জুমবাংলা ডেস্ক : পিঁপড়ার বাসার ওপর পড়ে ছিলো মাত্র ৩ দিন বয়সী শিশুটি। পিঁপড়ার কামড় খেয়ে চিৎকার করে কাঁদছিলো সে। অবশেষে তাকে উদ্ধার করে পুলিশি হেফাজতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে একাধিক পরিবার আবেদনপত্র পেশ করেছে।
ফুটফুটে এই নবজাতক কি অপরাধ করেছিলো? কেন তাকে মহাসড়কের পাশে ফেল রাখা হলো? কোন পাষণ্ড এমন কাজ করলো? রংপুরে এমন হাজার প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে!
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকাল ৭টার দিকে রংপুর মহানগরীর হাজ্বীরহাট থানাধীন রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে হাজ্বী ক্যাম্পের বিপরীতে আরমান কোল্ড স্টোরেজের সামনে একটি সাইনবোর্ডের নিচে পিপড়ার বাসার ওপর একটি নবজাতককে ক্রন্দনরত অবস্থায় দেখে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে।
পরে শিশুটিকে হাজিরহাট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নবজাতককে থানায় নেওয়া হলে অনেকে দেখার জন্য থানায় ভিড় জমায়। অনেকে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে নবজাতককে রমেক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হলে তাকে বিকেলে রংপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১-এ পাঠানো হয়। নবজাতকটিকে দত্তক চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তারাগঞ্জ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কুর্শা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মোঃ কামরুজ্জামানসহ বেশ কয়েকজন।
সন্ধ্যায় আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর আলম নবজাতককে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসার জন্য প্রেরণের নির্দেশ দেন। সেইসঙ্গে এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাজিরহাট থানার ওসি, জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি ও সমাজ সেবা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়। আবেদনের শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ আগামী ১০ ডিসেম্বর ধার্য্য করেন।
আদালত চত্বরে কুর্শা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমার ১৭ বছরের বিবাহিত জীবন। আমার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের কোনও সন্তান নেই। বহু চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু সন্তান হয়নি। রাস্তার পাশে পাওয়া নবজাতককে দত্তক চেয়ে আদালতে আবেদন করেছি। প্রয়োজনে আমি আমার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি আছি। আদালত আমার দায়িত্বে নবজাতককে দিলে আমি অন্য আর দশজন পিতার মতোই এই সন্তানকে মানুষ করবো।’
হাজিরহাট থানার ওসি জানান, নবজাতকের বয়স আনুমানিক এক থেকে দুইদিন হবে। তাকে কেন রাস্তার পাশে এভাবে ফেলে রাখা হলো এ বিষয়টি পুলিশ গুরুত্ব সহকারে দেখছে। তদন্ত করা হচ্ছে কেন এই ফুটফুটে শিশুটিকে অমানবিকভাবে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হলো।
তিনি বলেন, ‘আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে চিকিৎসার জন্য রমেক হাসপাতালে পাঠাই। সেখান থেকে শিশুটিকে কোথায় রাখা হবে এই সিদ্ধান্তের জন্য আদালতে পাঠানো হয়। আদালত শিশুটির সু-চিকিৎসার জন্য রমেক হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে একটি জিডি করা হয়েছে।’ সূত্র : ইত্তেফাক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।