পাহাড়ী অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে আনারসের চাষ, লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা

পাহাড়ী অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে আনারসের চাষ, লাভবান হচ্ছে কৃষকরা

পাহাড়ে ব্যাপক হারে চাষ হচ্ছে আনারস

জুমবাংলা ডেস্ক : আনারস বাংলাদেশের পাহাড়ী অঞ্চলে চাষাবাদের জন্য বেশি উপযোগী। পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান পাহাড়ী অঞ্চলে আনারস চাষাবাদের জন্য বেশি উপযোগী। এছাড়া চট্টগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা ও নরসিংদী জেলায় প্রচুর পরিমাণে আনারসের চাষ হয়। পুষ্টিমানের দিক দিয়েও আনারসের গুরুত্ব অপরিসীম। আনারসে ভিটামিন এ.বি.ও সি-এর উৎস। বসতবাড়ির আশে পাশে খালি জায়গাতেও আনারস চাষ করে সহজেই পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা যায়।

পাহাড়ী অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে আনারসের চাষ, লাভবান হচ্ছে কৃষকরা
ছবি সংগৃহীত

পারিবারিকভাবে আনারস চাষ করার গ-ি পেরিয়ে কৃষকরা তাদের আয়ের উৎস হিসেবে প্রথমে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, এরপর খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান জেলায় আনারস চাষ করতে কৃষকরা ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছে। পাহাড়ের ঢালে মাটি কুপিয়ে ঠিক এই মৌসুমে আনারস চারা রোপন করে সঠিক নিয়মে বন জঙ্গল তথা আগাছা মুক্ত রেখে এবং সার ওষুধ প্রয়োগ করে আনারস চাষ করে কৃষকরা এখন স্বাবলম্বী। পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আনারস ক্রয় করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে মোটামুটিভাবে লাভবান হচ্ছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি, গুইমারা, রামগড় ও মহালছড়ি উপজেলায় ব্যাপকহারে আনারসের চাষ হচ্ছে। আনারস চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে কৃষি বিজ্ঞান মতে কৃষকরা আনারস চাষ করছেন না এমনকি সার ও ওষুধ প্রয়োগ সঠিক নিয়মে দেয়া হচ্ছে না। যার ফলে কৃষকদের প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক সারের অপচয় হচ্ছে। রমজানের শুরুতে আনারসের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এবারে আনারসের চাহিদা কম রয়েছে বলে আনারস চাষী ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, এভাবে আনারসের দাম কম থাকলে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে, সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারে বলে জানা যায়।

খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি ও গুইমারা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও পাড়া পর্যায়ে পাহাড়ি ও বাঙালি কৃষকগণ ব্যাপকহারে আনারস চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জন করছে বলে জানা গেছে। গুইমারা উপজেলার হাতীমুড়া, মধ্যহাফছড়ি, রেম্রা পাড়া, কালাপানি, বড়পিলাক, পথাছড়া, সিন্দুকছড়ি ও বাইল্যাছড়ি এবং মানিকছড়ি উপজেলার মলঙ্গীপাড়া, লাপাইদং, গাইদং, হরবিল, গচ্ছাবিল, জামতলা, গভামারা, ওসমান পল্লী, উত্তর ডলু পাড়া, তবলা পাড়া, থলি পাড়া, ফকিরনালা, ডেপুয়া পাড়া, মনাছড়ি কইবাং ও এয়াতলং পাড়া প্রভৃতি এলাকায় আনারস চাষের ব্যাপক সমারোহ পরিলক্ষিত হয়।

হাতীমুড়ার আনারস চাষী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা আনারস চাষ করে আসছি। ঝুঁকি আছে বাজার মূল্য সঠিক ভাবে না পেলে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভবনা থাকে। এবার সঠিক বাজার মূল্যে পেলে লাভবান হওয়ার সম্ভবনা আছে, আশা করি আনারস চাষীরা মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হবে।

আরেক আনারস চাষী মো. শাহাদাৎ হোসেন জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় আনারসে ফলন একটু মন্থর। তারপরও আমরা আনারস চাষীরা ভালো ফলন আশা করি। ভালো মূল্যে বিক্রি করতে পারলে ভালো লাভবান হবো।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাহাড়ে আনারস চাষীদের ব্যাপারে আনারস চাষ সম্পর্কে সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান করলে কৃষকরা আনারস চাষ লাভবান হবে বলে অভিজ্ঞ কৃষকরা মতামত প্রকাশ করেছেন।