জুমবাংলা ডেস্ক: স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর এক মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ সোমবার। এই অল্প সময়ের মধ্য পাল্টে গেছে পুরো এলাকার চিত্র। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার ছিল আগে শিমুলিয়া ঘাট। আর এখন হয়েছে সেতুর মাওয়া প্রান্তের পদ্মা উত্তর থানা পয়েন্ট। এই এলাকা ঘিরে এখন জমজমাট অবস্থা।
ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে যান চলাচল বেড়ে গেছে। সড়কে এখন রাতদিন ব্যস্ততা। এদিকে সেতু চালুর পর এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতু থেকে টোল আদায় হয়েছে ৮০ কোটি ৩৯ লাখ ৩ হাজার ৪৭০ টাকা। প্রতিদিন গড়ে আদায় হচ্ছে ২ কোটি ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা। এ সময় মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত হয়ে পার হয়েছে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৪৬২টি যানবাহন। সেতু সূত্র থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, সেতু চালু হওয়ার পর দিন অর্থাৎ ২৭ জুন টোল আদায় হয় ২ কোটি ১৯ লাখ ২৬ হাজার ৯৫০ টাকা। তবে ৮ জুলাই সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ১৯ লাখ ৩৯ হাজার ৬৫০ টাকা। এদিকে ঐ দিন গাড়ি পারাপার হয়েছে ৩১ হাজার ৭২৩টি। সব থেকে কম টোল আদায় হয়েছে ঈদের দিন ১০ জুলাই। মোট ১ কোটি ৪৬ লাখ ১০ হাজার ৮৫০ টাকা। ঐ দিন গাড়ি পারাপার হয়েছে মোট ১১ হাজার ৯৫৪টি। এভাবেই টোল আদায় করা হয় বলে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন মাওয়া টোল প্লাজায় দায়িত্বে থাকা পদ্মা সেতুর সাইট অফিস নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মাহমুদুর রহমান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঈদের সময় চাপ ছিল, তবে সে চাপ আমরা সফলভাবে সামলাতে পেরেছি। এখন যানবাহন পারাপার স্বাভাবিক সময়ের মতো রয়েছে। কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন টোল আদায়ে আরও আধুনিক সিস্টেম ইন্সটলেশন করবে ডিসেম্বরের মধ্যে। তখন সক্ষমতা আরও বাড়বে ও দ্রুত টোল আদায় হবে। এখন ঘণ্টায় এক হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ গাড়ির টোল আদায় করা যাচ্ছে, তখন আরও বেশি হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন মাওয়া প্রান্তে ক্যাশ ট্রানজেকশনে টোল আদায় হচ্ছে, পাশাপাশি একটি হাইব্রিড লেনে ক্যাশ ও ইলেকট্রনিক ট্রানজেকশনের লেন রয়েছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে টোল প্লাজায় একটি ইটিসি লেনও থাকবে। এছাড়া ইমারজেন্সি লেন থাকবে।
এদিকে এখনো এ সেতুকে ঘিরে মানুষের আগ্রহের কোনো কমতি নেই। এ কারণে আগ্রহী দর্শনার্থীদের জন্য ছুটির দিনে বিশেষ ট্যুরের ব্যবস্থা করেছে পর্যটন করপোরেশন। গত ২২ জুলাই শুক্রবার ৯৯৯ টাকায় পদ্মা সেতু দেখার বিশেষ এ ট্যুরের উদ্বোধন করা হয়।
পর্যটন করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, প্রথম ট্যুরেই মিলেছে ৬০ জন দর্শনার্থী। আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে এসব দর্শনার্থীকে দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত টুরিস্ট কোস্টারে করে রাজধানীর আগারগাঁও থেকে পদ্মা সেতু দেখাতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথম ট্যুরে দুটি কোস্টার ছাড়াও একটি মাইক্রোবাসে করে কিছু দর্শনার্থী নেওয়া হয় বলে জানান করপোরেশনের উপব্যবস্থাপক (বিপণন ও ভ্রমণ) শেখ মেহদি হাসান। তিনি আরো জানান, গত ২৩ জুলাই থেকে আগামী ২৯ জুলাই পর্যন্ত পদ্মা সেতু দেখতে আগাম বুক হয়ে গেছে।
সেতু কতৃর্পক্ষের সহকারী প্রকৌশলী মো. জিয়াদউল হাসান বলেন, এখনো আমাদের মোট কত টাকা আদায় হয়েছে তার হিসেবে আগামীকালের মধ্যে শেষ হবে। তবে কত টাকা আদায় হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৮০ কোটি টাকার টাকার অধিক আদায় হতে পারে। টোল আদায়ের ধীরগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধীরগতি দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে আসছে। সামনে দ্রুত সময়ের মধ্যে যানবাহন চলাচল করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তখন পদ্মা সেতুর দুই পারে যানজট আর হবে না বলে তিনি জানান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।