জুমবাংলা ডেস্ক : পদ্মা সেতু চালুর প্রথম দুই মাসে টোল আদায় হয়েছে ১৩৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩ হাজার ৮৫০ টাকা। এ সময়ে সেতু অতিক্রম করেছে ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৩৩৫টি যান।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছেন সেতু বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ ফেরদৌস।
২৬ জুন থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের এই তথ্য দিয়ে তিনি জানান, স্বপ্নজয়ের পদ্মা সেতু দক্ষিণের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে অনেক কিছুই বদলে যাচ্ছে। দিনরাত সাচ্ছন্দ্যে যান চলাচল করছে।
ফেরদৌস জানান, এই দুই মাসে প্রতিদিন গড়ে যান পারাপার হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার ২১৩টি। আর গড় টোল আদায় প্রায় ২ কোটি ২৮ লাখ ৮৪ হাজার ৭৫১ টাকা।
গত ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। পরের দিন ২৬ জুন ভোর ৬টা থেকে যানবাহনের জন্য পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হয়।
জুন মাসের ৫ দিনে ১ লাখ ১৭ হাজার ১০৪টি যান পারাপারে আয় হয় ১০ কোটি ১৪ লাখ ১ হাজার ৮৫০ টাকা। প্রতিদিন গড় ২৩ হাজার ৪২১ যান পারাপারে গড় আয় ২ কোটি ২ লাখ ৮০ হাজার ৩৭০ টাকা।
জুলাই মাসের ৩১ দিনে ৫ লাখ ৮৭ হাজার ২০ যান পারাপারে আয় ৭৮ কোটি ৫০ লাখ ১৯ হাজার ৪০০ টাকা। এ মাসে প্রতিদিন গড় ১৮ হাজার ৯৩৬ যান পারাপারে গড় আয় ২ কোটি ৫৩ লাখ ২৩ হাজার ২০৬ টাকার বেশি।
আর চলতি আগস্টের ২৫ দিনে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ২১১ যান পারাপারে আয় ৫০ কোটি ১৯ লাখ ৮২ হাজার ৬০০ টাকা। এ মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৩ হাজার ৪০৮ যান পারাপারে আয় ২ কোটি ১ লাখ ৬৪ হাজার ৩০৮।
এছাড়া, ৮ জুলাই পদ্মা সেতু দিয়ে ৩১ হাজার ৭২৩টি যান পারাপারে আয় হয় রেকর্ড আয় হয়। এদিন সর্বোচ্চ ৪ কোটি ১৯ লাখ ৩৯ হাজার ৬৫০ টাকা আয় হয়।
পদ্মা সেতু দেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হয়। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাংশের সংযোগ ঘটে।
সেতু চালুর পর থেকেই নির্বিঘ্নে দিনরাত অবিরাম যানবাহন পারাপার হওয়ায় দিন বদলের হাওয়া বইছে চারদিকে।
সেতুর কাছাকাছি জেলার অনেকে বাড়ি থেকেই সরাসরি ঢাকায় অফিস করতে পারছেন। সেতু ঘিরে বদলে গেছে অনেক কিছু। দক্ষিণের ২১ জেলা রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হওয়ার পর ফেরির বিড়ম্বনা আর নেই। যেখানে দিনের পর দিন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটে পদ্মা পাড়ি দেয়ার অপেক্ষার প্রহর গুণতে হতো সেখানে চোখের পলকে বিশাল পদ্মা পার হওয়া যেন দিবাস্বপ্ন। তাই কৃষি, শিল্প, পর্যটনসহ সব সেক্টরে আমূল পরিবর্তন সাদা চোখেই দেখা যাচ্ছে। বৈশ্বিক নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এখানে বিনিয়োগ বাড়ছে। উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত সহজ হওয়ায় কৃষকের উৎসাহ বেড়ে গেছে। আবাদে তারা কোমর বেঁধে নেমেছেন।
দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে রয়েছে চার লেনের সড়কপথ এবং নিচের স্তরটিতে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮ দশমিক ১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত দেশটির সবচেয়ে বড় এ সেতু।
পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ হয়েছে স্বপ্নের এ সেতু। ২০১৪ সালে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।