জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীর বাজারগুলোতে ইলিশের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে কিছুটা। তবে তা এখনো সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আসেনি। ফলে সুস্বাদু এই মাছের দাম যতটুকু কমেছে, তাতে সন্তুষ্ট নন ক্রেতারা।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে আট থেকে দশটি দোকানে ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। জাটকা থেকে শুরু করে দেড়-দুই কেজির ইলিশ মাছও রয়েছে বিক্রেতাদের কাছে। গত সপ্তাহের তুলনায় দামও কমেছে কিছুটা। তারপরও ইলিশ কিনতে পারছেন না সাধারণ ক্রেতারা।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে মানভেদে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি ১৮০০ থেকে ২২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ২০০-৩০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা কেজিতে, এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি, ৯০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৩৫০ টাকায়, ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়, আধাকেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকায়। আর ২০০-৩০০ গ্রামের জাটকা ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়।
বিক্রেতারা জানান, বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে ইলিশের দামও কমেছে। বর্তমানে যা দাম আছে, তিন দিন আগে প্রতিটি আকারের ইলিশের দাম ২০০-৩০০ টাকা বেশি ছিল।
কারওয়ান বাজারের আল্লাহর দান নামের এক মাছের দোকানের বিক্রেতা মো. শুকুর আলী বলেন, ২-৩ দিন ধরে ইলিশের দাম একই আছে। এর আগে ইলিশের দাম বেশি ছিল। সরবরাহ বাড়ায় এই দাম কমেছে। যদি বাজারে আরও ইলিশ আসে তাহলে দাম আরও কমবে।
মান্নান নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, কেজিতে ইলিশের দাম ৩০০ টাকা বেশি ছিল। এখন দাম কম। মাছের বাজারে যখন-তখন দাম বাড়ে, কমে। ইলিশের সরবরাহ বাড়লে দাম কমছে, সরবরাহ কমলে দাম বাড়বে। এটা আগে থেকে বলা যায় না।
বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশে। পরিসংখ্যান মতে, বিশ্বের মোট ইলিশ উৎপাদনের ৮৬ শতাংশই বাংলাদেশে হয়। তারপরও বাংলাদেশে ইলিশের দাম থাকে আকাশছোঁয়া। দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা অতিরিক্ত দামের কারণে মাছের রাজা ইলিশের স্বাদ উপভোগ করতে পারে না। প্রতি বছরই প্রতিবেশী দেশ ভারতে বিপুল পরিমাণ ইলিশ রপ্তানি করা হয়। সে দেশের নদ-নদীতেও পাওয়া যায় ইলিশ মাছ। যার কারণে বাংলাদেশের তুলনায় ভারতে এই মাছের দাম সব সময় কম থাকে।
তবে সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে তারপর ইলিশ মাছ বিদেশে রপ্তানি করার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি স্বল্প আয়ের মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাওয়া ইলিশ মাছের দাম নাগালের মধ্যে নিয়ে আসারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের এমন আশ্বাসের পর দেশের মানুষের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়। নিম্ন ও মধ্যবিত্তরাও ইলিশের স্বাদ চেখে দেখার স্বপ্ন দেখতে থাকে। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন এখনো পূরণ হয়নি। ইলিশের দাম কিছুটা কমলেও তা নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের হাতের নাগালে এখনো আসেনি।
মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে ফ্ল্যাটমেটদের নিয়ে বাজার করতে আসেন বেসরকারি চাকরিজীবী জিহাদ। মাছের বাজারে এই দোকান থেকে ওই দোকান ঘুরে ইলিশের দাম জিজ্ঞেস করছেন। হাত দিয়ে মাছ টিপে দেখছেন ভালো কিনা। কিন্তু বারবারই না কিনে অন্য দোকানে চলে যাচ্ছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইলিশ কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ইলিশের দাম অনেক বেশি। এই দাম দিয়ে ইলিশ কিনলে মাসের অন্য সময় আর মাছ খাওয়া লাগবে না। সবাই বলছে, ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ, এবার দাম কমবে। কিন্তু বাজারে তো তা দেখছি না। বরং দাম আগের মতোই আছে।
বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সরকার, সঙ্গে থাকছে দৈনিক ভাতা
জিহাদ আরও বলেন, বাংলাদেশের ইলিশের দাম ৫০০-৭০০ টাকা কেজি হলে সাধারণ মানুষ ইলিশের স্বাদ নিতে পারবে।
মো. আবির নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। অথচ আমরা এই মাছ খেতেই পারি না। এটা কেমন কথা! অথচ প্রতি বছর ইলিশের মৌসুমে ফেসবুকে দেখা যায়, ভারতের মানুষ আমাদের থেকে অনেক কম দামে ইলিশ কিনতে পারছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।