বর্তমান যুগে পারিবারিক বন্ধন যে আগের চেয়ে কিছুটা হলেও কমেছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। অথচ শক্ত পারিবারিক বন্ধনের জন্য খুব বেশি কিছু করার প্রয়োজন হয় না। দৈনন্দিন ছোট ছোট কাজ ও আচরণ, যেগুলো আমরা সাধারণত সেভাবে খেয়ালও করি না, সেগুলোর মাধ্যমেই পরিবারের সবার সঙ্গে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক রাখা যায়। ছোট ছোট এই কাজগুলোই একটি সুখী পরিবারের মূল ভিত্তি, যা পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা, বিশ্বাস ও সমর্থন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
যে ৫টি ছোট ছোট অভ্যাস পারিবারিক বন্ধনকে শক্তিশালী করতে পারে, সেগুলো হচ্ছে-
প্রতিদিন অন্তত একবেলা সবাই একসঙ্গে খাওয়া
দৈনিক অন্তত একবেলা পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে খান। সেটা হতে পারে সকালের নাশতা কিংবা দুপুর বা রাতের খাবার। সবার সময়সূচির সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে খাওয়ার সময় নির্ধারণ করুন। নিজেদের মধ্যে কথা বলার সময় মোবাইল, ট্যাব বা অন্যান্য গ্যাজেট দূরে রাখুন। এতে করে সবার শারীরিক ও মানসিক উপস্থিতি নিশ্চিত হবে, যা অবাধ আড্ডা এবং মনে রাখার মতো মুহূর্ত তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।
সপ্তাহে একদিন সবাই মিলে কিছু একটা করা
পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে কিছু করার জন্য সপ্তাহের একটি দিন নির্ধারণ করুন। এটা কোনো বোর্ড গেম, একসঙ্গে সিনেমা দেখা, বাইরে ঘুরতে যাওয়াসহ যেকোনো কিছুই হতে পারে। যা-ই করুন না কেন, সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন। সবাই যাতে নিজ নিজ পছন্দের কোনো না কোনো কিছু করতে পারে, সেভাবে পরিকল্পনা করুন। একসঙ্গে কাটানো এসব আনন্দময় মুহূর্ত পারিবারিক বন্ধন শক্তিশালী করবে।
প্রশংসার রীতি চালু করা
পরিবারের সবাই যাতে একে অপরের ভালো কাজ বা গুণের প্রশংসা করে, সেই রীতি চালু করুন। রাতে ঘুমানোর আগে কিংবা খাবার টেবিলে অন্যজনের প্রশংসা করতে পারেন। শুধু ‘ধন্যবাদ’ দিয়ে দায়িত্ব শেষ না করে তার ভালো দিকটি সম্পর্কে বিস্তারিত বলার চেষ্টা করুন। মানসিক সমর্থন বা সহায়তামূলক কাজের জন্য আমরা যদি পরিবারের সদস্যদের নিয়মিত প্রশংসা করি, তাহলে পারিবারিক সম্পর্কের গতিশীলতা বাড়বে এবং একে অপরের কৃতিত্বকে স্বীকৃতির গুরুত্বও অনুধাবন করা যাবে।
নিজেদের জন্য একান্ত সময় বের করা
ব্যক্তিগত সময় এবং পারিবারিক সময়ের মধ্যে একটি স্পষ্ট পার্থক্য স্থাপন করুন। পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে ব্যক্তিগত কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করতে উৎসাহিত করুন। এটা বই পড়া, নিজের কোনো শখ পূরণ করা কিংবা একান্তে নিজে নিজে কিছুটা সময় কাটানোর মতো কিছু হতে পারে। আবার একসঙ্গে পারিবারিক সময়ের ওপরও গুরুত্ব দিন।
পরিবর্তনকে গ্রহণ করা
পরিবারের কোনো সমস্যা তৈরি হলে বা পরিবর্তন এলে সেটি থেকে না পালিয়ে পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে সেই সমস্যার মোকাবিলা করার নীতি চালু করুন। প্রতি সপ্তাহে সমস্যা সমাধানের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করুন। যেকোনো সমস্যা বা চিন্তা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে সবাইকে উৎসাহিত করুন এবং তারপর সমাধান খুঁজে বের করার জন্য একসঙ্গে কাজ করুন। এই অভ্যাসটি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অধ্যবসায় এবং দলগত কাজের মানসিকতা গড়ে তোলে, একইসঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কও আরও গভীর করতে সাহায্য করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।