গাছ মাটি ছাড়া বেঁচে থাকতে পারে? গাছের বেঁচে থাকার জন্য মাটি অপরিহার্য। কারণ গাছের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান নাইট্রোজেন ও লবণ মাটি থেকেই আসে। যদিও বায়ুমণ্ডলের ৭৮ শতাংশই নাইট্রোজেন। কিন্তু গাছ সরাসরি এই নাইট্রোজেন গ্রহণ করতে পারে না। বরং মাটিতে থাকা নাইট্রোজেন খনিজ আকারে গ্রহণ করে।
যদি তর্কের খাতিরে কিছু সময়ের জন্য ধরেও নিই, মাটি ছাড়া গাছের বেঁচে থাকা সম্ভব, কিন্তু তাতেও গাছের বৃদ্ধি সম্ভব নয়। তবে কিছু গাছ আছে, যেগুলোর পক্ষে মাটি ছাড়া বেঁচে থাকা ও বৃদ্ধি দুটিই সম্ভব।
অনেকেই ঘরের টেবিলে মানি প্ল্যান্ট রাখেন। একটা পাত্রে পানি রেখে তাতে রাখলে দিব্যি বেঁচে থাকে এই শোভাবর্ধক উদ্ভিদটি। অবশ্য মানি প্ল্যান্ট মাটিতেও বেড় উঠতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো, মানি প্ল্যান্ট কীভাবে মাটি ছাড়া বেঁচে থাকে?
মানি প্ল্যান্টের পাতাগুলো অন্যান্য গাছের তুলনায় তুলনামূলক বেশি আলোকসংবেদী। মৃদু আলোতেও জৈব খাবার বা শর্করা জাতীয় খাবার তৈরি করতে পারে। এমনকী বৈদ্যুতিক বাল্বের আলোতেও এই গাছ নিজেদের খাদ্য তৈরি করতে পারে।
উদ্ভিদের সবুজ পাতায় ক্লোরোফিল থাকে। উদ্ভিদ বাতাস থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, পানি এবং আলোর সাহায্যে নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করে। একে বলে সালোকসংশ্লষণ প্রক্রিয়া। ১৯০৫ সালে বিট্রিশ বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক ব্লাকম্যান সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন। এই প্রক্রিয়াতে মানি প্ল্যান্টও খাবার তৈরি করে। তবে খাবার তৈরি করতে এ গাছটির মাটির প্রয়োজন হয় না।
শর্করা জাতীয় খাবার ছাড়াও গাছের বেঁচে থাকার জন্য খনিজ লবণ ও নাইট্রোজেন দরকার। সেক্ষেত্রে বাতাসে ভেসে আসা কিছু খনিজ লবণ মানি প্ল্যান্ট গ্রহণ করে। কিন্তু এই সামান্য খনিজ লবণে মানি প্ল্যান্টের প্রয়োজন মেটে না।
তাছাড়া মানি প্ল্যান্ট লবণ ছাড়া বাতাসের নাইট্রোজেন গ্রহণ করতে পারে না। তাই পানিতে এর বৃদ্ধি খুবই কম। গোড়া থেকে একটা পাতা ঝরে পড়লেই কেবল আগার দিকে নতুন পাতার জন্ম হয়। গোড়ার দিকের পাতা ধীরে ধীরে সবুজ থেকে হলুদ হয়ে যায়, ফলে পাতা শুকিয়ে গাছ থেকে ঝরে পড়ে। পাতা ঝরে পড়ার আগে পুরোনো পাতার খনিজ লবণ ও নাইট্রোজেন ইত্যাদি পুষ্টিকারক উপাদান পাতা থেকে বেরিয়ে কাণ্ডে চলে আসে। এই খনিজ লবণ থেকে নতুন পাতা পুষ্টির জোগান পায়। এভাবেই মানিপ্ল্যান্ট মাটি ছাড়াও বেঁচে থাকতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।