জুমবাংলা ডেস্ক: হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার ভুলকোট গ্রাম। এ গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো. সানু মিয়া। তিনি ১২ শতক জমিতে পলিশেডে ফগার ইরিগেশন ব্যবহার করে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একই ক্ষেতে বছর জুড়ে ফুল ও সবজিচাষ করে সাড়া ফেলেছেন। নিরাপদ বিষমুক্ত ও রপ্তানিমুখী সবজি ও ফুল উৎপাদন করে তিনি বেশ সফল হয়েছেন।
বর্তমানে পলিশেড হাউজ থেকে ফুল তুলে বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। বিভিন্ন স্থানে এই ফুল বিক্রি করা হচ্ছে। ফুলের চাহিদা রয়েছে অনেক। তার দেখাদেখি এ অঞ্চলের আরও অনেক কৃষক পলিশেডে ফুল ও সবজি চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন।
পলিশেড হাউজ এমন একটি পদ্ধতি যেখানে দীর্ঘমেয়াদী ফুল চাষ করা যায়। শীতের ফুল গরমে ও গরমের ফুল শীতে চাষাবাদ করা যায়। পলিশেড হাউজে ফুল চাষ কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ফুলের পাশাপাশি বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদও করা হচ্ছে এ হাউজে। এখন আর জমি ফেলে রাখতে হবে না। এভাবে সারা বছরই চাষাবাদ করা যাবে।
কৃষক মো. সানু মিয়া জানান, উপজেলার দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. শামিমুল হক শামীমের সার্বিক সহযোগিতায় সরকারিভাবে তিনি পলিশেড পেয়েছেন। এখানে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পলিশেড হাউজে চাষ হচ্ছে জারবেরা, গ্লাডিওলাস, তরমুজ, রঙিন বাঁধাকপি, ওলকপি, বারি বেগুন, কাঁচা মরিচ। ফুলগুলো রাজধানী মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। শেডে উৎপাদিত সবজি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে বাকীগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়।
তিনি বলেন, পলিশেড হাউজে চাষাবাদ করে ফসলকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নিরাপদ রাখা যায়। বৃষ্টির মধ্যে উন্নতমানের টমেটো, ক্যাপসিকাম, লেটুস, ফুলকপি, বাঁধাকপি চাষাবাদ করা যায়। এতে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক সময় ফসল চাষাবাদের পর জমি ফাঁকা থাকতো। তখন কোনো কিছু চাষাবাদ করতে পারিনি। কিন্তু পলিশেড আসার পর এখন আর জমি পড়ে থাকে না। এ সময়ে বিভিন্ন ফুল চাষের উদ্যোগ নেই। এ বছর ফুলের বাম্পার ফলন হয়েছে।
উপজেলার দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. শামিমুল হক শামীম জানান, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ভুলকোটে পলিশেড হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। এ হাউজের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিভিন্ন উচ্চমূল্যের ফসল ও ফুলগুলো চাষাবাদ করা। আবার শীতকালিন ফুল ও ফসল গ্রীষ্মকালে সময়ে চাষ করা যায়। পলিশেড হাউজে আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অনেক সময় শৈত্যপ্রবাহ, খরা, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টির কারণে উচ্চমূল্যের ফসলগুলো চাষাবাদ করতে সমস্যা হয়। কিন্তু পলিশেড হাউজে এ সমস্যা থাকবে না। আগাম ফসল এখানে চাষাবাদ করা হচ্ছে।
তিনি জানান, এই পলিশেড হাউজ অনেক উন্নতমানের। অতিবৃষ্টিতেও সবজি ও ফুলের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। রোদে তাপ নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতি গাছের গোড়ায় পানি দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ভুলকোটে পলিশেড হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। এমন হাউজে ফুল ও সবজি চাষ উপজেলায় এই প্রথম। পলিশেড হাউজে দীর্ঘমেয়াদী ফুল চাষ করা যায়। চাষাবাদ করা যায় শীতের ফুল গরমে ও গরমের ফুল শীতে। এটি খুব লাভজনক ব্যবসা। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।