আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানবজাতির সামনে ”সমূহ বিপর্যয়” হাজির হয়েছে। আজ যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ডে গ্লাসগো শহরে জাতিসংঘের জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সম্মেলনেজাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমাতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন বিশ্বের ১২০টির বেশি দেশের নেতারা। সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তবে তার একটি লিখিত বক্তব্য তুলে ধরা হবে।।
বিশ্বে চীনই সবচেয়ে বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জন্য দায়ী। চীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ২০৬০ সালের মধ্যে দেশটি কার্বন নির্গমন শূন্যে নামিয়ে আনবে।
আমেরিকান প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান চীনা প্রেসিডেন্টের সম্মেলনে উপস্থিত না হওয়ার কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ”চীনের আরও উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়া উচিত”এবং সেকথা তাকে তুলে ধরতে হবে।
চীনা প্রেসিডেন্ট এমনকি ভিডিও লিংকে তার ভাষণ না দিয়ে শুধু যে লিখিত বিবৃতি দিচ্ছেন তারও সমালোচনা করেছেন মি. সালিভান।
বিশ্লেষকরা বলছেন আলোচনা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবার আগেই চীনের এই সমালোচনা আলোচনায় একটা ছায়া ফেলতে পারে।
‘আমরাই নিজেদের কবর খুঁড়ছি’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কয়লা উৎপাদন এবং পেট্রল ও ডিজেলচালিত গাড়ি চালানো বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং আরও বেশি গাছ লাগানো ও অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলোকে পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি উন্নয়নে অর্থ সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বিশ্বনেতাদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন তারা তাপমাত্রার বৃদ্ধি থামাতে ব্যর্থ হলে তাদের কখনো ক্ষমা করা হবে না। তিনি বলেন, এর ফলে প্রচণ্ড ক্ষোভের তৈরি হবে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
জাতিসংঘ মহাসচিব মি. গুতেরেস বলেছেন জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতি নির্ভরশীলতা মানবজাতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।
“বিশ্বের সামনে এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ- আমাদের এটা শেষ করতে হবে নয়ত এটাই আমদের শেষ করব।”
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে- একথা বলার সময় এসেছে। কার্বন দিয়ে আমাদের মৃত্যু ডেকে আনতে আমরা যথেষ্ট করেছি।’
‘আমরাই নিজেদের কবর খুঁড়ছি এবং প্রকৃতিকে একটা টয়লেট হিসাবে ব্যবহার করছি,’ যোগ করেন তিনি।
গুতেরেস বলেছেন বিভিন্ন দেশ কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে সম্প্রতি যেসব ঘোষণা দিয়েছে, কপ২৬ সম্মেলন শেষ হয়ে গেলেই তা যে পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দেবে এমনটা আশা করা হবে “অলীক”।
তিনি বলেছেন কপ সম্মেলন শেষে পৃথিবী যদি সঠিকপথে না এগোয়, তাহলে দেশগুলোর উচিত হবে পরিস্থিতির আলোকে প্রতি পাঁচ বছর নয়, বরং প্রতি বছর তাদের পরিকল্পনা আপডেট করা।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়েপ এরদোয়ানও কপ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে মতৈক্যের কারণে তিনি সম্মেলনে তার যোগদানের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।
তার প্রতিনিধি দলের সদস্য সংখ্যা নিয়ে উদ্যোক্তারা তার দাবি মানতে অস্বীকার করায় তিনি সম্মেলনে যাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন এরদোয়ান।
তিনি বলেছেন এটা শুধু তার প্রতিনিধি দলের নিরাপত্তার বিষয় নয়, এটা তুরস্কের মর্যাদা ও সম্মানের ব্যাপার যেটা তিনি কখনই খাটো হতে দেবেন না। ২০১৫য় প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে গৃহীত চুক্তি তুরস্ক গতমাসে অনুমোদন করেছে।-বিবিসি বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।