কোপা আমেরিকাজয়ী আর্জেন্টিনার অলিম্পিক অভিযান শুরু হলো বিতর্কিত হার দিয়ে। আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের লক্ষ্য করে উত্তপ্ত গ্যালারি থেকে উড়ে এলো পানির বোতল। পরিস্থিতি সামাল দিতে হস্তক্ষেপ করতে হয় পুলিশকে। সব দেখে বিস্মিত লিওনেল মেসি লিখলেন ‘অবিশ্বাস্য’।
অলিম্পিকের ফুটবল ইভেন্টে গ্রুপ-বি এর প্রথম ম্যাচে মরক্কোর মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা। হ্যাভিয়ের মাশ্চেরানোর দল অলিম্পিকে এসেছিল বড় প্রত্যাশা নিয়ে। সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে দলে যোগ হয়েছিলেন বিশ্বকাপ জেতা দুই তারকা হুলিয়ান আলভারেজ এবং নিকোলাস ওতামেন্ডি। আর গোলরক্ষক হিসেবে ছিলেন উদীয়মান তারকা জিরোনিমা রুল্লি। তিনজনেই কদিন আগে লিওনেল মেসি-আনহেল ডি মারিয়াদের সঙ্গে জয় করেছিলেন কোপা আমেরিকা।
কিন্তু মাঠের খেলায় বাস্তবতা দেখায় মরক্কো। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সোফিয়ানে রাহিমির গোলে ২-০ গোলের লিড পেয়ে যায় আফ্রিকান দলটি। সেখান থেকে অবশ্য পরবর্তীতে ম্যাচে ফেরে আর্জেন্টিনা। দুই দলের খেলা ২-২ গোলে ড্র ধরে নিয়েছিলেন সবাই। গণমাধ্যম কর্মীরাও এটাকেই ধরে নিয়েছিলেন ম্যাচের ফল। তবে এখানেও ছিল নাটক। ম্যাচ ভেন্যু সেইন্ট এতিয়েনের মাঠের ম্যানেজার জানালেন, ম্যাচ শেষ হয়নি। বাকি আছে ত্রিশ সেকেন্ডের খেলা।
অন্তিম মুহূর্তে আর্জেন্টিনার গোলের পর মরক্কোর ভক্ত মাঠে নেমেছিলেন। বাজি ছুঁড়ে মারা হয়েছিল আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের দিকে। ফুটবলে পিচ ইনভেশন বা মাঠে ভক্তদের ঢুকে যাওয়ার ঘটনা নতুন না। তবে এরজন্য ম্যাচ থামিয়ে দেওয়ার ঘটনা বিরল। তবে অলিম্পিকে মরক্কো এবং আর্জেন্টিনা ম্যাচে তাই ঘটে। খেলা বন্ধ থাকে। এরপরই ঘটে অবিশ্বাস্য ঘটনাটি।
খেলা শেষের দেড়ঘণ্টা পর জানানো হয়, অফসাইডে বাতিল হয়েছে সেই গোল। আর খেলা হবে আরও তিন মিনিট। দুই দলই স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় আরেকবার মাঠে নেমেছে ৩ মিনিটের খেলা শেষ করতে। সেখানে আর্জেন্টিনা আর গোল পায়নি। আর গোল বাতিলের সুবাদে ২-১ গোলের জয় দিয়ে দারুণ এক সূচনা করে মরক্কো।
এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেননি লিওনেল মেসিও। পায়ের চোটে তিনি এখন রয়েছেন বিশ্রামে। বুধবার নিজ দেশের হারের পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোপা আমেরিকাজয়ী আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়ক লিখেছেন, ‘অবিশ্বাস্য।’ আয়োজকদের এমন সিদ্ধান্তের ওপর ক্ষুব্ধ আর্জেন্টাইন কোচ হাভিয়ের মাশ্চেরানোও। মরক্কো অধিনায়ক খেলতে চাননি এমন দাবি করে আর্জেন্টাইন কোচের বক্তব্য, ‘মরক্কো অধিনায়ক (পুনরায়) খেলতে চায়নি। আমরাও চাইনি আর দর্শকেরাও আমাদের তাক করে অনেক কিছু ছুড়ে মেরেছে। আমার জীবনে দেখা এটাই সবচেয়ে বড় তামাশা।’
অফসাইডে গোল বাতিল নিয়েও কড়া মন্তব্য মাশ্চেরানোর, ‘রিভিউ করতে তারা কেন ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় নিয়েছে তা আমি জানি না। মেদিনার গোলে যদি অফসাইড হয় তবে ম্যাচটি সেভাবেই চালিয়ে যাওয়া যেত। আমার মনে হয় না দেড় ঘণ্টা বিরতি নিয়ে ম্যাচটি আবারও তিন মিনিটের জন্য খেলার প্রয়োজন ছিল।’
এমন খেলা পাড়ার ফুটবলেও দেখা যায়না বলে মন্তব্য মাশ্চেরানোর, ‘এমন ঘটনা পাড়ার টুর্নামেন্টেও ঘটে না। এটা লজ্জার। অলিম্পিকের চেতনার বাইরে এই সংস্থাকে মানসম্মত হতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই মুহূর্তে তারা সেটি হতে পারেনি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।