জুমবাংলা ডেস্ক : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের (স্নাতক) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়েছে শনিবার। ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের জন্য বিনা মূল্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে খুলনা নগরীর একটি আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হল।
শুক্রবার থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে বিভিন্ন জেলা থেকে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা শুরু হয়। নতুন জায়গায় নতুন পরিবেশে অনেকে আবাসন ও থাকা-খাওয়ার সমস্যায় পড়ে। আবার অনেকে টাকা পয়সা হারিয়ে ফেলেন। হোটেলগুলোতে চড়া দামে খাবার কিনতে হয়।
এসব সমস্যার সমাধান করল খুলনা নগরীর বিভিন্ন হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও তাবলিগ জামায়াতের সাথিরা।
খুলনা নগরীর তিন তারকা হোটেল টাইগার গার্ডেন ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃপক্ষ টানা পাঁচ বছর ধরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ফ্রি থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে আসছে।
এর ধারাবাহিকতায় এবারও ৩৭৫ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের বিনা মূল্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে তারা।
হোটেল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের থাকা ও পড়াশোনার সুবিধার জন্য তিনটি কনফারেন্স ও সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্কোয়েট হল ছেড়ে দেয়। দুটিতে ছেলে ও একটিতে মেয়েদের থাকার ব্যবস্থা ছিল।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে তাদের এ কার্যক্রম। মূলত শিক্ষার্থীরা থাকা-খাওয়া নিয়ে ভাবনাচিন্তায় পড়ে যান। শিক্ষার্থীরা যাতে সুস্থ ও সুন্দরভাবে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারে এ জন্য এমন সুবিধা দিয়ে থাকেন তারা।
১৮ অক্টোবর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েটের) ভর্তি পরীক্ষায়ও ৭৬৫ শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে এমন সুবিধা দিয়েছিল হোটেলটি।
এ ছাড়া খুবির প্রধান ফটকের বিপরীতে অবস্থিত দারুচিনি রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ক্যাফে ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে অসচ্ছল, দরিদ্র, সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের জন্য প্রথমবারের মতো বিনা মূল্যে খাবারের ব্যবস্থা করেন। রেস্টুরেন্টটির এ সেবা শনিবার সকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত শেষ হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপচে পড়া ভিড় রেস্টুরেন্টটিতে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা এমন সুবিধা পেয়ে উচ্ছ্বসিত।
রেস্টুরেন্টটির মালিক মাহমুদুল ইসলাম মিঠুন বলেন, অপরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে অনেকে টাকা-পয়সা হারিয়ে ফেলেন, আবার অর্থ সংকটের কারণে চড়াদামে খাবার কিনতে পারেন না। এ জন্য শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের যাতে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয় সে জন্য প্রথমবারের মতো আমরা বিনা মূল্যে খাবার সরবরাহের উদ্যোগ নিই। প্রতি বছর আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
অপর দিকে খুবির খান জাহান আলী আবাসিক হলে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের জন্য হল প্রশাসন হলের অভ্যন্তরে ৫৫ শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করেন। যেসব শিক্ষার্থীদের খুলনার কোথাও আবাসন ব্যবস্থা হয়নি তাদেরই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
খান জাহান আলী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সমীর কুমার সাধু বলেন, গত বছরের ন্যায় এবারও আমরা শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা করেছি। ভবিষ্যতে আমাদের এ কার্যক্রম আরও বড় পরিসরে করার চেষ্টা করব।
এ ছাড়া তাবলিগ জামায়াতের সাথিরা যেসব কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে তার আশপাশের নগরীর মসজিদগুলোতে প্রায় আট শতাধিক শিক্ষার্থীর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয় ও আইসিটি সেলের তথ্যমতে, এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ইউনিটের অধীন আটটি স্কুলের অন্তর্ভুক্ত ২৯ ডিসিপ্লিনে ১২১৭ আসনের (মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও আদিবাসী কোটাসহ) বিপরীতে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার ৬ শ ৩৬।
কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া সফলভাবেই চারটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।