জুমবাংলা ডেস্ক : জনপ্রিয় ইকমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি নতুনভাবে শুরু করেই হইচই ফেলে দিয়েছে। প্রথম ক্যাম্পেইনেই মাত্র ২০ ঘণ্টায় ২ লাখের বেশি পণ্য বিক্রয়ের অর্ডার পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে শুরু হওয়া ‘বিগ ব্যাং’ ক্যাম্পেইনে শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা পর্যন্ত ৮০ হাজারের বেশি ইনভয়েসে এসব পণ্যের অর্ডার হয়। তবে আগের মতো এবার কোনো বিজ্ঞাপনী ব্যয় নেই ইভ্যালির।
শুক্রবারের ক্যাম্পাইনের প্রচারে ১ টাকাও খরচ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল।
জানা গেছে, কারামুক্ত হওয়ার পর ইভ্যালির ব্যবসা নতুনভাবে শুরু উদ্যোগ নেন মোহাম্মদ রাসেল। ইভ্যালির সঙ্গে ব্যবসা পুনরায় শুরু করতে প্রায় দেড় হাজার বিক্রেতা তাদের পণ্য সরবরাহ করছে। তাদের নিয়ে শুক্রবার ‘বিগ ব্যাং’ ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেয় ইভ্যালি।
শুক্রবার রাত ১০টা থেকে ক্যাম্পেইন শুরু হওয়ার কথা থাকলে সামাজিকমাধ্যমে গ্রাহকের আগ্রহ দেখে সন্ধ্যা থেকেই অর্ডার উন্মুক্ত করা হয়। এরপর রাত ৮টায় ফেসবুকে লাইভে আসেন মোহাম্মদ রাসেল।
রাত ১০টায় ক্যাম্পেইনের সময় শুরু হওয়ার আগেই প্রায় ৩৫ হাজার ইনভয়েসে ৮০ হাজারের বেশি পণ্যের অর্ডার করেন গ্রাহকরা। এর কিছু সময় পর গ্রাহকের চাপে ইভ্যালির নতুন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। পরে সার্ভার ঠিক করলে নতুন অর্ডার আসতে শুরু করে।
শনিবার দুপুর ২টায় ইভ্যালির বিগ ব্যাং ক্যাম্পেইন শেষ হয়। ২টার পর ইভ্যালির সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, মোট ৮০ হাজারের কিছু বেশি ইনভয়েস হয়েছে। প্রতিটি ইনভয়েজে গড়ে ২ থেকে ৩টি করে পণ্যের অর্ডার রয়েছে। এ হিসেবে মাত্র ২০ ঘণ্টায় ইভ্যালি প্রায় ২ লাখ পণ্য বিক্রির অর্ডার পেয়েছে।
তবে ইভ্যালির আগের ক্যাম্পেইনের তুলনায় এবার বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। আগে ব্যাপক বিজ্ঞাপন প্রচার করা হলেও এবার এক টাকাও বিজ্ঞাপনে ব্যয় করা হয়নি। আগে বেশিরভাগ পণ্যই লোকসানে বিক্রি করা হতো। তবে এবার প্রায় সব পণ্যে খুব সামান্য পরিমাণ লাভ রাখা হয়েছে। এই লাভের অর্থ দিয়ে কোম্পানির মাসিক ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে। এজন্য ইভ্যালিকে নতুন করে কোনো দেনায় পড়তে হবে না। বরং লাভের পরিমাণ একটু বাড়লেই আগের ঋণ শোধ শুরু করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদ রাসেল।
অন্যদিকে আগে গ্রাহকরা পণ্য পাওয়ার আগেই সরাসরি ইভ্যালিকে টাকা পরিশোধ করত। কিন্তু এবার ক্যাশ অন ডেলিভারি হওয়ায় গ্রাহকের কোনো ঝুঁকি নেই। এ ছাড়া গ্রাহকের পরিশোধ করা পণ্যের মূল্য এখন থেকে সরাসরি বিক্রেতার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে বিক্রেতার কোনো বাকি পড়ার ঝুঁকি নেই।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, গ্রাহককে এখন আর বিশ্বাসের ওপর টাকা দিতে হচ্ছে না। পণ্য হাতে পেয়ে টাকা দেবে। এজন্য ইভ্যালিতে গ্রাহকের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। আমরা খুব সামান্য লাভ করছি যেন কোম্পানির খরচ চালিয়ে নেওয়া যায়। আর যেসব পণ্যে ছাড় দেওয়া হচ্ছে এটা বিক্রেতা নিজের পক্ষ থেকে দিচ্ছেন। এজন্য ইভ্যালির আর লোকসানের সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে ২০১৮ সালে ইভ্যালি প্রতিষ্ঠা করে হইচই ফেলে দেন মো. রাসেল। মাত্র দুই বছরের মধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে ইভ্যালি। কিন্তু ঋণের বোঝাও বেড়ে যায় তাদের।
অভিযোগ আছে, দেশি-বিদেশি কয়েকটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান মিলে ইভ্যালিকে থামানোর জন্য উঠেপড়ে লাগে। মোটা অঙ্কের বরাদ্দও করে তারা। একপর্যায়ে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গ্রেপ্তার করা হয় রাসেলকে।
কিন্তু রাসেলকে গ্রেপ্তারে হতাশ হন প্রতিষ্ঠানটির লাখ লাখ গ্রাহক। তারা ইভ্যালির ব্যবসা চালুর জন্য আন্দোলন শুরু করেন। রাসেলকে মুক্তি দিতে ২০ হাজারের বেশি ক্রেতা-বিক্রেতা আদালতের কাছে লিখিত আবেদন করেন।
এর মধ্যে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়েছেন রাসেল ও তার প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ গত ১৮ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। তবে তার স্ত্রী ও ইভ্যালির চেয়ারম্যান অনেক আগেই মুক্তি পেয়েছেন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।