জুমবাংলা ডেস্ক : এবারের দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় টাঙ্গাইলের প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকা রাস্তা, সেতু, তাঁতশিল্প ও কৃষি খাতে টাকার অঙ্কে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা সরকারি দফতরগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ক্ষতির মধ্যে ৬৪৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় সাত কোটি টাকা, এক হাজার ৩৫৮ কিলোমিটার রাস্তা এবং ৭৩টি সেতু ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রায় পৌনে তিনশ কোটি টাকা, পানিতে নিমজ্জিত হয়ে তাঁতশিল্পে পৌনে তিনশ কোটি টাকা আর ১৩ হাজার ৮৯২ হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়ে ১৪১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এবারের তৃতীয় দফার বন্যায় টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার মধ্যে ১১টি বন্যা কবলিত হয়। উপজেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, মির্জাপুর, নাগরপুর, বাসাইল, ধনবাড়ী, ঘাটাইল, গোপালপুর, সখীপুর ও দেলদুয়ার। যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো বেশি ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। বর্তমানে নদী তীরবর্তী এলাকায় বন্যার পানি কমলেও অন্য এলাকাগুলোতে পানি আটকে ভোগান্তি বেড়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, জেলার ১ হাজার ৬২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬৪৩টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক বিদ্যালয় পানিতে ডুবে গেছে। নিমজ্জিত থাকায় মাটি নরম হয়ে অনেক বিদ্যালয় দেবে গেছে। কোনোটির দেয়াল দেবে গেছে আবার কোনোটির মেঝে ফেঁটে গেছে। বিদ্যালয়ের মাঠগুলোতে পানির স্রোতে ৫-৭ ফুট গভীর গর্তেরও সৃষ্টি হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে নির্মিত ৬৫টি বিদ্যালয়েরও বেশ ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব বিদ্যালয় মেরামত ও নির্মাণ করতে ন্যূনতম সাড়ে ছয় কোটি টাকা খরচ হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ১০১টির জন্য ৩৮ লাখ, ঘাটাইলের ৪১টি বিদ্যালয়ের মেরামতের জন্য প্রায় ২৭ লাখ টাকা, গোপালপুরে ৬৩টির জন্য ৩২ লাখ, বাসাইলে ৫১টির জন্য ৯ লাখ, দেলদুয়ার উপজেলার ৭২টির জন্য ৪৪ লাখ, মির্জাপুরের ৬৮টির জন্য ৪১ লাখ, কালিহাতীর ১০২টির জন্য ১ কোটি ৪০ লাখ, নাগরপুরে ৮৪টির জন্য ৫১ লাখ, ভূঞাপুরের ৪৯টির জন্য ১ কোটি তিন লাখ এবং সখীপুরে সাতটি বিদ্যালয় মেরামতের জন্য ৩৩ লাখ টাকার চাহিদাপত্র প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নাগরপুর উপজেলার গোবিন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাইকশা মাইঝাল পশ্চিমপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাইকশা মাইঝাল প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এর মধ্যে একটি বিদ্যালয় নতুনভাবে নির্মাণের জন্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকার চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, এবার বন্যার পানি বেশিদিন অবস্থান করায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ও বিলীন হওয়া বিদ্যালয়গুলো মেরামত ও নির্মাণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
টাঙ্গাইল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, এবারের বন্যায় কালিহাতী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ উপজেলার ১৯টি রাস্তার ১১৫ কিলোমিটার ভেঙে ক্ষতির পরিমাণ ৩৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা দাঁড়িয়েছে। পাঁচটি সেতু ও কালভার্টের ১২৫ মিটার ভেঙে প্রায় ৯ কোটি ৯১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। দেলদুয়ার উপজেলায় ৭১টি রাস্তার ২৪১ কিলোমিটার ভেঙে প্রায় ৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সেতু ও কালভার্টের ৩০২ মিটার অংশ ভেঙে ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার। সূত্র : জাগো নিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।