জুমবাংলা ডেস্ক : নারী থেকে পুরুষ হয়ে ভালোবাসার মানুষটিকে বিয়ে করেছেন। ছিলেন ‘শাহরিয়ার সুলতানা’, হলেন ‘শাহরিয়ার জাইন’। এবার শোনা যাচ্ছে, আধ্যাত্মিক চিকিৎসাও দিচ্ছেন তিনি। বিকাশের মাধ্যমে ফি নিয়ে অনলাইনে দিচ্ছেন ঝাড়ফুঁকসহ বিভিন্ন সমাধান।
শাহরিয়ারের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার লক্ষ্মীকোল বাজার এলাকায়। তার বাবার নাম সাজেদুর রহমান। ৩৫ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
নারী থেকে পুরুষ হওয়ার বিষয়ে শাহরিয়ার জানান, ভারত থেকে আধুনিক চিকিৎসা নিয়ে নারী থেকে পুরুষ হয়েছেন তিনি। যদিও তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে পারেননি।
তিনি বলেন, আমার শরীরের যে অঙ্গটি ছিল তা পরিবর্তন করতে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া হরমোনের চিকিৎসা নিতে ভারতে যাই। সেখানে আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে আমার লিঙ্গ পরিবর্তন করা হয়। আমি এখনো চিকিৎসাধীন।
আধ্যাত্মিক চিকিৎসার ব্যাপারে শাহরিয়ার আরো বলেন, যেভাবে বিভিন্ন সংস্থা চোর-ডাকাতকে খুঁজে বের করে। ঠিক সেভাবেই আমি দূষিত বাড়ি, মানুষের শারীরিক সমস্যা তদন্ত করে সমাধান দেই।
এদিকে শাহরিয়ারের এমন বক্তব্যের বিপরীতে বলেছেন স্থানীয়রা। যদিও পরিবারের কেউ কথা বলতে রাজি হননি। স্থানীয় একাধিক যুবক জানান, আধ্যাত্মিক তদন্তকারী মানে কি যা আসলেই জানার প্রয়োজন। এটা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত তা বোঝা যাচ্ছে না।
বড়াইগ্রামের পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, হরমোনের কারণে শরীরের আংশিক পরিবর্তন হতে পারে। তবে আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জন ভুল তথ্য। আধ্যাত্মিক চিকিৎসার নামে পুরোটাই ভণ্ডামি। এভাবে কোনো মানুষের লিঙ্গ পরিবর্তনের সঙ্গে চিকিৎসা বা আধ্যাত্মিক জ্ঞান পাওয়া সম্ভব না।
নাটোরের এসপি লিটন কুমার সাহা বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এলাকাবাসী জানান, বড়াইগ্রাম থানাধীন লক্ষীকোল বাজারের বাসিন্দা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী উপপরিদর্শক সাজেদুর রহমানের সংসারের ৩৫ বছর আগে জন্ম নেন শাহরিয়ার সুলতানা। তবে শাহরিয়ার সুলতানা কলেজে পড়া অবস্থায় তার শারীরিক কিছু পরিবর্তন দেখা দেয়।
এ পরিস্থিতিতে বিএ পাস করে বাড়িতেই থাকতেন শাহরিয়ার সুলতানা। এরমধ্যে তার শরীরের গঠন অনেকটা পুরুষের মত হয়ে যায়।
শাহরিয়ার বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২ বছর আগে বগুড়া সদর উপজেলার শিববাটি এলাকার মাহবুবা আক্তারের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে আমি তাকে আমার সমস্যাগুলো জানাই। সে আমার পাশে এগিয়ে আসে। চিকিৎসার পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি সারা জীবন পাশে থাকার আশ্বাস দেয় সে। পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করে সে। এক বছর আগে ভারতে নিউ দিল্লির একটি হাসপাতালে স্তন অপারেশন এবং জেন্ডার ডিসফোরিয়া অপারেশন করি। এরপর আস্তে আস্তে সম্পূর্ণ পুরুষে রূপান্তরিত হই। সম্পূর্ণ পুরুষ হওয়ার পর তাদের মধ্যে সম্পর্ক আরো শক্ত হয়। আমরা ২ জনই আমাদের বিয়ের বিষয়ে উভয় পরিবারকে জানাই। ২টি পরিবারের সম্মতিতে গত ৩০ আগস্ট তাদের বিয়ে হয়েছে।
মাহবুবা আক্তার বলেন, শাহরিয়ার জাইনের সততা তাকে মুগ্ধ করছে। পাশাপাশি তাকে অনেক ভালো মানুষ মনে হয়েছে। তাই তাকে বিয়ে করেছেন।
বিয়ের পর তারা সুখেই আছেন বলে জানান তিনি। মাহবুবা আক্তার তাদের জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।