জুমবাংলা ডেস্ক : রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় খেজুর ও আখের গুড় তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকর হাইড্রোস, চিনি, চুন ও রং। এছাড়া ভারত থেকে গুড় উৎপাদনের জন্য আমদানিকৃত চিনি গুড় প্রক্রিয়াজাত করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গুড় তৈরি করে বাজারজাত করছেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। তবে এ বিষয়ে রিপোর্ট না করতে প্রতিবেদককে কয়েক দফা টাকা দিয়ে ম্যানেজের চেষ্টা করেন তারা।
সম্প্রতি খবর সংগ্রহে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানি বাজারে গেলে সময়ের ক্যামেরা দেখে তড়িঘড়ি করে দোকানের শাটার নামিয়ে দেন আড়তদার ও গুড় ব্যবসায়ীরা। এখানকার প্রায় অর্ধশত আড়তে দেখা মেলে ভারত থেকে উৎপাদিত মিশ্রি জাতীয় গুড় তৈরির প্রধান উপাদান। এক একটি টিনের পাত্রে ২৪ থেকে ২৫ কেজি এই উপাদান স্থানীয়ভাবে চিনি গুড় নামে পরিচিত।
ঝিনা বাজার এলাকায় বুলবুলের বাড়িতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিনি গুড়ের সাথে চুন মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে আখের গুড়। সেখানে ঢুকতেই কারিগররা ক্যামেরা দেখে পালিয়ে গেলেও পরে স্বীকার করে গুড়ে চিনি, হাইড্রোজ ও রং মেশানোর কথা। তবে এ বিষয়ে রিপোর্ট না করতে পাসা আর তোজাম্মেল মেম্বার নামের দুই ব্যক্তি প্রতিবেদককে কয়েক দফা টাকা দিয়ে ম্যানেজের চেষ্টা করেন, ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই চিত্র।
শুধু এই উপজেলায় নয় চারঘাট, পুঠিয়া, দুর্গাপুর উপজেলার পাশাপাশি নাটোর ও নওগাঁয় একইভাবে তৈরি হচ্ছে খেজুর ও আখের গুড়। শীতের প্রকোপ কম হওয়ায় এবার গাছ থেকে পর্যাপ্ত খেজুরের রস পাচ্ছেন না গাছিরা।
তাই ভেজাল গুড় তৈরি করে বাজারজাত করছেন একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। যা আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। মানভেদে খেজুর গুড় খুচরা বাজারে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা ও আখের গুড় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আমিনুল ইসলাম কটন বলেন, মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর গুড় তৈরিতে ব্যবহৃত এসব উপাদান। ফলে ক্যান্সার ও কিডনিজনিত রোগের পাশাপাশি রয়েছে নানা স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা।
এদিকে ভেজাল গুড় উৎপাদন বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথা জানান উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উম্মে কুলসুম সম্পা। তিনি বলেন, গত দুই বছরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ভেজাল গুড় তৈরির অপরাধে ৩৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি টাকা জরিমানা করেছে।
উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৮ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য প্রায় দেড়শো কোটি টাকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।