই।

    তাওবাহ কবুলের লক্ষণ নিয়ে বিভ্রান্তি বা অনিশ্চয়তা আমাদের অনেককেই পেয়ে বসে। আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার পরও প্রশ্ন জাগে: আল্লাহ কি আমার তাওবাহ গ্রহণ করেছেন? এই অনিশ্চয়তা দূর করাই আমাদের লক্ষ্য। কুরআন-হাদীসের অকাট্য দলিল এবং বুযুর্গানে দ্বীনের অভিজ্ঞতার আলোকে জেনে নিন, আপনার তাওবাহ কবুল হয়েছে কিনা তার ৭টি সুস্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য আলামত:

    তাওবাহ কবুলের লক্ষণ: কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সাতটি নিশ্চিত নিদর্শন

    ১. অন্তরের আমূল পরিবর্তন: পাপের প্রতি ঘৃণা ও ভালো কাজের আকর্ষণ

    • কীভাবে বুঝবেন?
      সত্যিকারের তাওবাহ কবুলের প্রথম ও প্রধান লক্ষণ হলো অন্তরের (কালবের) রূপান্তর। যে গুনাহটি করার আগে আপনার কাছে সহজ বা লোভনীয় মনে হতো, তাওবার পর সেটিকে আপনি গভীরভাবে ঘৃণা করতে শুরু করেন। শুধু তাই নয়, যে ইবাদত বা সৎকাজ আগে কষ্টকর বা বিরক্তিকর লাগত, এখন সেগুলো করতে আপনার মন ছটফট করে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট নিদর্শন।

      • কুরআনের সাক্ষ্য: “নিশ্চয় আল্লাহ তাওবা কবুল করেন তাদের যারা অজ্ঞতাবশত মন্দ কাজ করে, অতঃপর তাওবা করে। অতঃপর আল্লাহ তাদের তাওবা কবুল করে নেন। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।” (সুরা আন-নিসা, আয়াত: ১৭)। এখানে ‘অতঃপর তাওবা করে’ শব্দটির মধ্যে সেই অন্তরের দৃঢ় প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিতই নিহিত।
      • বাস্তব অভিজ্ঞতা: চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ী, জাকির হোসেন (নাম পরিবর্তিত), শেয়ার বাজারে ধোঁকাবাজির মাধ্যমে লাভ করতেন। তাওবার পর এখন শুধু হালাল ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন। তিনি বলেন, “পূর্বের কাজের কথা ভাবলেই এখন গা শিউরে ওঠে। হালাল উপার্জনের কষ্টও এখন মিষ্টি লাগে।”
      • বিশেষজ্ঞের মতামত: শাইখ আহমাদুল্লাহ (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক) বলেন, “তাওবাহ কবুলের সবচেয়ে বড় আলামত হলো অন্তরের টান। গুনাহ থেকে স্বতঃস্ফূর্ত বিমুখতা আর ইবাদতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ। এটি আল্লাহর রহমতের সরাসরি নিদর্শন।” (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর প্রকাশনায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে)।

    ২. পাপ কাজের পুনরাবৃত্তি থেকে স্থায়ী মুক্তি

    • কীভাবে বুঝবেন?
      মাঝে মাঝে পাপের দিকে মনের খারাপ প্রবণতা জাগতেই পারে। কিন্তু তাওবাহ কবুল হওয়ার স্পষ্ট লক্ষণ হলো সেই খারাপ চিন্তাকে কাজে পরিণত না করতে পারা। আপনার মধ্যে এমন শক্তি ও সংকল্প জন্মায় যে, পূর্বে যেসব পাপ নিয়মিত বা সহজেই করতেন, সেগুলো এখন সম্পূর্ণরূপে বা প্রায় সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করতে সক্ষম হন।

      • হাদীসের ভিত্তি: রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি তাওবা করল, সে ঐ ব্যক্তির মতো যার কোনো গুনাহই নেই।” (ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৪২৫০, হাদীসটি হাসান)। এই হাদীসটি তাওবার মাধ্যমে পাপমুক্তির দিকেই ইঙ্গিত করে। কবুল তাওবার ফলে পুনরায় সেই গুনাহে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
      • প্রয়োজনীয় সতর্কতা: এখানে এটি স্মরণ রাখা জরুরি যে শয়তান সর্বদা মানুষকে পুনরায় পাপে ফেলার জন্য চেষ্টা করে। তাই কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে দুর্বল হয়ে পড়লে হতাশ না হয়ে পুনরায় তাওবা করতে হবে। তবে কবুল তাওবার আলামত হলো সেই পতন ব্যতিক্রম হয়ে দাঁড়ায়, নিয়মিত ঘটনা নয়।

    ৩. ইবাদতে আনন্দ ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ

    • কীভাবে বুঝবেন?
      নামাজ, রোজা, কুরআন তিলাওয়াত, দান-খয়রাত ইত্যাদি ইবাদতগুলো করা আগে যদি আপনার জন্য কষ্টকর বা ভারী বোঝার মতো মনে হতো, আর তাওবার পর সেগুলো করতে যদি আপনি বিশেষ আনন্দ ও প্রশান্তি অনুভব করেন, তাহলে এটি তাওবাহ কবুলের একটি বড় আলামত। ইবাদত আর দায়িত্বভার মনে না হয়ে তা অন্তরের তৃপ্তির উৎস হয়ে ওঠে।

      • কুরআনের দিকনির্দেশনা: “যারা ঈমান আনে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে। জেনে রাখ, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়।” (সুরা আর-রাদ, আয়াত: ২৮)। তাওবার মাধ্যমে অন্তর পবিত্র হলে ইবাদতে এই শান্তি ও আনন্দের অনুভূতি স্বাভাবিক ফল।
      • অভিজ্ঞতার কথা: সিলেটের গৃহিণী ফারহানা আক্তার (নাম পরিবর্তিত) দীর্ঘদিন নিয়মিত নামাজ পড়তেন না। এক আত্মীয়ের মৃত্যু তাকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। আন্তরিক তাওবার পর তিনি বলেন, “এখন নামাজের সময় অপেক্ষায় থাকি। কুরআন পড়ার সময় চোখে পানি চলে আসে, যা আগে কখনও হয়নি। এই অনুভূতি অমূল্য।”

    ৪. অতীত পাপ স্মরণে গভীর অনুতাপ ও চোখের পানি

    • কীভাবে বুঝবেন?
      তাওবাহ কবুলের আরেকটি মর্মস্পর্শী লক্ষণ হলো অতীতের ভুলত্রুটিগুলো স্মরণ হলে গভীর লজ্জা, অনুতাপ এবং চোখে পানি চলে আসা। এই কান্না ভয়েরও হতে পারে (আল্লাহর শাস্তির ভয়ে), আবার কৃতজ্ঞতারও হতে পারে (তাকে ক্ষমা করার জন্য)।

      • হাদীসের আলোক: রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “দুই জিনিসের উপর আল্লাহ শপথ করেছেন: এক. আল্লাহ তাআলা সেই বান্দার আযাব দেবেন না, যে বান্দা কোনো পাপ করলে আল্লাহর ভয়ে কাঁদে।” (তিরমিজি, হাদীস নং ২৩১৯, হাদীসটি হাসান)।
      • বুযুর্গদের অভিমত: হযরত হাসান বসরী (রহ.) বলতেন, “অনুতাপের চিহ্ন তিনটি: গুনাহ থেকে দূরে থাকা, হারামকে ঘৃণা করা এবং নেক আমলে মনোনিবেশ করা।” অতীত পাপ স্মরণে ব্যথিত হওয়া এই অনুতাপেরই বহিঃপ্রকাশ।
      • মানবিক দিক: এই ব্যথা বা কান্না কখনও কখনও প্রকাশ্যেও আসতে পারে, আবার অন্তরেও গোপনে থাকতে পারে। এটি অহংকার বা লোক দেখানোর জন্য নয়; এটি হৃদয়ের গভীর থেকে উৎসারিত অনুভূতি।

    ৫. গুনাহের পথ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতা ও পরিবেশ বদল

    • কীভাবে বুঝবেন?
      সত্যিকার তাওবাহ কবুলের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো শুধু পাপ কাজই ছাড়া নয়, সেই পাপের দিকে নিয়ে যাওয়া পরিবেশ, সঙ্গী-সাথী এবং পরিস্থিতি থেকেও নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে নেওয়া। যেমন:

      • মদ্যপান ছেড়ে দিলে সেই সব বন্ধুদের সংসর্গও ত্যাগ করা যাদের সাথে বসলে মদ্যপান হতো।
      • অবৈধ সম্পর্ক ত্যাগ করে সেই ব্যক্তি বা স্থান থেকে সম্পূর্ণ দূরে সরে আসা।
      • ঘুষ বা দুর্নীতিতে জড়িত থাকলে সেই চাকরি বা ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করা (যদি সম্ভব হয়)।
      • কুরআনের সুস্পষ্ট নির্দেশ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে খাঁটি তাওবা করো।” (সুরা আত-তাহরীম, আয়াত: ৮)। এই ‘খাঁটি তাওবা’র (তাওবাতান নাসুহা) শর্তই হলো পাপ কাজ এবং তার আশেপাশের সবকিছু থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া।
      • বাস্তব উদাহরণ: খুলনার এক যুবক, সোহেল রানা (নাম পরিবর্তিত), মাদকাসক্ত ছিলেন এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তাওবার পর তিনি পুরোপুরি এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যান, নতুন করে হালাল রুজির সন্ধান শুরু করেন। “পুরোনো পরিবেশে ফিরে গেলে আবারও পাপে জড়িয়ে পড়ার ভয় ছিল,” তিনি বললেন।

    ৬. আল্লাহর রহমত ও ক্ষমার প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও আশাবাদ

    • কীভাবে বুঝবেন?
      তাওবার পর আপনার অন্তরে যদি আল্লাহর অসীম রহমত, ক্ষমাশীলতা এবং আপনার তাওবাহ কবুলের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ও আস্থা জন্মায়, তাহলে এটিও একটি ইতিবাচক আলামত। হতাশা, নিরাশা বা “আমার তাওবাহ কি কবুল হবে?” এই ধরনের অতিরিক্ত সংশয় দূরীভূত হয়।

      • কুরআনের অমোঘ বাণী: “বলুন, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের উপর জুলুম করেছ, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সুরা আয-যুমার, আয়াত: ৫৩)। এই আয়াতই মুমিনের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ আশার বাণী।
      • রাসূল (ﷺ) এর সুসংবাদ: “আল্লাহ তাআলা বান্দার তাওবার জন্য ঐ ব্যক্তির চেয়েও অধিক আনন্দিত হন যে মরুভূমিতে তার উট হারিয়ে ফেলেছিল এবং তা ফিরে পেয়েছে।” (বুখারী ও মুসলিম)। আল্লাহর এই আনন্দের কথা স্মরণ করলেই অন্তরে আশার সঞ্চার হয়।
      • সুফি দৃষ্টিভঙ্গি: পীর-মুর্শিদগণ শিক্ষা দেন যে আল্লাহর রহমতের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখাই ঈমানের দাবি। তাওবার পর এই আস্থা আরও সুদৃঢ় হওয়াই স্বাভাবিক।

    ৭. সৎকাজের ধারাবাহিকতা ও নেক আমলে আগ্রহ)

    • কীভাবে বুঝবেন?
      তাওবাহ কবুল হওয়ার একটি সুস্পষ্ট ফল হলো নেক আমল ও সৎকাজের প্রতি অটুট আগ্রহ ও ধারাবাহিকতা। শুধু পাপ ছাড়াই ক্ষান্ত না হয়ে, আপনি সক্রিয়ভাবে ভালো কাজ করতে উৎসাহিত হন। নামাজ, রোজা, জাকাত, দান-সদকা, পিতামাতার খেদমত, মানুষের উপকার করা ইত্যাদি কাজে আপনার অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পায় এবং তা টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হন।

      • কুরআনের ঘোষণা: “নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে এবং তাদের রবের সামনে বিনীত হয়েছে, তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।” (সুরা হুদ, আয়াত: ২৩)। তাওবার পর সৎকাজের এই ধারাবাহিকতাই ঈমানের সত্যতার প্রমাণ।
      • হাদীসের মাপকাঠি: রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, “আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় আমল হলো যা নিয়মিত করা হয়, যদিও তা অল্প হয়।” (বুখারী ও মুসলিম)। কবুল তাওবার পর ছোট ছোট নেক আমল নিয়মিত করার এই প্রবণতাই তৈরি হয়।
      • সামাজিক প্রভাব: রাজশাহীতে এক তরুণী, সুমাইয়া (নাম পরিবর্তিত), গীবত-পরনিন্দায় অভ্যস্ত ছিলেন। তাওবার পর তিনি নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত শুরু করেন এবং প্রতিবেশী অসহায় নারীদের সাহায্য করার একটি ছোট্ট সংগঠন গড়ে তোলেন। “আগে যা করতাম তাতে লজ্জা পেতাম, এখন যা করি তাতে শান্তি পাই,” তিনি বললেন।

    তাওবাহ কবুলের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা ও পরামর্শ

    তাওবাহ কবুলের লক্ষণ জানা সত্ত্বেও কিছু ভুল ধারণা বা ভয় আমাদের তাড়া করে। আসুন সেগুলো দূর করি:

    • অতিরিক্ত সংশয় ও হতাশা পরিহার করুন: শয়তান চায় আপনি আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হোন। কুরআনের সুস্পষ্ট আয়াত (যুমার: ৫৩) এবং রাসূল (ﷺ) এর বর্ণিত আল্লাহর আনন্দের হাদীস (বুখারী, মুসলিম) স্মরণ করুন। আন্তরিক তাওবার পরও যদি সংশয় আসে, তা থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করুন।
    • গুনাহের প্রকাশ ও লোকলজ্জার ভয়: কেউ কেউ ভাবেন, বড় গুনাহের তাওবা করতে হলে তা প্রকাশ করতে হবে বা মানুষের কাছে লজ্জিত হতে হবে। এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা। তাওবা হলো আল্লাহ ও বান্দার মধ্যকার ব্যাপার। গুনাহ গোপন রাখাই কর্তব্য, শুধু আল্লাহর কাছেই ক্ষমা চাইতে হবে। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “আমার উম্মতের সব ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করা হবে, তবে প্রকাশ্য গুনাহ নয়।” (বুখারী)।
    • বারবার পাপ করলে কী হবে?
      • এটি একটি সাধারণ প্রশ্ন। উত্তর হলো: যতবারই পাপ করবেন, ততবারই আন্তরিকভাবে তাওবা করুন। আল্লাহ ক্ষমাশীল। হাদীসে আছে: “বান্দা যখন পাপ করে, অতঃপর উত্তমরূপে তাওবা করে, আল্লাহ তা ক্ষমা করে দেন। তারপর সে পুনরায় পাপ করে, আবার তাওবা করে, আল্লাহ তা ক্ষমা করে দেন… যতক্ষণ না সে স্বেচ্ছায় পাপ করতে করতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।” (বুখারী)। তবে এখানে সতর্কতা হলো: বারবার পাপ করে বারবার তাওবা করাকে কৌশল হিসেবে না নেওয়া। প্রতিটি তাওবাই হোক আন্তরিক ও পুনরায় না ফিরে আসার দৃঢ় সংকল্পে পূর্ণ।
    • তাওবাহ কবুলের সময়সীমা নিয়ে বিভ্রান্তি:
      • জীবিত অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত তাওবা করার সুযোগ আছে। আল্লাহ বলেন, “তাওবা কবুল করা হবে না তাদের, যারা মন্দ কাজ করতে করতে এমন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে যে, তাদের একজনও বলে, ‘আমি এখন তাওবা করছি’।” (সুরা আন-নিসা, আয়াত: ১৮)। তবে অবশ্যই, মৃত্যুযন্ত্রণা শুরু হওয়ার পরের তাওবা গ্রহণীয় নয়। তাই বিলম্ব না করে আজই, এই মুহূর্তেই তাওবা করুন।
    • হালাল-হারামের সীমারেখা স্পষ্ট করুন: অনেক সময় আমরা অসতর্কতাবশত বা অজ্ঞতাবশত হারামে জড়িয়ে পড়ি। তাওবার পাশাপাশি জরুরি হলো ইসলামের বিধান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা। কোনটা হালাল, কোনটা হারাম – তা জানা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ বা নির্ভরযোগ্য আলেমদের কাছে জেনে নিন। হারাম উপার্জন থাকলে তা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় (যেমন: ফেরত দেওয়া, দান করা) জেনে নিন।

    জেনে রাখুন (FAQs)

    • প্রশ্ন: তাওবাহ কবুলের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, হতাশ লাগছে। কী করব?
      উত্তর: প্রথমেই হতাশ হবেন না। তাওবাহ কবুলের লক্ষণ অনুভব না হওয়া মানেই কবুল হয়নি, এমন নয়। লক্ষণগুলো হৃদয়ের অনুভূতি, যা সবার জন্য একরকম নাও হতে পারে। আল্লাহর রহমতের প্রতি আস্থা রাখুন। আন্তরিকতা নিয়ে তাওবা চালিয়ে যান। নিয়মিত ইবাদত ও দোয়া করুন, বিশেষ করে তাহাজ্জুদ নামাজে। আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও কবুলিয়তের জন্য কান্নাকাটি করুন। ধৈর্য ধরুন, ইনশাআল্লাহ অন্তরের পরিবর্তন আসবেই।
    • প্রশ্ন: অনেক বড় গুনাহ করেছি, আমার তাওবাহ কি আদৌ কবুল হবে?
      উত্তর: হ্যাঁ, অবশ্যই কবুল হওয়ার সম্ভাবনা আছে! আল্লাহর ক্ষমা অসীম। কুরআনে স্পষ্ট বলা হয়েছে: “বলুন, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের উপর জুলুম করেছ, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।” (সুরা যুমার: ৫৩)। বড় গুনাহের তাওবার শর্তও একই: আন্তরিক অনুতপ্ত হওয়া, গুনাহ ছেড়ে দেওয়া, ভবিষ্যতে না করার দৃঢ় সংকল্প। অতীতের গুনাহের কথা স্মরণ হলে লজ্জিত হোন, কাঁদুন, কিন্তু নিরাশ হবেন না।
    • প্রশ্ন: তাওবা করার পর আবারও সেই গুনাহ করে ফেলেছি। এখন কী করব?
      উত্তর: আবারও আন্তরিকভাবে তাওবা করুন। শয়তান আপনাকে হতাশ করতে চাইবে যে, “এতবার তাওবা করছ, আবার করছ? এটা কি ঠিক হচ্ছে?” এই কুমন্ত্রণা প্রতিহত করুন। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ বান্দার বারবার তাওবায় খুশি হন (বুখারী, মুসলিম)। গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রতিবারই গভীর অনুতপ্ত হওয়া এবং পুনরায় না করার দৃঢ় ইচ্ছা পোষণ করা। সেই গুনাহের পথে নিয়ে যায় এমন পরিবেশ ও সঙ্গ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা অব্যাহত রাখুন।
    • প্রশ্ন: তাওবাহ কবুলের জন্য বিশেষ কোনো দোয়া বা আমল আছে কি?
      উত্তর: তাওবা নিজেই একটি শ্রেষ্ঠ আমল। তবে কিছু দোয়া ও আমল তাওবার কবুলিয়তের জন্য সহায়ক:

      • “আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাজী লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুমু ওয়া আতুবু ইলাইহি” – অর্থ: “আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি সেই আল্লাহর, যিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক; এবং আমি তাঁরই নিকট তাওবা করছি।” (তিরমিজি)।
      • নিয়মিত ইস্তেগফার পড়া (সকাল-সন্ধ্যা ১০০ বার বা তার বেশি)।
      • বেশি বেশি নফল নামাজ ও রোজা রাখা।
      • দান-সদকা করা। হাদীসে দান-সদকা গুনাহ মোচনকারী বলা হয়েছে।
      • বিশেষভাবে লাইলাতুল কদর, জুমার দিন, আরাফার দিন ইত্যাদি ফজিলতপূর্ণ সময়ে তাওবা ও ইস্তেগফার করা।
    • প্রশ্ন: হারাম উপার্জন বা অন্যের হক নষ্ট করলে তাওবায় কী করণীয়?
      উত্তর: এ ধরনের গুনাহর ক্ষেত্রে শুধু আল্লাহর কাছে তাওবা করলেই হবে না, মানুষের হক আদায় করতে হবে:

      • অর্থ বা সম্পদ: যদি কারো অর্থ বা সম্পদ জবরদখল বা ঠকিয়ে নিয়ে থাকেন, তা ফেরত দিতে হবে। যদি সরাসরি ফেরত দেওয়া সম্ভব না হয় বা পাওনাদার জানা না থাকে, তবে তার পক্ষ থেকে সদকা করে দিতে হবে।
      • অপবাদ, গীবত বা সম্মানহানি: যদি কারো সম্মানহানি করেছেন, অপবাদ দিয়েছেন, গীবত করেছেন, তাহলে তার কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে।
      • জানা না থাকলে: যদি কারো হক নষ্ট করেছেন কিন্তু তিনি কে বা কোথায় আছেন তা জানা না থাকে, তবে তার জন্য বেশি বেশি দোয়া করুন এবং সাধারণভাবে সদকা করুন।
      • পরিষ্কার হওয়া: হারাম মিশ্রিত সম্পদ পরিষ্কার না করলে তাওবা পূর্ণ হবে না। এ বিষয়ে একজন আলেমের পরামর্শ নিন।

    আপনার তাওবাহ কবুলের লক্ষণ অনুসন্ধান করছেন? এই অনুভূতি নিজেই ইতিবাচক। এটি আপনার অন্তরে ঈমানের আলো জ্বালিয়ে রেখেছে। উপরে বর্ণিত তাওবাহ কবুলের লক্ষণগুলো – অন্তরের রূপান্তর, পাপ থেকে স্থায়ী মুক্তি, ইবাদতে স্বাচ্ছন্দ্য, অতীত স্মৃতিতে অনুতপ্ত হওয়া, পাপের পরিবেশ ত্যাগ, আল্লাহর রহমতে অটুট আস্থা এবং নেক আমলের ধারাবাহিকতা – এগুলোর কোনোটিই যদি আপনার জীবনে প্রকাশ পায়, তাহলে দৃঢ় বিশ্বাস রাখুন, আল্লাহ তাআলা আপনার ক্ষমা প্রার্থনা কবুল করেছেন। তবে লক্ষণ অনুভব না হলেও হতাশ হবেন না। আল্লাহর দয়া ও ক্ষমার প্রতি অবিচল আস্থাই হলো মুমিনের মূলধন। আপনার তাওবা কবুল হয়েছে এই বিশ্বাস নিয়েই বিনীতভাবে আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যে আত্মনিয়োগ করুন। অতীতের গুনাহের কথা স্মরণ হলে কেবল লজ্জিত হোন, ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক থাকুন। এখনই সময় নতুন করে শুরু করার। আন্তরিকতার সাথে বলুন: ‘আস্তাগফিরুল্লাহাল আযীম ওয়া আতুবু ইলাইহি’ – আমি মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরছি। এই মুহূর্তেই আল্লাহর দরবারে মাথা নত করুন।


    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    ‘ও ইসলাম কবুলের কিভাবে জীবন তাওবাহ তাওবাহ কবুলের লক্ষণ: কিভাবে বুঝবেন বুঝবেন লক্ষণ
    Related Posts
    মুহাম্মদ (সা.)

    মুহাম্মদ (সা.)-এর নৈতিক আদর্শ ও সমাজসংস্কারের গুরুত্ব

    September 12, 2025
    নামাজের সময়সূচি ২০২৫

    নামাজের সময়সূচি: ১২সেপ্টেম্বর, ২০২৫

    September 11, 2025
    নামাজের সময়সূচি ২০২৫

    নামাজের সময়সূচি: ১১সেপ্টেম্বর, ২০২৫

    September 10, 2025
    সর্বশেষ খবর
    টাক

    টাক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় ৪টি খাবার খেলে

    দাম্পত্য জীবন সুখী

    দাম্পত্য জীবন সুখী হওয়ার ১০ উপায়

    Nirbachon

    জাকসুর ফল ঘোষণা নিয়ে যে বার্তা দিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার

    ওয়েব সিরিজ

    রোমান্সের ছোঁয়ায় ভরপুর এই ওয়েব সিরিজ, দেখার আগে জেনে নিন

    আইফোন এয়ার মাদারবোর্ড ডিজাইন

    iPhone Air-এর লজিক বোর্ড ডিজাইনে নতুনত্ব, ক্যামেরা বাম্পেই শুধু A19 Pro চিপ

    পাসপোর্ট

    বিশ্বের যেসব দেশে ঘুরতে ভিসার কোন প্রয়োজন নেই

    Android TV অ্যাপ

    Android Smart TV-র জন্য ১০ অ্যাপ, যা ২০২৫ সালে থাকবে

    Income

    ৩০ কোটি বাজেটের সিনেমার আয় ২০৩ কোটি

    আইফোন এয়ার

    অ্যাপল কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে আইফোন বাঁকানোর চ্যালেঞ্জ

    Google Gemini Created by you

    Google-এর Gemini-তে তৈরি মিডিয়া খুঁজতে নতুন ফিচার

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.