জুমবাংলা ডেস্ক : বৃহস্পতিবার রাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চের আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া এক যাত্রী বলেন, ‘ঢাকা থেকে এমভি অভিযান ১০ লঞ্চে করে বেতাগীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই আমি মা ও বোন। কেবিন না পেয়ে ডেকেই জায়গা করে নেই অন্য যাত্রীদের সঙ্গে। মধ্য রাতের দিকে ঘুমিয়ে পড়ি সবাই। হঠাৎ শরীর উষ্ণ হয়ে ওঠে, ভেঙে যায় ঘুম। চারদিকে কালো ধোয়া যাত্রীদের ছোটাছুটি, মা ও বোনকে নিয়ে বিবেক হারিয়ে ফেলি। পায়ের জুতো পুড়ে যাচ্ছিল।’
ঠিক এমনটাই বর্ণনা দিচ্ছিলেন পুড়ে যাওয়া অভিযান-১০ লঞ্চের যাত্রী মো. রনি (১৬)।
তিনি আরও বলেন, কোথায় দাঁড়াবো! কি করবো। অসুস্থ মা ও ১৩ বছর বয়সের বোনকে নিয়ে লঞ্চের তিনতলার সামনে চলে যাই। এর মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পরে পুরো লঞ্চে। শুধু চিৎকার আর চিৎকার উপায় না পেয়ে মাকে বলি মা লাফ দেও। মা বলে বাবা এবার আর বাঁচবো না দাবি ছেড়ে দিস, তোর বোন তো সাঁতার জানে না। তুই লাফ দে আমরা নৌকা আসলে উঠবো। যদি বেঁচে থাকি আবার দেখা হবে। কি করবো এদিকে দগ্ধ হতে শুরু করে পুরো শরীর সহ্য করতে পারছিলাম না।
মো. রনি বলেন, হঠাৎ লোকজনের ধাক্কায় মা ও বোনকে তিন তলায় খুঁজে পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে হৃদয়ে পাথর বেধে স্বার্থপরের লঞ্চের তিন তলা থেকে লাফিয়ে পরি মাঝ নদীতে। অনেকক্ষণ ভেসে থেকে এলাকাবাসী উদ্ধারে আসলে তাদের ট্রলারে উঠি। তবে মা ও বোনকে এখনো খুঁজে পাইনি। মনে হয় আমার মা বোন আর নেই এই বলে চিৎকার দিয়ে ওঠে।
রনি বর্তমানে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এছাড়াও লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে বেতাগীতে এ পর্যন্ত কাজিরাবাদ এলাকার বাসিন্দা রিয়াজ হোসেন (২৮) নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৮জন। এরা হলেন- কাউনিয়া এলাকার সিকদার বাড়ির রিনা বেগম (৩৮), লিমা (১৪), মোকামিয়া এলাকার আব্দুল হাকিম (৫৮) তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস (১৩), আরিফুর রহমান (৩৫), কুলসুম (৪), সেলিম (৪৮) ও সোবাহান খলিফা (৪০)।
এছাড়াও আহত যাত্রীরা হলেন- আবদুল হাই নেছারী, হালিমা বেগম, সফিউল্লাহ, কুশল কর্মকার, জাহানারা বেগম, ফরহাদ খলিফা, মুকুল খলিফা, রুবেল, শাহিন, মতিয়ার রহমান, শাবনূর, শাহেব আলী, সালাম, ফেরদৌস ও বুলবুল।
এছাড়াও আরও অনেক যাত্রী দগ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন তাদের নাম ও সংখ্যা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
জানা গেল যে কারণে মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজ করতে চাইতেন না নায়িকারা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।