পাবনায় আম থেকে ৩৫০ কোটি টাকা আয়ের আশা
জুমবাংলা ডেস্ক : সবজি এবং লিচু আবাদে চমকের পাশাপাশি আম চাষেও চমক দেখিয়েছেন পাবনার কৃষক। এবার আমের ফলনও বাম্পার হওয়ায় আম চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। ধারণা করা হচ্ছে এবার পাবনার আম থেকে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা আয় হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর পাবনায় ২ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ করে ৩৪ হাজার ৯৩৮ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। কিন্তু এবারে আমের বাম্পার বা ভালো ফলন হওয়ায় কৃষি বিভাগ এবং চাষিরা আশা করছেন ফলন ৩৫ হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে।
আম চাষিরা বলেন, এবারে আমের দামও গতবারের চেয়ে তারা বেশি আশা করছেন। এতে করে অন্তত ৩৫০ কোটির টাকা এবারের আম থেকে পাওয়া যাবে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত তিন দশক ধরে পাবনায় সবজি এবং লিচু চাষে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়। বিশেষ করে ঈশ্বরদী, সদর ও আটঘরিয়ায় দেশের সবজি আবাদের তিন ভাগের এক ভাগ চাষ হয়ে থাকে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়।
ব্যাপক সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ঈশ্বরদীর ১৭ জন সবজি চাষি জাতীয় পুরস্কারে ভুষিত হন। তাদের মধ্যে দুইজন এআইপির মর্যাদা পান।
লিচু চাষে প্রতি বছর কমপক্ষে পাঁচশ কোটি টাকা আয় হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত দুই দশক ধরে পাবনায় আম চাষেও ঝুঁকছেন চাষিরা। গত এক দশকে তারা দেশি এবং বিদেশি নানা জাতের আম চাষ করছেন।
পাবনা সদর, ঈশ্বরদী, আটঘরিয়া, সুজানগর, চাটমোহরসহ বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ হচ্ছে। এবারে সদরের দাপুনিয়া, হেমায়েতপুর, মধুপুর, মালঞ্চি, ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া, কালিকাপুর, মাধপুর, সাহাপুর, লক্ষীকুণ্ডা, সলিমপুরসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আমের ব্যাপক ফলন হয়েছে।
এ বছর যেসব আম চাষ হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আম্রপালি, লেংড়া, বারি-৪, বারি-১৪, বারি-১১, বারি-৮, গৌরমতি, থাইগ্রিন, গোপালভোগ, চোষা, হাঁড়িভাঙ্গা, হিমসাগর, ফজলি, ব্যানানা ম্যাঙ্গো, ব্রুনাইকিং, কিং অব চাকা পাত, মিয়াচাকি, বৈশাখী, সিন্ধুসহ দেশি-বিদেশি কমপক্ষে ২০ জাতের আম।
কৃষকরা জানান, এবার আমের ফলনও বাম্পার হওয়ায় আম চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। এরপরও তারা গতবারের চেয়ে এবারে বেশি দাম পাবেন।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদকপ্রাপ্ত কৃষক ও এআইপি শাহজাহান আলী ওরফে পেঁপে বাদশা জানান, তিনি এ বছর দুই হেক্টর জমিতে আম চাষ করেছেন। দেশি-বিদেশি কমপক্ষে ২০ জাতের আম রয়েছে তার বাগানে।
তিনি বলেন, গত বছর প্রতি কেজি আম ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে; কিন্তু এবারে তারা আশা করছেন প্রতি কেজি আম গড়ে ৭০ থেকে ১০০ টাকা পাওয়া যাবে। সে হিসেবে এবারে কমপক্ষে ৩৫০ কোটি টাকার আম বিক্রি হবে।
পাবনা সদর উপজেলার মধুপুরের খ্যাতিমান কৃষক মো. মকবুল হোসেন জানান, তার এবার ১২ বিঘা জমিতে আম চাষ হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় তিনি খুশি। তার বাগানে লেংড়া, গোপালভোগ, গৌরমতি, বারি-৪, আম্রপালি, ফজলি, হিমসাগরসহ ২০ থেকে ২২ জাতের আম রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জামাল উদ্দিন বলেন, গতবছরের চেয়ে এবারে আমের ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকরা খুশি এবং এতে গতবারের চেয়ে উৎপাদনও বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।