জুমবাংলা ডেস্ক: নড়াইল জেলার কালনায় ৯৫৯ দশমিক .৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মধুমতি নদীতে সেতু নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে।নড়াইল-যশোরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সহজ যোগাযোগের জন্য মধুমতী নদীতে নির্মাণাধীন দৃষ্টিনন্দন এ সেতুটি হবে ছয় লেনের সেতু। পদ্মা সেতুর সঙ্গে চালু করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলছে সংযোগ সড়কসহ এ সেতুর নির্মাণ কাজ। সেতুর পূর্বপাড়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা এবং পশ্চিমপাড়ে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে এ সেতু হচ্ছে। জাপানের টেককেন করপোরেশন ও ওয়াইবিসি এবং বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড যৌথভাবে এ সেতুর ঠিকাদারী কাজে নিয়োজিত।
সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান জানান, এ সেতুর সার্বিক কাজ হয়েছে ৬৫ ভাগ। সংযোগ সড়কের কাজ শেষের পথে। মুল সেতুর দুটি স্প্যান বসানোর কাজ বাকি আছে, এ দুটি বসানো হলে গাড়ি চালানো যাবে। পদ্মা সেতুর সঙ্গে এ সেতুতে গাড়ি চালানোর লক্ষ্যে কাজ চলছে। ছয় লেনের এ সেতু বড় নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা)। যে কারণে সেতুটি হবে দৃষ্টিনন্দন।এ সেতুর নিচ দিয়ে নৌযান চলাচল সমস্যা হবে না, পলি জমবে না এবং নদীর ¯্রােত কম বাধাগ্রস্ত হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছয় লেনের এ সেতুর চারটি মূল লেনে দ্রুতগতির ও দুটি লেনে কম গতির যানবাহন চলাচল করবে। সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার। উভয় পাশে সংযোগ সড়ক হবে ৪ দশমিক ২৭৩ কিলোমিটার, যার প্রস্থ ৩০ দশমিক ৫০ মিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হবে ৯৫৯ দশমিক ৮৫ কোটি টাকা। প্রথমে সেতুর নকশা ছিল চার লেনের, পরে তা করা হয়েছে ছয় লেনের।নদীর পূর্ব পাড়ের সংযোগ সড়কের কার্পেটিং শুরু হয়েছে ও পশ্চিম পাড়ে পাথর-বালুর ঢালাইয়ের কাজ চলছে। সংযোগ সড়কের ১৩টি কালভার্টের মধ্যে ১২টির কাজ শেষ হয়েছে। আটটি আন্ডারপাসের কাজ শেষ হয়েছে। কাশিয়ানী পাশে ডিজিটাল টোল প্লাজা নির্মাণের কাজ চলছে। সেতুর মাঝখানে বসানো হয়েছে ১৫০ মিটার দীর্ঘ স্টিলের স্প্যান। মোট ১৩টি স্প্যানের মধ্যে পিসি গার্ডারের দুটি স্প্যানের কাজ বাকি আছে।২০১৮ সালের ২৪ জুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেতু কর্তৃপক্ষের কার্যাদেশ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ওই সালের ৫ সেপ্টেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হয় বলে সেতু প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান ।
সওজ ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, এ সেতু চালু হলে নড়াইল, যশোর, বেনাপোল স্থলবন্দর, সাতক্ষীরা ও খুলনা থেকে ঢাকায় যাতায়াতকারী পরিবহন মাগুরা-ফরিদপুর হয়ে যাতায়াতের পরিবর্তে কালনা হয়ে যাতায়াত করতে পারবে। এতে নড়াইল-ঢাকা, যশোর-ঢাকা ও বেনাপোল-ঢাকার দূরত্ব কমপক্ষে একশ’ কিলোমিটার করে কমবে। একইভাবে ঢাকার সঙ্গে শিল্প ও বাণিজ্যিক শহর নওয়াপাড়া ও মোংলা বন্দরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্য জেলার দূরত্বও কমে যাবে।এ সেতু চালু হলে উভয় পারের অন্তত ১০টি জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের যাতায়াত দুর্ভোগ লাঘব হবে। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।