পানি থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূর করার কার্যকরী পদ্ধতি

পানি থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক

প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র টুকরোকে বলে মাইক্রোপ্লাস্টিক। ৫ মিলিমিটার বা তারচেয়ে ছোট প্লাস্টিকের কণা হলো মাইক্রোপ্লাস্টিক। আর ন্যানোপ্লাস্টিক আরও ছোট। ১ থেকে ১০০ ন্যানোমিটার আকারের প্লাস্টিকের কণাকে বলে ন্যানোপ্লাস্টিক। এগুলো খাবার ও পানির সঙ্গে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। মাইক্রো বা ন্যানোপ্লাস্টিক মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। ক্ষতি করতে পারে হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের। সম্প্রতি প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, এক লিটার বোতলজাত পানিতে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা থাকে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ ন্যানোপ্লাস্টিক।

পানি থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক

তবে পানি থেকে এই ন্যানোপ্লাস্টিক ও মাইক্রোপ্লাস্টিক দূর করার একটা সহজ পদ্ধতির কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। চীনের গুয়াংজু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও জিনান বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক পানি নিয়ে গবেষণা করে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা দূর করার পদ্ধতি জানিয়েছেন।

পদ্ধতিটা অতি সহজ। শুধু পানি ফুটিয়ে পান করলেই পানি থেকে ন্যানোপ্লাস্টিক কমানো সম্ভব অনেকাংশে। বিজ্ঞানীদের মতে, পানি ফুটিয়ে পান করলে কিছু ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ ন্যানোপ্লাস্টিক দূর হতে পারে। আসলে কী পরিমাণ ন্যানোপ্লাস্টিক দূর হবে, তা অনেকাংশে নির্ভর করে পানির ধরনের ওপর। মানে পানি কোথা থেকে নিচ্ছেন, তার ওপর। সাধারণ ট্যাপের পানি আর বুড়িগঙ্গা নদীর পানি নিশ্চয়ই এক হবে না।

চীনের বিজ্ঞানীদের এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি লেটারস জার্নালে। চীনের জিনান বিশ্ববিদ্যালয়ের এডি জেং ও তাঁর সহকর্মীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, সাধারণ ট্যাপের পানি ৫ মিনিট ফোটালে ৮০ শতাংশ ন্যানোপ্লাস্টিক দূর হয়। এড জেং এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ ট্যাপের পানি ব্যবহার করেন। তাঁরা অনেক সময় মাইক্রোপ্লাস্টিকসহ পানি পান করেন। কিন্তু একটু সচেতন হলে এসবের হাত থেকে সহজে বাঁচা যায়।’

বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে সাধারণত পানি ফুটিয়েই খান অনেকে। তবে এটা কিন্তু সব দেশে দেখা যায় না। বিজ্ঞানীরা এরকম একটা ম্যাপ প্রকাশ করেছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে, পানি না ফুটিয়ে বেশির ভাগ মানুষ সরাসরি ট্যাপের পানি পান করেন। তবে মাইক্রোপ্লাস্টিক ঠিক কীভাবে আমাদের শরীরের ক্ষতি করে, তা এখনো বিজ্ঞানীদের অজানা। এ ব্যাপারে আরও গবেষণা করার কথা জানিয়েছেন এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা।