২০২১ সালের মার্চে হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে ঘুরতে যাওয়া হয়। সেখানে শীতের সকালে প্রজাপতি দেখার উদ্দেশ্যে বের হই। হঠাৎ সামনে উড়ে এসে বসে এক নতুন ধরনের প্রজাপতি। সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা শুরু করলাম দুজনে। পরে দেখা যায়, এটা নতুন প্রজাতির প্রজাপতি। এর নাম দেওয়া হয় স্লেট আওল (Hasora anura)। এটি হেসপেরিডি (Hesperiidae) পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। ভারতসহ চীন, হংকং ও তাইওয়ানে এটি পাওয়া যায়।
রাজকান্দী সংরক্ষিত বনের পাশাপাশি ছড়া, ঝিরি, প্রাকৃতিক বন ও বনের তরুলতা প্রজাপতির আবাসস্থল হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ফলে এই বন প্রজাপতির সমৃদ্ধ আবাসস্থল হিসেবে টিকে আছে। পাশাপাশি এই বনগুলো সীমাবদ্ধবর্তী ও যাতায়াতে সমস্যার কারণে বিস্তৃতভাবে বনগুলো প্রজাপতি বা জীববৈচিত্র্য অনুসন্ধান সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে যেগুলো ম্যাক্রোইনভার্টিব্রেট জাতীয় প্রাণী, সেগুলো নিয়ে অনুসন্ধান কম হয়েছে এসব এলাকায়।
তবে যেহেতু আন্তঃসীমানা এলাকার বনে প্রজাপতি পাওয়া যাচ্ছে, তাই বোঝা যায় যে আগে এই অঞ্চলে এসব প্রজাতির আরও বিস্তৃতি ছিল। হয়তো মানবসৃষ্ট কারণে আজ সেগুলো হারিয়ে যাওয়ার পথে। ফলে কালে-ভদ্রে এর দেখা মিলছে। আবার কোনোটা একবারের পর আর দেখা যায়নি।
আসলে প্রজাপতি প্রকৃতির সবচেয়ে সংবেদনশীল প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। প্রাকৃতিক পরিবেশের সামান্য পরিবর্তন ঘটলে এদের ওপর বড় প্রভাব পড়ে। ফলে ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে এসব প্রজাপতি। তাই এদের সংরক্ষণে সচেতন হতে হবে।
দেশে মেগাফনা বা হাঙরের মতো বড় সামুদ্রিক প্রাণী সংরক্ষণে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়, ঠিক ততটা গুরুত্ব ছোট অমেরুদণ্ডী প্রাণীদেরও দেওয়া উচিত। তা না হলে এগুলো খুঁজে পাওয়ার আগেই আবার হারিয়ে যাবে। এতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে পৃথিবী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।