জাতীয় অ্যাথলেটিক্স উপলক্ষ্যে ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়াম অ্যাথলেটদের পদচারণায় মুখর। বিকেলের দিকে সেই উচ্ছ্বাস বাড়তি মাত্রা পেল। ৪০০ মিটার পুরুষ হার্ডেলস ইভেন্টে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নাজমুল হোসেন তিন দশক আগের একটি রেকর্ড ভেঙেছেন।
জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের এই ইভেন্টে ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরে নৌবাহিনীর আব্দুর রহিম নাঈম টাইমিং করেছিলেন ৫১.৮৭ সেকেন্ড। গত তিন দশকে কেউই এই টাইমিং অতিক্রম করতে পারেনি। মঙ্গলবার নাজমুল ৫০.৮৪ সেকেন্ড টাইমিংয়ে নতুন কীর্তি গড়েছেন। এই ইভেন্টে আগেও পদক রয়েছে নাজমুলের, তবে দীর্ঘদিনের রেকর্ড ভাঙায় বেশ পরিতৃপ্ত এই অ্যাথলেট, ‘এই ইভেন্টে আগে আমি রৌপ্য-স্বর্ণ জয় করেছি। এরপর লক্ষ্য ছিল রেকর্ড করা। সেই লক্ষ্যেই আমি প্রস্তুতি নিয়েছি। রেকর্ড হওয়ায় এখন খুশি।’
বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন রেকর্ডধারীদের ২০ হাজার টাকা আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেছে। সেই পুরস্কারের অর্থ এখনও হাতে পাননি। তবে সামান্য সেই অর্থ অ্যাথলেটিক্সেরই পেছনে খরচ করতে চান নাজমুল, ‘টাকা পেলে একটি শু (জুতা) কিনব।’ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্প্রিন্টার অথবা জাম্পার পাঠায় ফেডারেশন। হার্ডলাররা অধিকাংশ সময় অবহেলিত থাকেন। এ নিয়ে নাজমুলের মন্তব্য, ‘আশা করি ফেডারেশন আমাদের মূল্যায়ন করবে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুযোগ পেলে দেশের হয়ে পদক আনার লক্ষ্য রয়েছে।’
জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের দ্বিতীয় দিনে তিনটি রেকর্ড হয়েছে। দু’টি রেকর্ডই ৪০০ মিটার হার্ডেলসে, আরেকটি ১০০*৪ নারী রিলেতে। ৪০০ মিটার হার্ডেলস (মহিলা) ইভেন্টে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মোছা. বর্ষা খাতুন সময় নিয়েছেন ১:০৪.৬১ সে.(ই)। এই ইভেন্টে ২০২২ সালে রেকর্ড গড়েছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লিবিয়া খাতুনের, সময় নিয়েছিলেন ১:০৪.৭০ সে.(ই)। ৪*১০০মিটার (মহিলা) রিলে ইভেন্টে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর শিরিন আক্তার, সনিয়া আক্তার, সুমাইয়া দেওয়ান ও কবিতা রায়। তারা সময় নিয়েছেন ৪৬.৪৩ সেকেন্ড। আগে এই ইভেন্টে রেকর্ড ছিল ২০২২ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুমাইয়া দেওয়ান, শরিফা খাতুন, সনিয়া আক্তার, বর্ষা খাতুনের নেওয়া ৪৮.১০ সেকেন্ড।
অ্যাথলেটিক্সের আকর্ষণীয় ইভেন্ট ৪০০ মিটার স্প্রিন্ট সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই ইভেন্টে প্রথম হয়েছেন তারকা অ্যাথলেট জহির রায়হান। অবশ্য সেরা হয়েও ক্ষোভ ঝরল জহিরের কণ্ঠে, ‘গত কয়েক বছর শুধু একজন খেলোয়াড়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অন্য খেলোয়াড়দের প্রাধান্য দিলে আরও বেশি অ্যাথলেট আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হতে পারত।’ হতাশা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘২০১৭ সালে কেনিয়ার নাইরোবিতে বিশ্ব যুব অ্যাথলেটিক্সে আমি সেমিফাইনাল খেলেছিলাম। এরপর থেকে আমাকে উন্নত প্রশিক্ষণের কথা বলে আসলেও বাস্তবায়ন হয়নি। আশা করি ফেডারেশনের বর্তমান কমিটি এই বিষয়গুলো বিবেচনা করবে।’
জাতীয় এ্যাথলেটিক্সের দ্বিতীয় দিনে ৩টি–সহ ২দিনে ৪টি নতুন জাতীয় রেকর্ড হয়েছে। দুইদিনে শেষ হয়েছে ২৮টি ইভেন্ট। সবমিলিয়ে পদক তালিকায় এগিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ১৫টি স্বর্ণ, ১৪টি রৌপ্য ও ১৪টি ব্রোঞ্জ নিয়ে মোট ৪৩টি পদক পেয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ ছাড়া ১৩ টি স্বর্ণ, ১২ টি রৌপ্য এবং ৮টি ব্রোঞ্জ ৩৩টি পদক বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এবং ২টি রৌপ্য, ১টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৪টি পদক পেয়েছে বিকেএসপি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।