জুমবাংলা ডেস্ক : নির্মাণাধীন আলোচিত রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা নিয়ে মোংলায় পৌঁছেছে তিনটি কার্গোবাহী জাহাজ। আজ সোমবার ভোরে কয়লা নিয়ে বন্দরের পশুর নদীতে নোঙ্গর করেছে শ্যামল বাংলা, এনামুল হোসেন ও আল বেরুনি সৈকত-২ নামে তিনটি জাহাজ।
আল বেরুনি সৈকত-২ জাহাজের মাস্টার মোঃ কবির ফরাজি এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত ৩ জুলাই কোলকাতা বন্দর থেকে এম ভি শ্যামল বাংলা কার্গো জাহাজটিতে এক হাজার ৮৫৫ মেট্রিক টন কয়লা লোড করে এই কার্যক্রমের উদ্ধোধন করেন কোলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান বিনিত কুমার। এরপর ৪ জুলাই এম ভি এনামুল হোসেন এবং ৫ জুলাই এম ভি আল বেরুনি সৈকত-২ জাহাজে কয়লা বোঝাই করে ৮ জুলাই কোলকাতা বন্দর ছেড় আসে জাহাজ তিনটি।
এরপর ভারতের বজবজ-ঘোড়ামারা-নামখানা-বাগান বাড়ি-মন্দিরের নৌপথ হয়ে হেমনগরে পাঁচদিন অবস্থান করে কয়লাবাহী কার্গো জাহাজগুলো ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা আংটিহারায় কাস্টমসের পরীক্ষণ শেষে আজ (১৯ জুলাই) মোংলা বন্দরের পশুর নদীতে এসে পৌঁছায়।
তিন থেকে চারদিনের মধ্যে মোংলা কাস্টমস হাউজে পরীক্ষণ ও শুল্ক পরিশোধ শেষে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভারত থেকে আমদানি করা কয়লা খালাস করা হবে বলে জানান সেখানকার উপ পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, নির্মাণাধীন কয়লা ভিত্তিক এই বিদুৎ কেন্দ্রের জন্য কয়লা ঠিকই এসেছে, তবে তা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নয়, কোল ইয়ার্ড তৈরির জন্য। প্রাথমিকভাবে তিন হাজার ৭৫২ মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে তিনটি কার্গো জাহাজ এরইমধ্যে মোংলায় এসেছে বলেও জানান উপ পরিচালক রেজাউল করিম।
এদিকে, ‘কয়লা- একটি ময়লা’ উল্লেখ করে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য মোঃ নুর আলম একুশে টেলিভিশনকে বলেন, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবন বিনাশী একটি প্রকল্প। তাই এটি বাতিলের দাবি জানান তিনি।
নুর আলম শেখ দাবি করেন, এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনার যে নীতিমালা রয়েছে, তাতে ইন্দোনেশিয়া এবং অষ্ট্রেলিয়া থেকে উন্নতমানের কয়লা আনার কথা। কিন্তু কোল ইয়ার্ডের জন্য বলা হলেও আমদানি হওয়া নিম্নমানের কয়লা দিয়ে বিদুৎ উৎপাদন হবে।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরে এই কেন্দ্র থেকে বিদুৎ উৎপাদন করা হবে ঘোষণা দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়া এবং অষ্ট্রেলিয়ার সাথে কয়লা আনার চুক্তিই হয়নি।
জানা গেছে, বিদুৎ উৎপাদনে জন্য বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করে যেখানে রাখা হবে, সেই জায়গাটিকে কোল ইয়ার্ড বলা হচ্ছে। সেই কোল ইয়ার্ড তৈরির জন্য ভারত থেকে এই কয়লা আমদানি করা হয়েছে। এই কয়লাকে মূলত কার্পেট কয়লা বলে। কার্পেটিং না করলে বিদুতের জন্য যে কয়লা কেনা হবে হবে তা নষ্ট হওয়ার শঙ্কা থাকে।
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ভারতীয় কোম্পানি ভারত হেভি ইলেকট্রিক কোম্পানি (ভেল)-এর সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, তাতে এভাবেই কোল ইয়ার্ড তৈরির কথা বলা হয়েছে। মোট চারটি ইয়ার্ডের মেঝের জন্য প্রায় ৪৫ হাজার মেট্রিক টনের মতো কয়লার প্রয়োজন হবে।
গত ২০১৭ সালের এপ্রিলে শুরু হয় কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ। এ কেন্দ্র থেকে চলতি বছরের ডিসেম্বরে বিদুৎ উৎপাদনের কথা রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।