আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পরমাণু কর্মসূচির উন্নয়নে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল ইরান। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ আরও গতিশীল করতে উন্নত ও দ্রুতগতির অত্যাধুনিক সেন্ট্রিফিউজের ব্যবহার শুরু করেছে দেশটি।
এই মুহূর্তে এ ধরনের ৪০টি সেন্ট্রিফিউজ চালু রয়েছে বলে শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা ‘অ্যাটমিক এনার্জি অর্গানাইজেশন’র মুখপাত্র বেহরুজ কামালবান্দি।
সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সাধারণত পরমাণু চুল্লিতে (রিঅ্যাক্টর ফুয়েল) জ্বালানি হিসেবে কাজে লাগে। অধিক সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পরমাণু বোমা বানাতেও ব্যবহার হয়।
২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির প্রতিশ্রুতি থেকে আংশিক সরে আসার অংশ হিসেবে তৃতীয়বারের মতো এ পদক্ষেপ নিল তেহরান। তবে পরমাণু কেন্দ্র তদারকিতে জাতিসংঘ পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার আগের মতোই থাকবে বলে জানিয়েছে দেশটি।
চার বছর আগে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে গত বছর সরে যাওয়া ওয়াশিংটন ইরানের ওপর আগের সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেছে। এর জবাবে চলতি বছরের জুলাইয়ে ইরান চুক্তিতে দেয়া দুটি প্রতিশ্রুতি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ট্রাম্প ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি নিয়েছেন।
এ উত্তেজনা যুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করলেও যুক্তরাষ্ট্র তার পথ থেকে ফিরে আসেনি। ইরানও ক্রমেই শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতারিত হয়েছে বলে মনে করছে।
একই সঙ্গে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছেন বলে জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। বিশেষ করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে তেহরানের তেল রফতানি প্রায় ৮০ শতাংশ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে ইরান।
ওয়াশিংটন চুক্তি থেকে সরে গেলেও স্বাক্ষরকারী অন্য ৫টি দেশ- রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি চুক্তিটি বাঁচাতে নানান বিকল্প পদক্ষেপের কথা ভাবছে। বিকল্প উপায় খুঁজতে দেশগুলোকে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সময় সময় বেঁধে দিলেও তেমন কার্যকর কোনো উপায় বের করতে পারেনি তারা। ইরানের পরমাণু সংস্থা বলেছে, চুক্তি বাঁচাতে ইউরোপ যদি কিছু করতে চায়, সেটা দ্রুত করতে হবে।
এর আগে পহেলা জুলাই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ৩০০ কেজির নির্দিষ্ট সীমা ছাড়ানোর কথা জানায় তেহরান। এক সপ্তাহ পরই কর্মকর্তারা জানান, ইউরেনিয়াম মজুদের নির্দিষ্ট মাত্রা ৩.৬৭ ভাগ ছাড়িয়ে গেছে। তৃতীয় ধাপের মতো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ গতিশীল করতে সেন্ট্রিফিউজ উন্নত করার ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
বুধবার টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘শুক্রবার থেকে আমরা বিভিন্ন সেন্ট্রিফিউজের গবেষণা ও উন্নয়নের কাজ করব। এদিন থেকে গবেষণা ও উন্নয়ন কাজের ওপরে সব বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হবে।’
তেহরান বলছে, তারা পরমাণু চুল্লির জ্বালানির জন্য কেবল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সন্দেহ, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাজ করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।