
জুমবাংলা ডেস্ক : সৌদি প্রবাসী আবু সিদ্দিক (৪৫)। বছর দুয়েক আগে দেশে এসে আটকা পড়েন। গত সোমবার দুপুরে বাড়ির পেছনে প্রতিবেশী এক নারীকে একা পেয়ে ঝাপটে ধরে জঙ্গলে নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। থানায় যেয়ে বিচার চাওয়ার আগেই স্থানীয় সালিসকারীরা ঘটনাটি সালিস দরবারে নিয়ে সিদ্ধান্ত দেয় সিদ্দিককে কানধরে উঠবস, নারীর পায়ে ধরে ক্ষমা। সর্বশেষ ৯০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়। যা পরিশোধের পরই সিদ্দিক রক্ষা পান। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চর বেতাগৈর ইউনিয়নের বীরখামাটখালি গ্রামে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে আবু সিদ্দিক পাঁচ বছর বিদেশ থেকে গত দুই বছর আগে দেশে আসেন। পরে যাওয়ার চেষ্টাকালে করোনার কারণে আর যাওয়া হয়নি। এ অবস্থায় গত সোমবার দুপুরে প্রতিবেশী এক নারীকে বাড়ির পেছনে একা পেয়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। রাজী না হওয়ায় ওই নারীকে জোরপূর্বক ধরে পাশের জঙ্গলে নেওয়ার চেষ্টাকালে ব্যর্থ হন তিনি। পরে ওই নারী ঘটনাটি তাঁর স্বামীকে জানালে তিনি এলাকার লোকজনকে জানিয়ে থানায় যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ সময় এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম ঘটনাটি দেখার কথা বলে পরদিন নিজের বাড়িতে সালিসের আয়োজন করেন।
আব্দুস সালাম সালিসের কথা স্বীকার করে জানান, ঘটনাটি সামান্য, বাজে ও নিজেদের মধ্যে হওয়ায় কয়েকজন মিলে মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। সামান্য ঘটনায় কানধরে উঠবস, ক্ষমা চাওয়া ও অর্থ জরিমানা করা হলো কেন, জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন।
তবে অভিযুক্ত সিদ্দিকের স্ত্রী খাদিজা আক্তার কুবরা বলেন, বেডি ( নির্যাতিত নারী) আইল দিয়া হাইট্ট্যা যায় আর এই সময় আমরার এইল্যাও (স্বামী) যায়। এ সময় শইল্যে একটু ধাক্কা লাগে। পরে নানা কথা উডে। এর লাইগ্যা ৯০ হাজার টেহা জরিমানা লাগছে। একটা ধাক্কার লাইগ্যা এতো টাকা জরিমানা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, দশজনে কইছে কি করবাম।
অভিযুক্ত সিদ্দিক নিজেকে নির্দোশ দাবি করে বলেন, সবই আমার কপাল। কিছু না কইর্যাও মাফ চাওন লাগছে। জরিমানার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার কাছে চাইছে তবে সামর্থে না থাকলে দিয়াম কিবায়।
নারীর ভাই সালিসের কথা স্বীকার করে বলেন, বলার কিছুই নাই। ঘঠনাটি সালিসে ফয়সালা হয়েছে এটাই বড় কথা।
এ বিষয়ে ওই এলাকার ইউপি সদস্য মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি স্ট্যান্ডিং মেম্বার। আমাকে না জানিয়ে এ ধরনের সালিস করা যুক্তিযুক্ত নয়। আমি তদন্ত সাপেক্ষে এর সঠিক বিচার চাই।
স্থানীয় চরবেতাগৈর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। তবে এ ধরনের ঘটনা আইনে না পাঠিয়ে সালিসে ফয়সালা করা আইনত অপরাধ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।