জুমবাংলা ডেস্ক : বরিশালের মুলাদী উপজেলার চরপত্তনী ভাঙ্গা গ্রামের নয়াভাঙ্গুলী নদী থেকে উদ্ধারকৃত মরদেহের পরিচয় মিলেছে। নিহত ব্যক্তি হচ্ছে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী নুরু বাবুর্চি।
মঙ্গলবার গভীর রাতে মুলাদী থানায় উদ্ধারকৃত মরদেহ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী খাদিজা বেগম।
নুরু বাবুর্চি হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামের হাশেম বাবুর্চির ছেলে। তার তিন ছেলেও দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী।
এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে ৯ জন নামধারী এবং অজ্ঞাত ৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মুলাদী থানার ওসি মাকসুদুর রহমান বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মরদেহ মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
জানা গেছে, নুরু বাবুর্চি নব্বই দশক থেকে একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। তার নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।
সে প্রকাশ্যে কাউরিয়া বাজারে তার দাদাশ্বশুরের কান কেটে উল্লাস করেছে। নুরু বাবুর্চির নির্যাতনের শিকার হয়ে মাউলতলা সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাসকাটা গ্রামের মাওলানা নজরুল ইসলাম তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ভিটেবাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।
এরপর পুলিশ অস্ত্র ও ডাকাতি মামলায় নুরু বাবুর্চিকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করলে ওই মামলায় আদালত তাকে ১৩ বছরের সাজা প্রদান করেন।
২০১৪ সালে সাজা খেটে বের হয়েই আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। পুনরায় মাদক পাচার সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি ও ডাকাতিসহ নানা ধরনের অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। ছয় মাস পূর্বে নুরু বাবুর্চি তার চাচাকে নির্মমভাবে কোপায়।
তিনি এখনো মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ৪ মাস পূর্বে নুরু বাবুর্চি তার বড়ভাই দুলাল বাবুর্চির পা কর্তন ও তার স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম করে। তারা এখন পঙ্গুত্ব জীবনযাপন করছে।
দুই মাস পূর্বে শহীদ বাবুর্চিকে কুপিয়ে জখম করে পায়ের রগ কেটে দেয়। গত ছয় মাসের মধ্যে নুরু বাবুর্চি ৭ জনকে কুপিয়ে জখম করার পরে হিজলা থানা পুলিশ নুরু বাবুর্চির ওপর রেড অ্যালার্ট জারি করে।
এক পর্যায়ে হিজলা থানা পুলিশ উপজেলার দুর্গম এলাকা হিজলা গৌরবদি ইউনিয়নের চরাঞ্চল থেকে নুরু বাবুর্চি ও তার তিন ছেলেকে গ্রেপ্তার করে।
ওই মামলা থেকে জামিন নিয়ে চাচাতো ভাই খোকন বাবুর্চিকে কাউরিয়া বাজার থেকে নুরু বাবুর্চি ও তার তিন ছেলে অস্ত্র দেখিয়ে ধরে নিয়ে গিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে মারধর করে ছেড়ে দেয়।
নুরু বাবুর্চির বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি, মাদকসহ হিজলা থানায় ৬টি মামলা রয়েছে এবং তার ছেলে ইমরান বাবুর্চির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা রয়েছে। তার তিন ছেলে তার সাথে প্রতিটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অংশ নিতো।
প্রসঙ্গত, গত ৮ আগস্ট নুরু বাবুর্চি তার শ্বশুরবাড়ি মুলাদী উপজেলার চরলক্ষীপুর থেকে নিখোঁজ হয়। সে দীর্ঘদিন ধরে ওই বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুলাদী ব্রিজ সংলগ্ন নয়া ভাঙ্গুলি নদীর কিনারায় একটি মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ হাত-পা বাধা পচন ধরে বিকৃত মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে।
![](https://inews.zoombangla.com/wp-content/uploads/2024/03/34-5.jpg)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।