জুমবাংলা ডেস্ক : ‘বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন আইন ২০২১’- এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। খসড়া আইন অনুযায়ী, যারা সাধারণ বাগান করবে বা স্থায়ী যে গাছ লাগাবে, সেগুলোও তারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কাটতে পারবে না।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান মন্ত্রিসভা সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মানুষ যারা সাধারণ বাগান করবে বা স্থায়ী যে গাছ লাগাবে; সেগুলোও তারা তাদের ইচ্ছামতো কাটতে পারবে না। এটা পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এরকম নিয়ম আছে। সৌদি আরবে ইউ ক্যান নট ইমেজিন। আমার বাড়িতে একটি গাছ পড়ে গেছে, এটা আমি সিটি করপোরেশন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কাটতে পারব না। এটা ভারতেও আছে। এটাকে ভালোভাবে ইমপ্লিমেন্ট করতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ আইনের মাধ্যমে সব বনাঞ্চলকে প্রটেকশন দেয়া হয়েছে। সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে যে গাছ রয়েছে, সেগুলোও এর আওতায় আসবে। এখানে বুঝতে হবে স্থায়ী গাছের কথা বলা হয়েছে। লাউ গাছ কাটতে কোনো সমস্যা নাই। তবে এটাকে ইজি করে কর্তৃপক্ষকে অনুমতি দিতে বলা হয়েছে। কারণ একটা মানুষ বিপদে পড়লো, তার গাছ ভেঙে গেল; এটা যদি সাত দিন পড়ে থাকে, সময় লাগে অনুমতি নিতে- সেটা হলে তো মুশকিল। তাই এটাকে একটু সহজ করতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ফরেস্ট ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট অর্ডিন্যান্স ছিল, সেটা ১৯৫৯-এর আওতায় চলতো। সেটাকে হালনাগাদ করে আইন হিসেবে নেয়া হয়েছিল। অনেকগুলো বিষয় আছে, যেমন এটা একটা করপোরেশন হবে। করপোরেশনের একজন চেয়ারম্যান এবং পরিচালক থাকবে। তারা এটাকে প্রশাসনিকভাবে দেখবেন। বোর্ড থাকবে, সেটা নীতিগত বিষয়গুলো তদারকি করবে। এর কাজ হবে করপোরেশনের অধীনে উৎপাদিত কাঠ বা কাঠের আসবাবপত্র আইনের অধীনে আনা।
করপোরেশনের অধীনে রাবার বাগান থেকে রাবার কীভাবে আহরণ করা যায় এবং উন্নয়ন করা যায় তা এর মধ্যে থাকবে। বনজ সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন কৃত্রিম রাবার পণ্য বন্ধে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব শিল্প সৃষ্টির বিষয়টি এখানে থাকবে। সংরক্ষিত বনের পাশাপাশি অন্যান্য বনাঞ্চলকেও এই আইনে সুরক্ষা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, অন্যান্য বনজ শিল্প যেমন আগর, যেটা সিলেটের একটি এলাকাতে হয়; পাশাপাশি সরকারি বন ছাড়াও অন্যান্য যে সব বন আছে সেগুলোকেও সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। যেমন, পদ্মাতে আমরা ওপারে একটি বড় বন করেছি। যদিও এটি বন শিল্পের সংরক্ষিত বন না, তারপরেও এ বনগুলোকেও সংরক্ষণে রাখতে হবে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর উপরে যদি যান দেখবেন দুই পাড়ে বন করেছি। এটা বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভবত গভীর অরণ্য। এতো গভীর বন সুন্দরবনেও নেই বলে আমার ধারণা। ওখানে কিন্তু বিশাল এলাকায় আমাদের ফরেস্ট। এখনে আমরা গোখরো সাপ, অজগর সাপ, বানর, হরিণ আরও অনেক রকম পোকা-মাকড় ছেড়ে দিয়েছি। এটাকেও এর আওতায় আনা হয়েছে, যদিও এটা বন না। কিন্তু তবুও এটাকে নিধন করা যাবে না। এগুলোকে সংরক্ষণ করতে হবে।
তিনি বলেন, এটা ব্যাপক প্রচারণা করতে বলা হয়েছে। কেবিনেট থেকে বলা হয়েছে পরিবেশ মন্ত্রণালয় এই আইনগুলোর কমপালশনগুলো বাস্তবায়নের আগে প্রোমোশন ক্যাম্পেইন করে মানুষের দৃষ্টিতে আনতে হবে।
এসময় কক্সবাজারে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বিসিএস প্রশিক্ষণ একাডেমির জায়গা বরাদ্দের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, বিসিএস প্রশিক্ষণ একাডেমির জন্য কক্সবাজারে যে জায়গা দেয়া হয়েছে সেটা আমি পুরোটা জানি না। এটা জনপ্রশাসন দেখছে। আমি যতটুকু দেখেছি, যে জায়গায় গাছ নেই সেখানে স্থাপনাগুলো হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।