লাইফস্টাইল ডেস্ক : যেকোনো সৃষ্টিশীল কাজই সময়, পরিশ্রম আর ধৈর্যের দাবি করে। ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি অর্থাৎ কিনা বন্য পশুপাখির ছবি তোলার ব্যাপার তার মধ্যে সামনের সারিতেই থাকবে। আর অবিশ্বাস্য শোনালেও সত্যি, কেউ কেউ সঠিক মুহূর্তটির জন্য অপেক্ষা করেন ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত!
দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলীয় কাওয়াজুলু-নাটালের লেগুন বন্য প্রাণীর আলোকচিত্রীদের এক পছন্দের জায়গা। রাতের বেলা সেখানকার জিমাঙ্গা প্রাইভেট গেম রিজার্ভ ঢেকে যায় অন্ধকারের চাদরে। ক্রমে মানুষের ঘুমানোর সময় হয়ে আসে। কিন্তু জেগে ওঠে বনভূমি আর বনের সন্তানরা। পেশাদার বা শখের আলোকচিত্রীরাও আটঘাট বেঁধে নেমে পড়েন ছবি তোলার সাজ-সরঞ্জাম নিয়ে। শুরু হয় অপেক্ষার প্রহর। প্রকৃতির চিরন্তন ‘সাউন্ডট্র্যাকের’ সঙ্গে সহসাই যুক্ত হয় অন্য রকম এক শব্দ। নীরব হুল্লোড় পড়ে যায় ফটোগ্রাফারের মধ্যে। কত দ্রুত সবচেয়ে জুতসই জায়গায় অবস্থান নেওয়া যায় তারই পাল্লা চলে যেন। রুদ্ধশ্বাসে প্রতীক্ষা দারুণ কিছু ঘটার জন্য।
পেশাদার শিকারের রিজার্ভ পরিচালনা করেন চার্ল সেনেকাল। রিজার্ভ এলাকাটার ব্যবস্থাপনা করা জিমাঙ্গা ডেস্টিনেশনসের পরিচালক তিনি। সেনেকাল বলেন, ‘একটি দুর্দান্ত ছবি হতে লাগে সেকেন্ডেরও ভগ্নাংশমাত্র। দ্বিতীয়বারের কোনো অবকাশ নেই এখানে।’
বন্য প্রাণী আর ছবি তোলা দুটিই সেনেকালের পুরনো ভালোবাসা। শৈশব থেকেই ছবি তুলছেন।
৮০টিরও বেশি প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী আর ৪০০ প্রজাতির পাখির আবাসস্থল জিমাঙ্গা প্রাইভেট গেম রিজার্ভ। একে এখন বন্য প্রাণী ফটোগ্রাফারদের জন্য আফ্রিকা মহাদেশেরই অন্যতম প্রধান গন্তব্য বিবেচনা করা হয়। লুকিয়ে ছবি তোলার জন্য ৯টি ভিন্ন রকম ‘হাইড’ আছে রিজার্ভটিতে। কৌশলগতভাবে ডিজাইন করা আর সুবিধামতো জায়গায় স্থাপন করা এগুলো। শৌখিন ও পেশাদার উভয় ধরনের আলোকচিত্রীরাই সিংহ বা হাতির মতো বড় প্রাণী থেকে পুঁচকে পাখি পর্যন্ত সব কিছুর নিখুঁত ছবি ক্যামেরাবন্দি করতে পারেন এগুলো ব্যবহার করে।
ভালো ছবি তুলতে চান তাঁদের জন্য সেনেকালের পরামর্শ হচ্ছে, লেগে থাকতে হবে। থাকতে হবে অঙ্গীকার আর সময় দেওয়ার মানসিকতা। এ দুটি মানলে সুযোগ আসবেই।
চার্ল সেনেকাল দেখিয়েছেন বন্য প্রাণীর ছবি তোলায় ধৈর্য সত্যিই এক দারুণ গুণ। জিমাঙ্গা প্রাইভেট গেম রিজার্ভে কিছু কিছু ছবি তুলতে রাতের জন্য অপেক্ষা করতেই হবে। আবার শীতকালে আকাশে কম মেঘ থাকার সময় পাওয়া যায় সিংহের পানিপানের জম্পেশ ছবি। বনে ছবি তোলার জন্য বসে থাকার কষ্টের দিন আর নেই। হাইডগুলোতে এখন থাকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, আরামদায়ক বিছানা, রান্নাঘর এমনকি বাথরুমের সুবিধাও!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।