
নির্বাচনের সময় ঘোষণা হলেও এখনো শিডিউল না হওয়ায় দেশের রাজনীতিতে দোলাচল তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার দাবি, নির্বাচন শুধু প্রক্রিয়া; মূল লক্ষ্য হলো দেশকে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে আমরা একটা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আছি। একটা দোলাচল চলছে। নির্বাচনের সময় ঘোষণা হয়েছে। এখনো শিডিউল হয়নি। হবে আশা করছি। নির্বাচন কিন্তু সব শেষ নয়। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটা ডেমোক্র্যাসিতে ফিরে যাওয়া এবং ডেমোক্র্যাটিক কালচার গড়ে তোলা, এটাই সবচেয়ে বড় অভাব।’
গতকাল বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন সামনে এলেও এটি কোনো চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়; বরং দেশকে গণতন্ত্রে ফেরানোই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। একটি টেকসই রাষ্ট্র গড়তে বিচার বিভাগ, গণমাধ্যম, সংসদ এবং প্রশাসনকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, দেশে একদিকে শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের রায় ঘোষণা হচ্ছে, অন্যদিকে ‘মবোক্র্যাসি ভায়োলেন্স’ চলছে। তার প্রশ্ন—‘এটা কীসের আলামত?’ ফখরুলের অভিযোগ, রায়ের গুরুত্ব কমিয়ে দিতে এবং জনদৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতে একটি বিশেষ মহল পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনার জন্ম দিচ্ছে।
তার ভাষায়, ‘কোনো মহল সচেতনতার সঙ্গে, অত্যন্ত ধূর্ততার সঙ্গে, চালাকির সঙ্গে এটা করার চেষ্টা করছে কি না, দেখা উচিত। কোনো মহল বিভক্তি সৃষ্টি করছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। পৃথিবীর কোনো লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এ রকম অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন-হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে গেছে কি না জানি না। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। ২০ হাজারের মতো নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছে। এগুলো ইতিহাসে আনতে হবে, ডকুমেন্টে আনতে হবে।
এসব ঘটনা গবেষণার মাধ্যমে নথিভুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। ‘চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানে বিএনপি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজক বিএনপি ও ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার।
অনুষ্ঠানে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ অভ্যুত্থান নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জিয়া পরিষদ নেতা অধ্যাপক বি এম নাগিব হোসেন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও ‘চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানে বিএনপি’ বইয়ের সম্পাদক বাবুল তালুকদার।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



