নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করার চেষ্টা হয়েছিল, ধ্বংস করার চেষ্টা হয়েছিল। আমার মনে হয় সেই ষড়যন্ত্র সফল হবে না। আমাদের অর্থনীতি গতিশীল থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা সাহসিকতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন, এ ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার সক্ষমতা তাদের রয়েছে। ব্যবসায়ীদের প্রতি আমাদেরও এ আস্থা আছে।’
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) চট্টগ্রাম বন্দরে কর্মরত শ্রমিকদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে চট্টগ্রাম অনেক নিরাপদ ছিল। চট্টগ্রাম বন্দরে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সময়োচিত সঠিক সিদ্ধান্তের কারণে আমরা রক্ষা পেয়েছি, আমাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আমরা আশ্বস্ত হয়েছি আমাদের অর্থনীতির লাইফলাইন এখনো আনটাচ আছে, একদম নিরাপদ আছে। এটা আমাদের জন্য খুবই স্বস্তির ছিল। কিন্তু যে ঘটনা ঘটেছে তার কারণে আমরা অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে পণ্য পরিবহন করতে পারিনি।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ডিজিটাল সার্ভার স্টেশন, ডাটা সেন্টার পুড়ে দেওয়ার কারণে আমাদের ডিজিটাল প্লাটফরম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কাস্টমস তাদের কার্যক্রম করতে পারেনি বলেই চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট তৈরি হয়েছে। কারণ পুরোপুরি ডিজিটালি কাজ করে তারা। যদিও অনেক কষ্ট ও পরিশ্রমের পর ম্যানুয়ালি কিছু কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। তাতে প্রতিদিন বন্দরে ৭-৮ হাজার কনটেইনার হ্যান্ডলিং, ডিসচার্জ হচ্ছে জাহাজ থেকে। এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব ছিল না। এ কারণে সার্বিক অর্থনীতিতে বিরাট ক্ষতি হয়েছে। আমাদের পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠান অনেক ক্ষেত্রে কিছুটা স্লো হয়ে গেছে, বন্ধ হয়ে গেছে। এটা বাংলাদেশের অর্থনীতির বিরাট একটা ধাক্কা। আমি জানি না এ ধাক্কা কীভাবে কাটিয়ে উঠবে।’
রেলপথে কনটেইনার পরিবহন সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম চলছে। আপনারা জানেন রেল বন্ধ হয়ে গেছে, নৌপথ বন্ধ হয়ে গেছে। রাস্তাঘাটের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেক ব্রিজ কালভার্ট ধ্বংস হয়ে গেছে। অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা আলোচনা করছি। আমাদের রেল আছে। পদ্মা সেতুর সঙ্গে রেলসংযোগ হওয়ার কারণে কমলাপুর আইসিডি অনেক সংকুচিত হয়েছে। আমি মনে করি, খুব দ্রুত জটিলতা কাটিয়ে উঠতে পারবো।
কনটেইনারের ওপর বন্দরের ডেমারেজ আদায় প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক কনটেইনার আমদানিকারক পরিস্থিতির কারণে খালাস করতে পারেনি। তাদের একটা চার্জের মুখোমুখি চলে এসেছে। আপনারা জানেন যে চট্টগ্রাম বন্দর ৫০০ কোটি টাকার ওপরে ওয়েভার দিয়েছিল করোনার সময়। আমাদের কাছে ব্যবসায়ীরা সেভাবে যদি উপস্থাপন করে চট্টগ্রাম বন্দর সেটা নিশ্চিতভাবে বিবেচনা করবে। শুধুই যে ব্যবসা করার জন্য নয়, দেশের অর্থনীতিকে সেবা করার জন্য এ বন্দর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এ বন্দর পরিচালনা হবে না। অর্থনীতির সেবার ক্ষেত্রে এ বন্দর কাজে লাগবে। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। সঠিক তথ্য প্রমাণসহ আসলে আমরা পাশে দাঁড়াবো।
চলমান প্রকল্প প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে বলেছিলাম, ২০২৪-২৫ সালে আমরা চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনালের কাজ করবো। কিন্তু পারিনি তা। এটাই বাস্তবতা। কেন পারিনি, কারণ তিন বছর ব্লক ছিলাম। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা থেমে গিয়েছিল। এখন আমরা সচল হয়েছি। কিন্তু এখন যে সংকট তৈরি হলো পৃথিবীর দেশে দেশে বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থার ওপর যে বার্তা গেল সেটা আমাদের জন্য ভালো নয়। আমি জানি না, যাদের সঙ্গে আমরা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করবো তারা কীভাবে দেখছেন। পরবর্তীতে আলোচনা না করে এ মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।