নবজাতককে দাফন করতে গিয়ে লাশ হলেন মেজর সুরাইয়া

জুমবাংলা ডেস্ক : বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে উজিরপুর উপজেলার আটিপাড়া এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স-কাভার্ডভ্যান ও যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষে নিহতদের একজন সেনা কর্মকর্তা মেজর সুরাইয়া আক্তার। মেজর সুরাইয়া আক্তার ওরফে শিউলি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) কর্মরত ছিলেন।

সুরাইয়া আক্তার অ্যাম্বুলেন্সে বহনকারী মৃত সন্তানটির ফুপু ছিলেন। তার ভাই আরিফের ১০ দিন বয়সী কন্যাসন্তান মারা যাওয়ায় তাকে দাফন করতে এবং অপর ভাই তারেক হোসেন কাইউমের ২১ দিন বয়সী কন্যাসন্তানকে দেখতে ছুটি নিয়ে ওই অ্যাম্বুলেন্সে মা-ভাইদের সঙ্গে বাড়ি যাচ্ছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সেনা সদস্যদের উপস্থিতিতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিহত মেজর সুরাইয়া আক্তারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে মরদেহটি ঝালকাঠির বাউকাঠির গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে গার্ড অব অনার প্রদানের পর পরিবারের বাকি মৃত সদস্যদের সঙ্গে জানাজা শেষে তাকেও দাফন করা হয়। একদিনে একই পরিবারের ৫ সদস্যকে দাফনের ঘটনায় শোকাতুর হয়ে ওঠে পুরো বাউকাঠি।

নিহত মেজর সুরাইয়া আক্তার শিউলীর স্বামী আব্দুল কাইউম হোসেন ঢাকার স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির হিসাবরক্ষণ বিভাগে কর্মরত। তাদের সংসারে তিন বছরের শিশু সন্তান রয়েছে।

মেজর সুরাইয়ার স্বামী আব্দুল কাইউম জানান, দুর্ঘটনার সময় আমি ঢাকায় ছিলাম। সন্তান হারানো শোকাতুর আরিফের স্ত্রী তামান্নাও শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। কিন্তু এই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ভাবিকে নিয়ে আমিও বরিশালে চলে আসি। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, এমন একটা দুর্ঘটনায় ওই পরিবারে শুধু দুই ভাইয়ের স্ত্রী আর ২১ দিনের শিশুকন্যা উম্মে ফাতেমা বেঁচে রইলো। আমার তিন বছরের সন্তান হারালো মা, নানি, দুই মামাকে। আমি হারালাম স্ত্রীকে। এই শোক আমরা কীভাবে ভুলবো?

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, গত ২০ আগস্ট উম্মে ফাতেমা জন্মগ্রহণ করে। তাকে দেখতে এবং নবজাতক ভাতিজির দাফন সম্পন্ন করতেই ওই অ্যাম্বুলেন্সে মা-ভাইদের সঙ্গে বাড়ি যাচ্ছিলেন সুরাইয়া।

আব্দুল কাইউম জানান, নিহত আরিফ হোসেন ঢাকায় একটি গার্মেন্টসের কর্মকর্তা ছিলেন। গত ৫ আগস্ট ওই গার্মেন্ট কারখানায় যোগ দেন কাইউম। তাদের সঙ্গে নিহত নজরুল আরিফ হোসেনের শ্যালক।