জুমবাংলা ডেস্ক : প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, আমি বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় তৈরির প্রক্রিয়া ঘোষণা করেছি এবং সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছি। যা বিচার বিভাগের প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়নে ‘রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ল’ এলামনাই এসোসিয়েশন (রুলা) আয়োজিত এক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বি করেন রুলার আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রুলার সদস্য সচিব কামাল জিয়াউল ইসলাম বাবু।
রুলা আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্ত্যেবে ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘আমি যখন বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণের স্বতন্ত্র সম্মান পেয়েছিলাম, তখন আমার কাঁধে অর্পিত বিশাল দায়িত্ব সম্পর্কে আমি যথার্থভাবে সচেতন ছিলাম। এই ভূমিকা নিছক নেতৃত্বের একটি অবস্থান নয় বরং জনগণের অবস্থা ও তাদের পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের ন্যায্যতা, ন্যায়পরায়ণতা বজায় রাখা এবং সবার জন্য ন্যায়বিচারের সুযোগ নিশ্চিত করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার নিয়োগের মুহূর্ত থেকেই আমি চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার জন্য জরুরি বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়েছি। যা দীর্ঘকাল ধরে আমাদের বিচার বিভাগের সম্ভাবনার পূর্ণ উপলব্ধিকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এই লক্ষ্যে গত ২১ সেপ্টেম্বর, আমি বিচার বিভাগীয় সংস্কারের জন্য একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করেছি। এই উদ্যোগটি আমাদের বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করতে এবং জনগণকে সততা ও দক্ষতার সঙ্গে সেবা দেওয়ার জন্য এর ক্ষমতাকে শক্তিশালী করার জন্য, এটা ছিল আমার দৃষ্টিভঙ্গির একটি ভিত্তি।’
প্রধান বিচারপতি রেফাত আহমেদ বলেন, ‘বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে শক্তিশালী করার জন্য আমার অবিচল অঙ্গীকারের অংশ হিসাবে, আমি ক্ষমতার সত্যিকারের পৃথকীকরণের ভিত্তি স্থাপনের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি। আমি বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় তৈরির প্রক্রিয়া ঘোষণা করেছি এবং সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছি। যা বিচার বিভাগের প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর পাশাপাশি আমি সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং যোগ্যতা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য একটি বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেছি। একই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের বদলির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং ন্যায্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের বদলি এবং বদলির নির্দেশিকা তৈরির প্রস্তাব করেছি। নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পৃথক করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের গ্রহণের জন্য প্রস্তাবনা ইতোমধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আইন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে শক্তিশালী করার জন্য সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী মামলা নিষ্পত্তির পর আমরা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে পুনরুজ্জীবিত ও শক্তিশালী করেছি। এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অভিশংসনের জন্য সংসদের বিধানকে কার্যকরভাবে বাদ দেয়। যাতে বিচার বিভাগ অযাচিত রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত থাকে। এই পদক্ষেপগুলো সম্মিলিতভাবে আমাদের বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা এবং অখণ্ডতা রক্ষার জন্য একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ। যা ন্যায়বিচারের নীতি এবং আইনের শাসনকে সমুন্নত রাখার জন্য আমাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিই প্রতিফলিত করে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।