আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলায় প্রবাদ আছে, ‘কুপুত্র যদি বা হয় কুমাতা কখনও নয়’। তবে প্রবাদটিতো বাংলা ভাষায় তৈরি, রুশ ভাষায় নয়। আর তাই এই রুশ মায়ের পক্ষে তা জানাও সম্ভব নয়। ‘নোজ় জব’ অর্থাৎ প্লাস্টিক সার্জারি করে নিখুঁত নাক পেতে চেয়েছিলেন তিনি। আর তার খরচ জোগার করতে তিনি তাঁর নবজাতক সন্তানকে এক দম্পতির কাছে বেচে দিতেও পিছপা হননি বলে অভিযোগ। ৩৩ বছর বয়সী ওই মহিলাকে সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে রুশ পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হলে, কঠোর শাস্তি পেতে হবে তাঁকে। শাস্তি পাবেন, যে দম্পতি তাঁর সন্তানকে ক্রয় করেছেন, তাঁরাও।
এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটেছিল গত ২৫ এপ্রিল। রুশ পুলিশকে উদ্ধৃত করে ‘ডেইলি স্টার’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই দিন রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কাসপিয়স্কের এক হাসপাতালে এক শিশুপুত্রের জন্ম দিয়েছিলেন ওই ৩৩ বছর বয়সী রুশ মহিলা। এর মাত্র পাঁচ দিন পর তিনি খবর পেয়েছিলেন এক স্থানীয় দম্পতি নবজাতক সন্তান দত্তক নিতে আগ্রহী। তিনি শীঘ্রই ওই দম্পতির সঙ্গে দেখা করেছিলেন। পুলিশের দাবি, ২ লক্ষ রুবেল বা, ৩,২০০ মার্কিন ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় ২ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকারও বেশি) বিনিময়ে তাঁর সদ্যজাত পুত্রকে ওই দম্পতির হাতে হস্তান্তর করতে সম্মত হন।
‘ডেইলি স্টার’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, এরপর ওই মহিলা শিশুটিকে হস্তান্তর করেছিলেন। এর বিনিময়ে, ওইদিন তাঁকে ৩৬০ মার্কিন ডলার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, শিশুটির চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। তার নতুন বাবা-মা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার জন্মের শংসাপত্র চেয়েছিল। কয়েক সপ্তাহ পর, ২৬ মে চুক্তির বাকি টাকার বিনিময়ে ওই মহিলা নতুন বাবা-মা-এর হাতে তাঁর সন্তানের জন্মের শংসাপত্র তুলে দিয়েছিলেন।
তবে, পুলিশের কানে এই ঘটনা পৌঁছতে বেশি সময় লাগেনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই পুলিশকে এই ঘটনার বিষয়ে জানিয়েছিল। মে মাসের শেষেই মানব পাচারের সন্দেহে ওই রুশ মাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। সেই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে, অবৈধভাবে ওই নবজাতককে দত্তক নেওয়া দম্পতিকেও। গ্রেফতারির পর, তাঁরা সরাসরি অর্থ প্রদান করে শিশুপুত্রটিকে ক্রয় করার কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, শিশুটির মা ভাল করে শ্বাস নিতে পারেন না। এর জন্য তাঁর নোজ় জব করানোর প্রয়োজন। শুধুমাত্র সেই খরচের জন্য তাদের কাছে ৩,২০০ মার্কিন ডলার চেয়েছিলেন ওই মহিলা। তাঁরা সেটা খুশি হয়ে দিয়েছিলেন, ওই মহিলা তাঁদের বাধ্য করেননি।
দাগেস্তান প্রজাতন্ত্রের জন্য রুশ ফেডারেশনের তদন্ত কমিটি অবশ্য তাদের এই যুক্তি বিশ্বাস করছে না। রুশ ফেডারেশনের ফৌজদারি আইন অনুযায়ী তাঁদের তিন জনের বিরুদ্ধেই ‘অসহায় ব্যক্তির অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ক্রয়-বিক্রয়ের’ অভিযোগ আনা হয়েছে। সন্দেহভাজন আটক করা হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে তিন জনেই কঠোর শাস্তি পেতে পারেন।
সূত্র: tv9bangla
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।