জুমবাংলা ডেস্ক : সদ্য সমাপ্ত পেটানোর অভিযোগ উঠেছে পরাজিত এক প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এসময় ওই নারী সদস্যকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই প্যানেল চেয়ারম্যান বাদী হয়ে গতকাল রোববার সকালে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আহতরা হলেন- কালিয়াকৈর উপজেলার পাবুরিয়াচালা এলাকার মাজেদুল ইসলামের স্ত্রী স্বপ্না আক্তার। তিনি ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য। আহত অন্যজন হলেন একই ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং সদস্য শফিকুল ইসলাম।
এলাকাবাসী, আহতদের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ অক্টোবর গাজীপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে পরাজিত হয়ে সদস্য প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক মাস্টার ও তার সমর্থকরা ভোট কেনার টাকা ফেরত পেতে মরিয়া হয়ে উঠেন। এর ধারাবাহিকতায় ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. শাহ আলম সরকার শনিবার বিকেলে তার বাড়ীতে পরিষদের সকল সাধারণ ও নারী সদস্যদের ডেকে এনে বৈঠক করেন। সে বৈঠকে ওই পরাজিত সদস্য প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক ও তার সমর্থক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বাদল, ওয়াজেদ আলী, লিটন সরকার, জয়নাল সিকদার ও নবীর হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে টাকা নিয়েও জেলা পরিষদের সদস্য প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক মাস্টারের ঘুড়ি মার্কায় কেন ভোট দেওয়া হলো না ওই বিষয় নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনা করা হয়।
এ সময়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডর সৃষ্টি হলে সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বাদলের নেতৃত্বে ওই প্রার্থীর কয়েকজন সর্মথক মিলে প্যানেল চেয়ারম্যান সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য স্বপ্না আক্তার ও ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলামকে মারধর করে। এসময় ওই নারী সদস্যকে শ্লীলতাহানী করে এবং স্বার্ণালংকার ছিনিয়ে নেন। তাদের হাত থেকে বাঁচতে ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম দৌড়িয়ে পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন ওই নারী সদস্যকে উদ্ধার করে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় ওই প্যানেল চেয়ারম্যান স্বপ্না আক্তার বাদি হয়ে রোববার সকালে সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৫ জনকে আসামী করে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আহত ওই প্যানেল চেয়ারম্যান স্বপ্না আক্তার বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তার বাড়িতে আমাদের সকল সদস্যকে ডেকে নেন। আমরা সেখানে উপস্থিত হলে জেলা পরিষদের সদস্য প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাককে কেন ভোট দেওয়া হয়নি এ নিয়ে চাপ প্রয়োগ করেন। এসময় আমরা ভোট দিয়েছি বললেও তার বেশ কয়েকজন সমর্থক তাকেসহ আরেক সদস্যকে মারধর করে। এছাড়া আমার গলা থেকে এক ভড়ি ওজনের স্বর্ণের চেইন, দুই ভড়ি ওজনের স্বণের হাতের বালা ও এক ভড়ি ওজনের কানের দুল ছিনিয়ে নিয়ে আমার কাপড় চোপড় টানা হেচড়া করে।
অভিযুক্ত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বাদল জানান, তারা (মেম্বার) ঘুড়ি মার্কার প্রার্থীর কাছ থেকে টাকাও নিলো আবার ভোটও দিলো না। এটা জানতে চাইলে উল্টো তারা আমাদের সাথে রাগান্বিত হয়ে আমার ওপর মোটরসাইলে উঠিয়ে দিতে চাইলে ওই ছোট-খাটো ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের পরাজিত প্রার্থী আব্দুল রাজ্জাক মাস্টার জানান, চেয়ারম্যানের বাড়িতে বৈঠক বসার খবর পেয়ে আমিও সেখানে যাই। এসময় সবাই আমাকে ভোট দিয়েছে শোনে আমি চলে আসি। পরে সেখানে কি হয়েছে? তা আমার জানা নেই।
ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড. মো. শাহ আলম সরকার জানান, বিভিন্ন প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভোট না দেয়াসহ বিভিন্ন সমালোচনার সৃষ্টি হলে বিষয়গুলো নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। পরে বৈঠক শেষ করে যার যার মতো সবাই বাড়ি ফিরে যায়। পথে কি হয়েছে? বা কাকে কে মেরেছে? সে বিষয়ে তার জানা নেই।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, ওই ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।