Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home দৈনিক রাশিফল বিশ্বাসযোগ্য কিনা: সত্য জানুন
    লাইফস্টাইল ডেস্ক
    লাইফস্টাইল

    দৈনিক রাশিফল বিশ্বাসযোগ্য কিনা: সত্য জানুন

    লাইফস্টাইল ডেস্কMd EliasJuly 20, 20259 Mins Read
    Advertisement

    সকালের চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে হাতের দিকে চোখ পড়ল। আজকের দিনটা কেমন যাবে? কাজে সফলতা মিলবে নাকি সতর্ক থাকতে হবে? প্রশ্নটা মাথায় ঘুরতেই, হাতটা আপনা থেকেই বাড়িয়ে দিলো পাশে রাখা পত্রিকার দিকে। সেই পরিচিত কলাম – দৈনিক রাশিফল। কয়েক লাইনের ভবিষ্যদ্বাণী, যার উপর ভরসা করে কতশত মানুষই না তাদের দিনের প্ল্যান সাজান। কিন্তু এই দৈনিক রাশিফল বিশ্বাসযোগ্য কিনা – এটাই তো বড় প্রশ্ন! এই কয়েকটি লাইন কি সত্যিই নক্ষত্রপুঞ্জের গতিবিধি বিশ্লেষণ করে লেখা, নাকি এটা শুধুই এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক সান্ত্বনা? আসুন, খোলাসা করে জেনে নিই এই রাশিফলের জগতের আসল রূপ।

    দৈনিক রাশিফল বিশ্বাসযোগ্য কিনা

    দৈনিক রাশিফলের উৎস: জ্যোতিষশাস্ত্র নাকি গণমাধ্যমের সাজানো গল্প?

    দৈনিক পত্রিকা বা অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত রাশিফলগুলো যে কতটা গভীর জ্যোতিষীয গণনার উপর ভিত্তি করে লেখা হয়, তা নিয়ে বড় ধরণের সন্দেহ আছে। জ্যোতিষশাস্ত্র একটি প্রাচীন ও জটিল বিদ্যা, যার জন্য প্রয়োজন একজন দক্ষ জ্যোতিষীর ব্যক্তিগত সময়, জন্মকালীন গ্রহ-নক্ষত্রের সঠিক অবস্থান (জন্ম কুণ্ডলী), এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তির জীবন পরিস্থিতির গভীর বিশ্লেষণ।

    • ব্যক্তিগতকরণের অভাব: দৈনিক রাশিফল সাধারণত শুধুমাত্র সূর্য রাশির (জন্মসালের নির্দিষ্ট মাসে সূর্য যে রাশিতে অবস্থান করে) উপর ভিত্তি করে লেখা হয়। কিন্তু জ্যোতিষশাস্ত্রে শুধু সূর্য নয়, চন্দ্র, রাহু-কেতু, বৃহস্পতি সহ অন্যান্য গ্রহের অবস্থান ও তাদের পারস্পরিক সম্পর্কও সমান গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রখ্যাত জ্যোতিষবিদ ড. দেবাশীষ ভট্টাচার্য তার এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট বলেছেন, “সাধারণ রাশিফল কখনই ব্যক্তিগত ভবিষ্যদ্বাণী বা নির্দেশিকা হতে পারে না। এগুলো খুবই সাধারণীকৃত এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য প্রযোজ্য এমন কিছু কথা বলা হয়, যা প্রায় সবাই নিজের জীবনের সাথে মেলাতে পারেন।”
    • গণনার পদ্ধতি: অধিকাংশ দৈনিক রাশিফল লেখার জন্য নির্দিষ্ট সফটওয়্যার বা টেমপ্লেট ব্যবহার করা হয়। এই সফটওয়্যারগুলো সূর্যের মাসিক রাশিচক্র অনুযায়ী পূর্বনির্ধারিত কিছু বাক্য বা বাক্যাংশ র্যান্ডমলি বা একটি নির্দিষ্ট ফরম্যাটে সাজিয়ে দেয়। এখানে কোনও ব্যক্তিগত জ্যোতিষীগণনা বা গ্রহ-নক্ষত্রের বর্তমান গতিবিধির গভীর বিশ্লেষণ থাকে না বললেই চলে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সুব্রত চক্রবর্তী তার গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত রাশিফলের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি প্রায়শই অনুপস্থিত থাকে।

    দৈনিক রাশিফল কেন এত জনপ্রিয়? মনস্তত্ত্বের গভীরে এক নজর

    তাহলে প্রশ্ন জাগে, বৈজ্ঞানিক বা জ্যোতিষশাস্ত্রীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দুর্বল হলেও দৈনিক রাশিফল কেন মানুষের এত আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু? এর পেছনে মনস্তাত্ত্বিক কিছু কারণ অত্যন্ত শক্তিশালী:

    • নিশ্চিতকরণের পক্ষপাত (Confirmation Bias): আমরা এমন তথ্য খুঁজি বা মনে রাখি যা আমাদের পূর্বধারণা বা বিশ্বাসের সাথে মেলে। রাশিফলে যদি লেখা থাকে “আজ আর্থিক লাভের সম্ভাবনা” এবং সেদিন টাকার কিছু পাওয়া যায় (যা সাধারণ ঘটনাও হতে পারে), আমরা সেটাকে রাশিফলের সত্যতা বলে মনে করি। কিন্তু রাশিফলে উল্লেখিত নেতিবাচক ভবিষ্যদ্বাণী বা অপ্রাসঙ্গিক কথাগুলো আমরা সহজেই ভুলে যাই বা এড়িয়ে যাই।
    • ফোরার ইফেক্ট (Forer Effect বা ব্যার্নাম ইফেক্ট): এটি এমন একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রপঞ্চ যেখানে মানুষ খুবই সাধারণ ও অস্পষ্ট বিবৃতিকে নিজের জীবনের জন্য অত্যন্ত সঠিক ও ব্যক্তিগত বলে মনে করে। দৈনিক রাশিফলে ব্যবহৃত বাক্যগুলো প্রায়ই এতটাই সাধারণ হয় যে তা প্রায় যেকোনো মানুষের জীবনের কোনো না কোনো দিকের সাথে মিলে যায়। যেমন: “কাছে থাকা মানুষের সাথে কিছুটা মনোমালিন্য হতে পারে”, “কাজে সতর্কতা প্রয়োজন” – এ ধরনের কথা প্রায় প্রত্যেকের জীবনেই প্রযোজ্য কিছু সময়ে।
    • অনিশ্চয়তা কমাতে চাওয়া: জীবনের অনিশ্চয়তা মানুষের জন্য চাপের কারণ। রাশিফল যেন একটি ভবিষ্যতের ছোট্ট খবর, যা কিছুটা হলেও সেই অনিশ্চয়তার ভয় কমাতে সাহায্য করে। এটা একটা মানসিক সাপোর্ট সিস্টেমের মতো কাজ করে।
    • রুটিন ও আনন্দ: অনেকের জন্য সকালের চা-এর সাথে পত্রিকার রাশিফল পড়াটা একটি আনন্দদায়ক রুটিন। এটি দিন শুরু করার একটি হালকা-পাতলা, মজার উপায়।

    বিশ্বাসযোগ্যতা পরীক্ষা: বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ ও পরিসংখ্যান

    দৈনিক রাশিফলের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পরীক্ষা করা হয়েছে, যার ফলাফল খুবই স্পষ্ট:

    1. নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষা: বহুবার পরীক্ষা করা হয়েছে, যেখানে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন রাশির (যার সাথে তাদের নিজের রাশির কোনও সম্পর্ক নেই) ভবিষ্যদ্বাণী দেওয়া হয়েছে। তারা প্রায়ই নিজের রাশির ভবিষ্যদ্বাণী বলে মনে করেছে এবং তার যথার্থতার প্রশংসা করেছে। এটি ফোরার ইফেক্টের জোরালো প্রমাণ।
    2. ভবিষ্যদ্বাণীর সাফল্যের হার: কোনো নির্ভরযোগ্য গবেষণায় কখনোই প্রমাণিত হয়নি যে দৈনিক রাশিফল নির্দিষ্ট রাশির মানুষের জীবনে সংঘটিত ঘটনাবলীকে অন্যান্য রাশির মানুষদের তুলনায় বেশি সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে। ভারতের জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরো (NCRB) এর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ভিন্ন রাশির মানুষের মধ্যে অপরাধ, দুর্ঘটনা বা সাফল্যের হার নির্দিষ্ট প্যাটার্ন অনুসরণ করে না, যা রাশিফলের ভবিষ্যদ্বাণীর বিপরীত।
    3. বিজ্ঞানের অবস্থান: জ্যোতির্বিজ্ঞান (Astronomy) এবং জ্যোতিষশাস্ত্র (Astrology) সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস। জ্যোতির্বিজ্ঞান মহাবিশ্বের বস্তু ও প্রক্রিয়াগুলোর বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন, যেখানে জ্যোতিষশাস্ত্রকে একটি ছদ্মবিজ্ঞান (Pseudoscience) হিসাবে বিবেচনা করা হয়, কারণ এর দাবিগুলো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে প্রমাণিত হয়নি। নাসা (NASA) বা ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ESA) এর মতো সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইটে জ্যোতিষশাস্ত্রের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে।
    4. গবেষণার ফল: ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত বিখ্যাত ‘শন পরীক্ষা’ (Shawn Carlson experiment), যা নেচার জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল, এটি প্রমাণ করে যে জ্যোতিষীগণ ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য বা ভবিষ্যতের ঘটনা সম্পর্কে বর্ণনা করার ক্ষেত্রে অনুমানের চেয়ে ভালো কিছু করতে পারেননি। পরবর্তী বহু গবেষণায় একই ধরনের ফলাফল এসেছে।

    দৈনিক রাশিফলের সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব: অবিশ্বাস থেকে সতর্কতা

    হালকা মজা বা রুটিন হিসাবে পড়লে সমস্যা নেই। কিন্তু যখন দৈনিক রাশিফল জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ভিত্তি হয়ে ওঠে, তখনই বিপদ:

    • গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে বাধা: ক্যারিয়ার পরিবর্তন, বিনিয়োগ, চিকিৎসা, সম্পর্কের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র রাশিফলের উপর ভিত্তি করে নেওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং ক্ষতির কারণ হতে পারে। (“আজ বিনিয়োগের ভালো দিন নয়” – এই ভেবে লাভজনক সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে)।
    • অহেতুক উদ্বেগ বা ভুল আশা: নেতিবাচক ভবিষ্যদ্বাণী অহেতুক উদ্বেগ ও মানসিক চাপ তৈরি করতে পারে (“আজ দুর্ঘটনার সম্ভাবনা” – সারাদিন অস্থিরতা)। আবার অতিরিক্ত ইতিবাচক ভবিষ্যদ্বাণী ভুল আশা জাগিয়ে পরে হতাশা ডেকে আনতে পারে।
    • নিয়তি নির্ভরতা: রাশিফলে অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা মানুষকে নিষ্ক্রিয় করে তুলতে পারে। “ভাগ্যে যা আছে তাই হবে” – এই মনোভাব ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা, পরিকল্পনা ও দায়িত্ববোধকে দুর্বল করে দেয়।
    • অর্থনৈতিক শোষণ: যারা রাশিফলে গভীরভাবে বিশ্বাস করেন, তারা প্রায়শই “অশুভ প্রভাব” কাটানোর জন্য জ্যোতিষী, তান্ত্রিক বা পূজারীর শরণাপন্ন হন, যারা বিপুল অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন প্রতিকার বা রত্ন বিক্রি করে থাকেন। এটি একটি বড় আর্থিক শোষণের পথ। বাংলাদেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (Department of National Consumer Rights Protection) প্রায়শই এ ধরনের প্রতারণার অভিযোগ পেয়ে থাকে।

    দৈনিক রাশিফল পড়ার সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি: মজা নাকি নির্দেশিকা?

    তাহলে দৈনিক রাশিফল পড়া কি একেবারেই উচিত নয়? উত্তরটা পরিস্থিতি ও দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে:

    • বিনোদন হিসাবে গ্রহণ করুন: এটাকে দিন শুরু করার একটি হালকা, মজাদার রুটিন হিসাবে নিন। পাজল বা কার্টুন পড়ার মতোই ভাবুন।
    • সতর্কতার সাথে পড়ুন: মনে রাখবেন, এগুলো খুবই সাধারণ ও অস্পষ্ট বাক্য। এগুলোকে জীবনের নির্দেশিকা বা ভবিষ্যদ্বাণী হিসাবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই।
    • দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করুন: রাশিফলে উল্লেখিত “সতর্কতা” বা “ইতিবাচকতা”কে নিজের জীবনের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রাসঙ্গিক কোনও দিকের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার একটি সুযোগ হিসেবে নিতে পারেন। যেমন, “কাজে সতর্কতা প্রয়োজন” পড়ে আপনি হয়তো আপনার চলমান কোনো প্রজেক্টে আরেকবার নজর দিতে পারেন। কিন্তু এটা গ্রহ-নক্ষত্রের নির্দেশ নয়, বরং আপনার নিজের সচেতনতারই ফল।
    • কখন এড়িয়ে চলবেন: যদি আপনি উদ্বেগ প্রবণ হন, জীবনে বড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, বা অতীতে রাশিফলের উপর ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন, তাহলে এটি পড়া একেবারেই এড়িয়ে চলাই ভালো।

    বিকল্প দৃষ্টিকোণ: নিজের ভাগ্য নিজেই গড়ে তোলা

    জ্যোতিষীরা আকাশের তারা গুনতে পারেন, কিন্তু আপনার জীবনের গল্প লেখার কলমটি তো আপনার হাতেই! দৈনিক রাশিফলের অস্পষ্ট ইঙ্গিতের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হল আপনার নিজের বুদ্ধি, বিচারক্ষমতা, পরিশ্রম এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা।

    • ব্যক্তিগত দায়িত্ব: আপনার সাফল্য ও ব্যর্থতার জন্য গ্রহ-নক্ষত্র নয়, আপনার নিজের কর্ম ও সিদ্ধান্তই মুখ্য দায়ী। ভাগ্যকে দোষ দিয়ে নিজের দায়িত্ব এড়ানো যায় না।
    • যৌক্তিক সিদ্ধান্ত: জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তথ্য, যুক্তি, বিশেষজ্ঞ পরামর্শ (যেমন: ক্যারিয়ারে কাউন্সেলর, স্বাস্থ্যে ডাক্তার, বিনিয়োগে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজার) এবং নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে সিদ্ধান্ত নিন, রাশিফলের কথায় নয়।
    • ইতিবাচক মনোভাব ও প্রচেষ্টা: একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং অধ্যবসায়ই জীবনে সাফল্য ও সন্তুষ্টি আনার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। “আজ ভাগ্যবান দিন” এর চেয়ে “আজ আমি আমার সেরাটা দেবো” – এই মনোভাব অনেক বেশি শক্তিশালী।

    দৈনিক রাশিফল বিশ্বাসযোগ্য কিনা এই প্রশ্নের উত্তর, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ, মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার নিরিখে এক কথায় বলতে গেলে – না, দৈনিক রাশিফল বিশ্বাসযোগ্য নয়। এটি জ্যোতিষশাস্ত্রের নামে প্রচারিত একটি সাধারণীকৃত, অস্পষ্ট ও প্রায়শই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি বার্তা, যার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই এবং যার ভবিষ্যদ্বাণী সাফল্যের হার অনুমানের সমতুল্য। এটি জনপ্রিয় শুধুমাত্র মনস্তাত্ত্বিক প্রপঞ্চের কারণে। তবে, এটি পড়াকে যদি শুধুমাত্র একটি হালকা বিনোদন বা দৈনন্দিন রুটিন হিসেবে দেখা হয়, এবং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ভিত্তি না করা হয়, তাহলে ক্ষতির সম্ভাবনা কম। মনে রাখবেন, আপনার ভাগ্য নক্ষত্রপুঞ্জের দূরবর্তী অবস্থানের উপর নয়, বরং আপনার হাতের মুঠোয়, আপনার চিন্তায়, কর্মে এবং দায়িত্বশীল সিদ্ধান্তে নিহিত। গ্রহ-নক্ষত্রের দিকে তাকানোর চেয়ে নিজের লক্ষ্যের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়াই প্রকৃত সাফল্যের পথ। আজই সিদ্ধান্ত নিন – আপনি আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকবেন, নাকি নিজের পথ নিজেই আলোকিত করবেন?


    জেনে রাখুন

    ১. দৈনিক রাশিফল কি একেবারেই মিথ্যা?
    উত্তর: এটাকে “মিথ্যা” বলার চেয়ে “অবৈজ্ঞানিক” এবং “অত্যন্ত সাধারণীকৃত” বলা বেশি যুক্তিযুক্ত। এগুলো এমন অস্পষ্ট বাক্য ব্যবহার করে যা অনেকের জীবনের কোনো না কোনো পরিস্থিতির সাথে মিলে যেতে পারে (ফোরার ইফেক্ট)। এগুলোর পেছনে ব্যক্তিগত জ্যোতিষীগণনা বা গ্রহ-নক্ষত্রের সুনির্দিষ্ট বিশ্লেষণ সাধারণত থাকে না। বিনোদনের খোরাক হিসাবে পড়া যেতে পারে, কিন্তু বিশ্বাসের ভিত্তি নয়।

    ২. অনেক সময় তো রাশিফলের কথা মিলেও যায়! এর কারণ কী?
    উত্তর: এর প্রধান কারণ হল “নিশ্চিতকরণের পক্ষপাত”। আমরা শুধু সেই কথাগুলোই মনে রাখি বা গুরুত্ব দেই যা আমাদের জীবনের ঘটনার সাথে মিলে যায়। যে দিনগুলোতে রাশিফলের কথা মেলেনি, সেগুলো আমরা সহজেই ভুলে যাই। এছাড়া, রাশিফলের বাক্য এতটাই সাধারণ (যেমন: “কাজে সফলতা পেতে পারেন”, “পরিবারে সুখ শান্তি”) যে সপ্তাহে কয়েকদিন যেকোনো মানুষের জীবনে এমন ঘটনা ঘটবেই।

    ৩. পত্রিকা বা ওয়েবসাইটে নামকরা জ্যোতিষীর নামে রাশিফল বের হয়, সেগুলোও কি অবিশ্বাস্য?
    উত্তর: দুর্ভাগ্যবশত, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হ্যাঁ। একজন নামকরা জ্যোতিষীও লক্ষ লক্ষ ভিন্ন ভিন্ন জন্ম কুণ্ডলীর মানুষের জন্য প্রতিদিন সত্যিকারের ব্যক্তিগতকৃত ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারেন না। প্রায়ই তাদের নাম ব্যবহার করে পূর্বনির্ধারিত টেমপ্লেট বা সফটওয়্যার দিয়েই রাশিফল তৈরি করা হয়। নামটি শুধু বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।

    ৪. গর্ভবতী মহিলা বা নতুন ব্যবসা শুরু করার মতো বিশেষ সময়ে রাশিফল দেখানো হয় কেন?
    উত্তর: অনিশ্চয়তা ও ভয় যত বেশি, মানুষ ততবেশি নিয়ন্ত্রণ বা আশ্বাসের সন্ধান করে। গর্ভাবস্থা বা নতুন ব্যবসা – দুটোই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ও অনিশ্চিত অধ্যায়। এই সময়ে মানুষ অতিরিক্ত চাপ ও উদ্বেগে থাকে। রাশিফল তাদের কিছুটা মানসিক সান্ত্বনা ও ভবিষ্যতের ইতিবাচক আশা দেয় (যদিও তা অবাস্তব), যা তাদের সাময়িকভাবে স্বস্তি দিতে পারে। তবে, চিকিৎসা বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত রাশিফলের উপর ভিত্তি করে নেওয়া উচিত নয়।

    ৫. দৈনিক রাশিফল পড়া কি খারাপ বা পাপ?
    উত্তর: ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে এটি নির্ভর করে ব্যক্তির বিশ্বাস ও ধর্মীয় ব্যাখ্যার উপর। তবে যুক্তি ও বাস্তবতার দৃষ্টিকোণ থেকে, এটিকে শুধুমাত্র হালকা বিনোদন হিসেবে নিলে এবং জীবনের সিদ্ধান্তের ভিত্তি না করলে, তাতে বিশেষ ক্ষতি নেই। সমস্যা হয় তখনই যখন এটিকে সত্যিকারের ভবিষ্যদ্বাণী বা নির্দেশিকা হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং তার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বা অহেতুক আশা-ভয়ের সৃষ্টি করা হয়।

    ৬. জ্যোতিষশাস্ত্র পুরোপুরি ভুল, এটা কি সত্যি?
    উত্তর: জ্যোতিষশাস্ত্রকে একটি প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বা দার্শনিক পদ্ধতি হিসেবে দেখা যেতে পারে। তবে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বারবার পরীক্ষা করে এটিকে একটি নির্ভরযোগ্য ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বা ব্যক্তিত্ব-বিশ্লেষণমূলক বিজ্ঞান হিসেবে প্রমাণ করা যায়নি। তাই, এর দাবিগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলে বিজ্ঞানীরা একে ছদ্মবিজ্ঞান (Pseudoscience) শ্রেণীতে ফেলেন। ব্যক্তিগত বিশ্বাস আলাদা বিষয়, কিন্তু বৈজ্ঞানিক সত্যতা আলাদা।


    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    ‘দৈনিক কিনা জানুন দৈনিক রাশিফল বিশ্বাসযোগ্য কিনা বিশ্বাসযোগ্য রাশিফল লাইফস্টাইল সত্য
    Related Posts
    মাথা

    উঁচুতে উঠলেই মাথা ঘোরে? জানুন এই ১০টি ঘরোয়া পদ্ধতি

    July 20, 2025
    রাজা

    কোন ভারতীয় রাজা তার মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন

    July 20, 2025
    স্পার্মের কোয়ালিটি

    স্পার্মের কোয়ালিটি ঠিক রাখতে এড়িয়ে চলুন ৫টি খাবার

    July 20, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Nahid

    মেজর জিয়া চট্টগ্রাম থেকেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন : নাহিদ

    Doulatpur

    যমুনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে অবশেষে প্রশাসনের অভিযান

    Tacher

    সাতক্ষীরায় শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা, গণপিটুনিতে যুবক নিহত

    মিরপুর ডিওএইচএসে ডাকাতি করে পালানোর সময় সাবেক সেনা সদস্যসহ আটক ৫

    ২২ ক্যারেট সোনার দাম

    ২২ ক্যারেট সেনার দাম: ভরি প্রতি আজকের স্বর্ণের মূল্য কত?

    নামাজের সময়সূচি ২০২৫

    নামাজের সময়সূচি: ২১ জুলাই, ২০২৫

    আজকের টাকার রেট

    আজকের টাকার রেট: ২১ জুলাই, ২০২৫

    Jamyat

    মহাসমাবেশ শেষে রমনা পার্কে জামায়াতের পরিচ্ছন্নতা অভিযান

    Sakib Khan

    শাকিব খানের কান্নার ছবি ভাইরাল

    saiyaara box office collection day

    Saiyaara Box Office Collection Day 3: Hits ₹90 Crore, 2025’s Second-Biggest Sunday After Chaava

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.