জুমবাংলা ডেস্ক: রাজশাহীর পদ্মার চরে বাদাম চাষ করে ভাগ্য খুলছে কৃষকের। চরাঞ্চলের চাষিরা কঠোর পরিশ্রম করে বালুচরে বাদামে ভালো ফলনের আশায় স্বপ্ন বুনছেন। কম খরচের ফসলের মধ্যে বাদাম অন্যতম। পদ্মার চর এখন আর বালুকাময় নয়, পরিণত হয়েছে শস্যভূমিতে। আবাদ হচ্ছে বিভিন্ন রকমের দানাজাতীয় শস্য। পদ্মার চরজুড়ে এ বছর ২৬০ হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হয়েছে। বার্তা ২৪ এর প্রতিবেদক মোঃ আব্দুল হাকিম-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত।
বাঘা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার সাত ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা রয়েছে। এর মধ্যে পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের শুধু বালুচরে বাদাম চাষ হচ্ছে। এ বছর ২৬০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও এর চেয়ে বেশি জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ২.১৭ টন।
সরেজমিন পদ্মার চরের গোকুলপুর, পলাশী ফতেপুর, করারি নওশারা, কালীদাসখালী, চকরাজাপুর, দাদপুর ও টিকটিকিপাড়া এলাকায় অসংখ্য কৃষক বাদামের চাষ করেছেন। অনেকেই জমি বর্গা নিয়ে বাদাম চাষ করেছেন।
চাষিরা বলছেন, ফসল ঘরে ওঠা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বহুগুণে ছাড়িয়ে যাবে। অন্য ফসলের চেয়ে বাদাম চাষে খরচ কম। এর ফলে বাদাম চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মূলত পরিত্যক্ত জমিতে বাদাম চাষ করা হয়। তবে ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় কৃষকেরা অন্য জমিতেও এর চাষ শুরু করেছেন। এ ছাড়া বাদামের গাছ জমিতে পচে জমির উর্বরা শক্তি বাড়ে। এতে অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ভালো হয়। গত বছরের তুলনায় এবার পদ্মার চরে বাদাম চাষ বেশি হয়েছে। গত বছর বাজারে বাদামের দাম ভাল পাওয়ায় এবার অধিকাংশ কৃষক বাদাম চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর চরের বাদাম চাষি গোলাম মোস্তফা, মজিবুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, কালিদাস খালি গ্রামের হাফিজুল ইসলাম, জালাল উদ্দিন, জহুরুল মালিথা, আকছেন শিকদারসহ অনেকেই এ বছর বাদাম চাষ করেছেন।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফজলুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে ছয় বিঘা জমিতে বাদামের চাষ করেছি। উপযুক্ত পরিচর্যা করায় বাদাম খেতে পোকার আক্রমণ কম হয়েছে। এতে পুরোদমে সহযোগিতা পেয়েছেন উপজেলা কৃষি বিভাগের। অন্যান্য বছরের চেয়ে ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
চকরাজাপুর চরের বাদাম চাষি গোলাম মোস্তফা বলেন, পদ্মা নদীরজুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় বালুচর। এসব বালুচরে চাষ হচ্ছে চিনা বাদাম। এখানকার উৎপাদিত বাদাম দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। সাদা বালুর জমিনে সবুজে সবুজে ছেয়ে গেছে লতানো বাদামের গাছে।
আকছেন শিকদার বলেন, অধিক লাভের আশায় প্রায় এক একর জমিতে বাদামের চাষ করেছি। তবে এবার বাদামের বীজ চড়া দামে কিনতে হয়েছে। প্রতিবছরের মতো এবারও বাদামের অধিক ফলনে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারব। অনেক টাকা খরচে বাদামের বীজ কিনে জমিতে বপন করেছি। যদি সরকার আমাদের বীজ ও সার দিয়ে সাহায্য করে তাহলে আরও বেশি লাভবান হতাম।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জানান, বাদাম পরিচর্যায় খরচ ও সময় দুটোই কম লাগে। গত বছর বাদামের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় কৃষকরা এবার আগাম বাদাম চাষ করেছেন। একই সঙ্গে ফলন ভালো হওয়ায় চিনা জাতের বাদামের পাশাপাশি অনেকে ত্রিদানা জাতের বাদামের আবাদও করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষে বাদামের বীজ বপন, পরিচর্যা ও কীটনাশক ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।