লাইফস্টাইল ডেস্ক: শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য মৌসুমি ফলগুলো এক দারুণ উৎস। এসব ফলের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেলস ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা মৌসুমি রোগব্যাধি থেকে মুক্তি দেয়। এখন চলছে আমের মৌসুম। সাধ্যমতো আম খেতে হবে সবাইকে। তবে ডায়াবেটিসের রোগীদের আম খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা বিধিনিষেধ আছে।
আমেরিকান ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন খাদ্য পরিকল্পনায় ফলকে শর্করা হিসেবে গণনা করে। আর ডায়াবেটিসের রোগীদের দৈনিক ১৩০ গ্রামের বেশি শর্করা খাওয়া উচিত নয়। এর মধ্যে নাশতা হিসেবে ১৫ থেকে ৩০ গ্রাম শর্করা রাখা উচিত। এ জন্য রক্তে চিনির পরিমাণ পরীক্ষা করে পরিমাণমতো ফল খেতে হবে।
প্রতিটি খাবারে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোড থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। এ জন্য যেসব খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা সূচক ৫৫ আর গ্লাইসেমিক লোড ১০-এর নিচে, সেই খাবারগুলো ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য নিরাপদ। আমের গ্লাইসেমিক সূচক ৫১ থেকে ৫৬, যা মাঝারি গ্লাইসেমিক সূচক এবং এর গ্লাইসেমিক লোডও কম। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে পরিমিত পরিমাণে আম খাওয়া যাবে।
আম খাওয়ার নিয়ম
ডায়াবেটিসের রোগীরা সঠিক পরিমাণে, সঠিক সময়ে, সঠিক উপায়ে আম খেলে গ্লুকোজ বাড়ার প্রভাব কম হবে।
সকালের নাশতায় আম রাখুন। আবার মধ্যকালীন নাশতা হিসেবেও আম রাখতে পারেন। যখন আম খাবেন, তখন অন্য শর্করাযুক্ত খাবার বাদ দেবেন।অবশ্যই পরিমাণমতো আম খাবেন।
বেশি পাকা আমের তুলনায় একটু কম পাকা বা কাঁচা আমকে প্রাধান্য দিন।
মূল খাবারের সঙ্গে আম খাবেন না। এতে রক্তে চিনির স্তর বাড়ার আশঙ্কা থাকে।
সন্ধ্যায় আম খেলে রাতে ভাত বা রুটি কমিয়ে দিন।
যেদিন আম খাবেন, সেদিন ৩০ মিনিট বেশি হাঁটুন।
আমের পরিমাণ আধা কাপের মধ্যে রাখুন। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কা থাকে।
আম ছোট ছোট টুকরো করে খান।
প্রতিদিন আম না খেয়ে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন খেতে পারেন।
আমের জুস না খেয়ে আস্ত আম খান। এতে আমের আঁশ পাবেন। এটি ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য উপকারী।
আম খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর রক্তের গ্লুকোজ মাপুন। প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।
যাঁদের রক্তে গ্লুকোজ একেবারে নিয়ন্ত্রণে নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে আম এড়িয়ে চলাই ভালো।
তবে মনে রাখা উচিত, প্রত্যেকের শরীর নির্দিষ্ট খাবার ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া করতে পারে। আমের স্বাস্থ্যকর গুণাগুণ রয়েছে। তবে কী পরিমাণ আম কোন সময় খেলে আপনার শরীরের জন্য ভালো, সেটি মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করুন।
আমে যা আছে
আমে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স (বি১২ বাদে), ভিটামিন সি এবং পলিফেনল। এ ছাড়া আমে প্রদাহরোধী এবং ভাইরাস প্রতিরোধী গুণ আছে। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ৩০ গ্রাম ওজনের আমে থাকে ২৫ ক্যালরি এবং শর্করা থাকে ৫ গ্রাম। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে আম খেলে ওজন বেশি হতে পারে। যাঁদের রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে আছে, তাঁরাও দুই থেকে তিন টুকরোর বেশি আম খাবেন না। আর যাঁদের রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে নেই, তাঁদের আম এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
লিনা আকতার, পুষ্টিবিদ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।