
নেপাল আবারও উত্তপ্ত। সেপ্টেম্বরে রক্তাক্ত জেন জি বিক্ষোভের জেরে কেপি শর্মা ওলির সরকার পতনের কয়েক মাস না পেরোতেই নতুন করে সহিংসতা মাথাচাড়া দিয়েছে। ওলির সমর্থকদের সঙ্গে জেন জি বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে এবার অস্থির হয়ে উঠেছে বারা জেলার সিমরা; পরিস্থিতি এতটাই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে ওঠে যে সরকার বাধ্য হয়ে জেলায় কারফিউ জারি করেছে।
নেপালের বারা জেলার সিমরায় বুধবার ফের সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে যখন জেন জি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কেপি শর্মা ওলির সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। গত সেপ্টেম্বরে ‘রক্তাক্ত জেন জি আন্দোলন’-এর জেরে তৎকালীন ওলি সরকারকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। সেই একই আন্দোলনকর্মীরাই এবার আবার মুখোমুখি হয় ওলিপন্থিদের।
পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে গেলে বারা জেলা প্রশাসন কারফিউ জারি করতে বাধ্য হয়। ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকার কথা জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে সভা-সমাবেশও নিষিদ্ধ করা হয়।
সহিংসতার কেন্দ্র হয়ে ওঠে সিমারা বিমানবন্দর এলাকা। কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (ইউএমএল)-এর দুই প্রভাবশালী নেতা—মহেশ বসনেট এবং শঙ্কর পোখারেল—দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে কাঠমান্ডু থেকে সিমারায় পৌঁছালে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে।
তাদের আগমন জানাজানি হতেই ‘জেন জি’ জেলা সমন্বয়ক সম্রাট উপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেন। দুই ইউএমএল নেতা বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গেই ‘খুনিদের সরকার’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে জেন জি কর্মীরা। মুহূর্তেই পরিস্থিতি বিক্ষোভ থেকে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
অভিযুক্ত জেন জি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ইউএমএল নেতা-কর্মীদের চরম মুখোমুখি অবস্থানে ছয়জন জেন জি আন্দোলনকারী গুরুতর আহত হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা ছয় জন ইউএমএল কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে। যদিও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি এই অভিযোগ ফের বিক্ষোভ আন্দোলনে নামেন ‘জেন জি’ বিপ্লবীরা। নতুন করে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এমনকি বিক্ষোভের জেরে সিমারা বিমানবন্দরে বেশ কিছুক্ষণ বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আপাতত সিমারা এবং সংলগ্ন এলাকায় কারফিউ জারি হয়। বার্তা সংস্থা এএফপিকে নেপাল পুলিশের মুখপাত্র আবি নারায়ণ কাফলে বলেন, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। কেউ গুরুতর আহত হয়নি।
এদিকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নেপালে নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে সকল পক্ষকে অবাঞ্ছিত রাজনৈতিক উসকানি থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর আস্থা’ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরো জানিয়েছেন, সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা যাতে নিরাপদ চলাচল করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে এবং নির্বাচনের জন্য একটি সুষ্ঠু ও ভয়মুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে চান তিনি। তিনি বলেছেন, আমরা চাই, এই দেশটি একটি নতুন প্রজন্মের হাতে থাকুক এবং দূরদর্শী ব্যক্তিরা এই দেশ পরিচালনা করুক।
সূত্রঃ নেপাল টাইমস ও কাঠমান্ডু পোস্ট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



