অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোক্তা ভালো আইডিয়া পেলেই ব্যবসার মতো প্রতিযোগিতায় নামার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু একটি ভালো আইডিয়াই কি লাভজনক ব্যবসা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট? না, যথেষ্ট নয়। ব্যবসায়িক জগতে দীর্ঘমেয়াদে সফল হতে গেলে নানা চড়াই-উতড়াই পেরোনোর মতো সক্ষমতা প্রয়োজন।
পরিবর্তনকে স্বাগত জানানো
সময়ের সঙ্গে প্রবণতা, ব্যবসায়িক প্রত্যাশা এবং ব্যবসার প্রভাবও পরিবর্তিত হয়। এসব বিষয় মেনে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
যোগাযোগের সমন্বয়
উদ্যোক্তার ব্যবসা ক্রেতাকে আগ্রহী করছে কি না তা যাচাইয়ের জন্য ক্রেতার মনস্তত্বের উপাদান যাচাই করতে হবে। ক্রেতা কী চাচ্ছে, কোন সুবিধা তাকে আকৃষ্ট করছে, কীসের অনুপস্থিতি হতাশ করছে ইত্যাদি অনুসন্ধান করার জন্য ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
বিশেষজ্ঞের সহায়তা নেওয়া
ব্যবসায়িক ধারণা থেকে অর্থ উপার্জন করা যৌক্তিক হবে কি না তা জানতে ব্যবসায়িক মিটআপ, অনলাইন কমিউনিটি বা লিংকডইনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আপনি নতুন হয়ে থাকলে দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্নদের আলোচনা শুনতে হবে। তারপর ধারণার সঙ্গে গ্রাহকদের প্রত্যাশার তুলনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ছাড়া ব্যবসা শুরু করার আগে সে বিষয়ে অন্যান্য ক্ষেত্র খুঁজে বের করতে হবে।
নতুনত্ব খুঁজে বের করা
লাভজনক ব্যবসা করার উপায় হলো প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা কিছু করা। প্রতিযোগিতার বাজারে সম্পূর্ণ নতুন ধারণা নিয়ে আসা খুব কঠিন। তবু একটি নতুন সংস্করণ তৈরি করা যেতে পারে যা আইডিয়াতে নতুন বৈশিষ্ট্য যোগ করে। এতে অন্যদের থেকে শুরুতেই এক ধাপ এগিয়ে থাকা যাবে।
আপনি ভালো ইংরেজি বা গণিত পারেন। ভালো গিটার বাজাতে পারেন বা ভালো গাইতে, রান্না করতে বা আঁকতে পারেন। আবার অনেকে ভালো ডিজিটাল মার্কেটিং পারেন বা ভিডিও এডিটিং পারেন। মানে আপনার এমন কোন দক্ষতা আছে যেটার চাহিদা আছে। তাহলেই আপনি অনলাইন প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করে ব্যবসা করতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে ছোট ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে এমন বুদ্ধিবৃত্তিক ও সৃজনশীল দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করা খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি ফেসবুকে খোঁজ করলেই দেখবেন হাজারো দক্ষ মানুষ তাদের স্কিল বা দক্ষতাকে কোর্স আকারে বিক্রি করছে। এতে করে যেমন ব্যবসা হচ্ছে তেমনি নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে।
যতো দিন যাচ্ছে, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের হাতে হাতে মোবাইল ফোন পৌঁচ্ছে যাচ্ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে স্মার্টফোন ব্যবহারের হার। ফলাফল হিসেবে মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টার এবং মোবাইল যন্ত্রাংশের চাহিদাও বাড়ছে।এই সেক্টরে কাজ বা ব্যবসার কোন অভাব নেই।
কারণ, যতো দিন যাচ্ছে মানুষ আরও মোবাইল ভিত্তিক সেবায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। তাই মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টার এবং মোবাইল যন্ত্রাংশের ব্যবসা ছোট ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে খুবই লাভজনক। আপনি চাইলে নিজেই মোবাইল সার্ভিসিং কোর্স করে ব্যবসার চালাতে পারেন। এতে করে লাভের পরিমান আরও বাড়বে!
সর্বপ্রথম প্রয়োজন বুদ্ধিমত্তা, পণ্যের মান যাচাই এবং যে পন্যটি নিয়ে ব্যবসা করবেন সেটার বাজারে যাচাই। ওই পণ্যটির বাজারে চাহিদা কেমন,ওই পণ্যটি নিয়ে ব্যবসায় নামলেন লাভ এবং ক্ষতি কি পরিমান হতে পারে এ সম্বন্ধে একটি পূর্ণ ধারণা। এরপর প্রয়োজন হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুঁজি, ধৈর্য এবং কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা, আপনি যতৈ পুঁজি খাটান না কেন যদি নিজে পরিশ্রমী না হন, তবে লোকসানে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা থেকে যায়।
ব্যবসার প্রাণ হলো ক্রেতা। ক্রেতাই ব্যবসার মূল আকর্ষণ। তাই ক্রেতার টেস্ট আপনাকে বুঝতেই হবে। তবে যদি ভাবেন, একদিন দেখলেই আপনি ক্রেতা সম্পর্কে ধারণা পাবেন, এটি ভুল। আপনাকে রীতিমত গবেষণায় নেমে পড়তে হবে। এটি আপনাকে সাফল্য আনতে সহায়তা করবে। তাই চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। নতুন ব্যবসায়ীদের জন্য এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার পরিকল্পনা ও কৌশল ঠিক আছে কিনা ব্যবসায় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলুন। মিটিং করুন। এর ভবিষৎ সম্পর্কে আইডিয়া নিন। আপনি যেহেতু এ জগতে নতুন, তাই আপনার চেয়ে তারা অনেক বেশি অভিজ্ঞ। তাছাড়া আপনার কাজে এবং পণ্যের মানে বিশেষত্ব থাকতে হবে। আপনার পণ্য কেন গ্রাহকের পছন্দ হবে, সেই উত্তর আপনার জানা থাকতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।