আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টাকাকড়ি, সোনা-হীরার খনি থেকে শুরু করে পৃথিবীর সব মূল্যবান সম্পদই ধনীদের দখলে। এমনকি পৃথিবীর ৮০০ কোটি মানুষের বেঁচে থাকার সবচেয়ে বড় অবলম্বন ভূ-গর্ভের ‘পানি সম্পদ’ও গিলে খাচ্ছে তারা।
নিজেদের অতি বিলাসিতার সুইমিংপুল, উন্নত সেচ ব্যবস্থাযুক্ত বাগান, গাড়ি পরিষ্কারে ব্যবহৃত পানির ব্যবহার বিশ্বব্যাপী পানির সংকটকে জলবায়ু পরিবর্তন অথবা জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যাগুলোর মতো জরুরি অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি ‘নেচার সাসটেইনেবিলিটি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এমনটিই উঠে এসেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার শহর কেপ টাউনের ওপর গবেষণাটি চালানো হয়। ফলাফলে উঠে আসে, শহরটির ধনীরা দরিদ্রদের তুলনায় ৫০ গুণ বেশি পানি ব্যবহার করেন।
গবেষণার ফলাফলে আরও দেখা যায়, শহরটিতে মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশ ধনী। কিন্তু শহরের মোট পানির ৫১ শতাংশই তাদের দখলে। আর তারা মৌলিক চাহিদার বাইরে বিলাসিতার খোরাক মেটাতে এসব পানি ব্যবহার করে। শহরে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৬২ শতাংশ। কিন্তু তারা মোট পানির ২৭ শতাংশ ব্যবহার করেন।
গবেষণার সহকারী যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ রিডিং-এর অধ্যাপক হান্না ক্লোক বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বড় শহরগুলোতে পানি আরও মূল্যবান সম্পদ হয়ে উঠছে। এই গবেষণায় দেখানো হয়েছে সামাজিক বৈষম্যের ফলে কিভাবে মানুষ তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনের পানি চাহিদা মেটাতে পারছে না।’
গবেষকদের মতে, পানির ঘাটতি সমাধানে ধনী এবং দরিদ্র নাগরিকদের মধ্যে পানি ব্যবহারের যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে তা মূলত উপেক্ষা করা হয়েছে। এর পরিবর্তে জোর দেওয়া হয়েছে পানি সরবরাহ এবং উচ্চ মূল্যবৃদ্ধি প্রচেষ্টার ওপর। পানি সংকট সমাধানে এর পুনর্বণ্টনের ওপর জোর দিতে পরামর্শ দেওয়া হয় এই গবেষণায়। জীবনের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর সমভাবে বণ্টনের দিকে নজর দিতেও জানান তারা।
কেপ টাউনে কয়েক বছর খরার পর ২০১৮ সালে যখন শূন্য পানি সংকট ছিল তখনো দরিদ্ররা মৌলিক চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত পানির অভাবে ভুগছিল। কেপ টাউনই ছাড়াও ২০০০ সাল থেকে মায়ামি, মেলবোর্ন, লন্ডন, বার্সেলোনা, সাও পাওলো, বেইজিং, বেঙ্গালুরু এবং হারারেসহ ৮০টিরও বেশি বড় শহর চরম খরা এবং পানি সংকটে ভুগেছে। নতুন এই গবেষণায় উপসংহারে ২০১৬ সালের একটি প্রতিবেদনের জের ধরে বলা হয়, বিশ্বে এখন অধিকাংশ এলাকাতেই সস্তায় আর অতিরিক্ত পানি ব্যবহারের যুগ নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।