আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের পেশোয়ারে পুলিশ লাইনস এলাকার ভেতর একটি মসজিদে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৭ জন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরে যখন বোমার বিস্ফোরণ ঘটে তখন সেখানে জোহরের নামাজ চলছিল, খবর দেশটির ইংরেজি দৈনিক ডনের।
বিস্ফোরণে দোতলা মসজিদটির একটি অংশ ধসে পড়েছে। পুলিশ সদরদপ্তরের কাছের ওই মসজিদে যাওয়ার পথে কড়া পাহারার ব্যবস্থা ছিল।
এখনো এই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। তবে এর সঙ্গে পাকিস্তান তালেবানের সম্পর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। গত বছর নভেম্বরে পাকিস্তান তালেবানের যুদ্ধবিরতি শেষ হয়। তারপর থেকে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে।
এ হামলার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘‘যারা পাকিস্তানের সুরক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে সন্ত্রাসীরা দেশ জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে।”
পেশোয়ারে এই হামলার আগে গত মাসে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে একটি পুলিশ স্টেশনে একই ধরণের একটি হামলা হয়। যার প্রেক্ষিতে হওয়া সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে ৩৩ জঙ্গি মারা যায়।
সোমবারের হামলাটি আত্মঘাতী ছিল বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন পেশোয়ারের পুলিশ প্রধান মুহাম্মদ ইজাজ খান। হামলায় আরো ১৭৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকে অবস্থা গুরুতর বলেও জানান তিনি।
তার আগে ইজাজ খান স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে বলেছিলেন, বিস্ফোরণের সময় মসজিদে ৩০০ থেকে ৪০০ মুসল্লি ছিলেন। হতাহতদের অধিকাংশই পুলিশ সদস্য।
পুলিশ লাইনসের ভেতর সবথেকে সুরক্ষিত এলাকায় (রেড জোন) ওই মসজিদের অবস্থান। তার আশেপাশেই পুলিশের সদরদপ্তর, গোয়েন্দা বিভাগ ও সন্ত্রাস দমন বিভাগের কার্যলয়।
পুলিশ কর্মকর্তা ইজাজ খান বলেন, বোমা নিয়ে হামলাকারী কম্পাউন্ডের সবচেয়ে সুরক্ষিত স্থানে পৌঁছে গেছেন।
‘‘সেখানে নিরাপত্তায় গাফিলতি হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট। আমরা বিস্ফোরকের চিহ্ন খুঁজে পেয়েছি।”
এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পেশোয়ারের লেডি রিডিং হাসপাতালের (এলআরসি) মুখপাত্র মোহাম্মদ আসিম জানিয়েছেন, আহত অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর প্রায় ১টা ৪০ মিনিটের দিকে ওই মসজিদে যখন বোমা বিস্ফোরণ ঘটে, সেসময় সেখানে জোহরের নামাজ চলছিল। হতাহতদের অনেকেই পুলিশ কর্মকর্তা, তারা মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন।
বিস্ফোরণে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বোমা নিষ্ক্রীয়করণ দলের সদস্যরাও সেখানে ছুটে যান।
কমিশনার মেহসুদ বলেন, “শহরের সব হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।”
এক প্রত্যক্ষদর্শী পাকিস্তানের সংবাদ চ্যানেল জিও টিভিকে বলেছেন, “নামাজ চলাকালে বিস্ফোরণটি ঘটে, এতে দোতলা মসজিদটি ভেঙে পড়েছে।”
বিস্ফোরণের সময় তিনি মসজিদের ঠিক সামনে ছিলেন বলে জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম পিটিভির দেখানো ফুটেজে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ছোটাছুটি করে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে আহতদের কাঁধে করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
ঘটনাস্থল থেকে ডনের সংবাদাতা জানিয়েছেন, মসজিদ ভবনের এটি অংশ ধসে পড়েছে এবং সামনের সারিতে যারা নামাজ পড়ছিলেন তারা ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ ঘটনাস্থলের দিকে যাওয়া সড়কগুলো বন্ধ করে দেয়।
এর আগে গত বছর পেশোয়ারের কোচা রিসালদার এলাকার একটি শিয়া মসজিদে আত্মঘাতী হামলায় ৬৩ জন নিহত হয়েছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।