আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিয়েতে হিন্দুরীতি মেনে সাত পাক ঘোরা হয়ে গেছে। বিয়েবাড়িতে সবাই আনন্দ করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এর মধ্যে বর-কনের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে পাত্র ও পাত্রীপক্ষের লোকদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়।
পাত্রপক্ষের মারধরে পাত্রীর মামা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অবশেষে বিয়ে ভেঙে দিলেন পাত্রী। নতুন বউ ছাড়াই ঘরে ফিরে গেছেন পাত্র। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ধূপগুড়ি বারোঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয়রা বলছেন, মধ্য বড়াগাড়ি এলাকার তরুণীর সঙ্গে ফুলবাড়ি এলাকার এক যুবকের সম্বন্ধ করে বিয়ে ঠিক হয়েছিল। সাত মাস ধরে দুই পক্ষের কথাবার্তা এগিয়েছিল। সোমবার ছিল তাদের বিয়ে। ওই দিন রাতে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানও মিটে যায়। কিন্তু বাসি বিয়ের নিয়ম নিয়ে পাত্র এবং পাত্রীপক্ষের মধ্যে শুরু হয় ঝামেলা।
পাত্রীপক্ষের অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় পাত্রপক্ষের লোকজন এসে তাদের মারধর করেছে। গুরুতর জখম হয়েছে পাত্রীর মামা। এখানেই শেষ নয়।
আরো অভিযোগ, এর পর পাত্রীকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে পাত্রপক্ষ। দুই পক্ষের তুমুল লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বরকেই অস্বীকার করে বসলেন কনে। শেষে একাই ঘরে ফেরেন পাত্র।
পাত্রীপক্ষ অভিযোগ করেছে, পাত্রপক্ষের লোকজন তাদের ওপর চড়াও হয়েছে। দুই পক্ষের ঝামেলার মধ্যে পাত্র নাকি পাত্রীকে কাঁধে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। পাত্রী বাধা দিলে তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
পরিস্থিতি এমন হয় যে দাওয়াতি লোকের বাইরেও অনেকে এসে জমায়েত হন। এরপর বিয়েতে বেঁকে বসেন পাত্রী। সাফ জানিয়ে দেন, এই পরিবারে তিনি বিয়ে করবেন না। মেয়ের কথায় সায় দেন তাঁর বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজনও।
পাত্রী জানান, তাঁরা মদ খেয়ে বিয়ে করতে এসে আমার আত্মীয়দের মারধর করেছেন। বিয়ের দিনই যাঁরা এমন ঘটনা ঘটাতে পারেন, তাঁরা বিয়ের পর কী করবেন!
মেয়ের বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় আফসোস নেই বাবা-মায়েরও। তাঁদের কথায়, মেয়ে বিয়ে না করে ভালোই করেছে।
অন্যদিকে পাত্র জানান, কথা ছিল দুই রাতে দুই বিয়ে হবে। কিন্তু তারা একই রাতে বাসি বিয়ে দিয়ে দিচ্ছিল। তখন বাধা দেওয়ায় পেছন থেকে তাদের কিছু লোক ঝাঁপিয়ে পড়ে।
তাঁর দাবি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কনেকে ঘাড়ে করে তুলে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে তুলতে চেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এভাবে নিয়ে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু পাত্রীপক্ষ সেটা ‘অন্যভাবে’ নিয়েছে। মদ খেয়ে বিয়ে করতে যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
এ ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ঘটনাস্থলে যায় ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। স্থানীয়রা পাত্রসহ চারজনকে আটকে রেখে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। এরপর পঞ্চায়েত প্রধানের উপস্থিতিতে সালিসি সভা বসে। শেষে এলাকার লোকজন পাত্রকে ছেড়ে দেন।
মেয়ের বিয়েতে এমন ঘটনা ঘটায় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি পাত্রীর বাবা। তিনি বলেন, ধার করে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেছিলাম। সব মাটি হয়ে গেল।
সূত্র : আনন্দবাজার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।