জুমবাংলা ডেস্ক : পুঁজিবাজারে আর্থিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের লেনদেন প্রায় পাঁচ বছর বন্ধ থাকায় পর অবশেষে শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী রোববার (১০ মার্চ) থেকে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন শুরু হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত বুধবার (৬ মার্চ) অনুষ্ঠিত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদ সভায় পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের লেনদেন চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানিটির লেনদেন আগামী ১০ মার্চ থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরির অধীনে ফের শুরু হবে।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জও কোম্পানিটির লেনদেন চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়, কোম্পানির শেয়ার লেনদেন আরও ১৫ দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১০৫ দফায় কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী ১৪ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কোম্পানিটির লেনদেন শিগগির চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএসই ও সিএসই।
নানা সংকটে থাকা পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের কার্যক্রম বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ার পর ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই থেকে শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন বন্ধ করে দেয় ডিএসই।
এর আগে পিপলস লিজিং বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যে কারণে অনেক শেয়ারহোল্ডার পানির দরে কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিতে চান। কিন্তু ক্রেতার অভাবে হতাশ হতে হয়েছে তাদের। নামেমাত্র অর্থে শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব দিলেও ক্রেতা সংকটে শেয়ার বিক্রি করতে পারেননি শেয়ারহোল্ডাররা।
অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনায় চরম সংকটে থাকা পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস কার্যক্রম ২০১৯ সালে বন্ধের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন দেয়।
পিপলস লিজিংয়ে ঋণ বিতরণে অব্যবস্থাপনা, সম্পত্তির ঝুঁকি ও তারল্য সংকটে দুরবস্থায় রয়েছে। তারা আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে পারছিল না। সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে চিঠি দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফজলে কবির।
চিঠিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনের ২২ (৩) এবং ২৯ ধারায় প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নের উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়। সম্মতি দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ওই বছরের ২৬ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দেয়। চিঠি পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ অবসায়ন প্রক্রিয়া শুরু করে।
বাংলাদেশ ব্যাংক কোম্পানিটি অবসায়নের উদ্যোগ নিলে শেয়ারহোল্ডাররা আতঙ্কে পানির দরে শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু দফায় দফায় দাম কামানোর পরও ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এ পরিস্থিতিতে কারসাজির শঙ্কায় কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন বন্ধ করে দেয় ডিএসইর পর্ষদ। প্রাথমিকভাবে ডিএসইর পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যতদিন কোম্পানিটির অবসায়নের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসবে লেনদেন বন্ধ থাকবে। তবে এরপর ১৫ দিন করে শেয়ার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ১৫ দিন করে ডিএসই কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন বন্ধ রাখে।
প্রথম দফায় ২০১৯ সালের ১৩ থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত এ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন বন্ধ রাখা হয়েছিল। এরপর ১৫ দিন পরপর কোম্পানির শেয়ার লেনদেন বন্ধের মেয়াদ বাড়িয়েছে ডিএসই ও সিএসই। এতে কোম্পানিতে আটকে থাকা বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ অনিশ্চয়তায় পড়েছিল। তবে কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন ফের চালু করার সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীদের সেই অনিশ্চয়তা কেটে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।